জনকণ্ঠ দখলের অভিযোগ, সম্পাদকসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:২২
জনকণ্ঠ দখলের অভিযোগ, সম্পাদকসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেছেন পত্রিকাটির চাকরিচ্যুত কয়েকজন সাংবাদিক। তারা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন সময়ে এ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পায়। সম্প্রতি চাকরিচ্যুত করায় পাঁচ দাবি নিয়ে আন্দোলনেও নেমেছেন তারা।


ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ‘পক্ষে অবস্থান নিয়ে’ জনকণ্ঠ পত্রিকার ফেইসবুক পেইজে কালো রং এর ‘নিউজ কার্ড’ প্রকাশের অভিযোগ তুলে সম্পাদক শামীমা এ খানসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পত্রিকাটির উপপ্রধান প্রতিবেদক ইস্রাফিল ফরাজি।


অন্যদিকে জনকণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক শামীমা এ খান বলছেন, ‘ষড়যন্ত্র করে মব সৃষ্টি করে’ দখল করা হয়েছে জনকণ্ঠ ভবন।


আর এই ‘দখল ও ষড়যন্ত্রের’ জন্য গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চিফ অপারেটিং অফিসার অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান, পত্রিকাটির প্ল্যানিং অ্যাডভাইজর জয়নাল আবেদীন শিশিরকে দায়ী করেছেন শামীমা।


প্রায় দশ বছর ডিজিএফআইয়ে কাজ করা আফিজুর রহমান সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর বিতর্কিত ব্যবসায়ী চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের পত্রিকা দৈনিক বাংলার নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ঠিক আগে আগে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তিনি জনকণ্ঠে যোগ দেন।


আর জয়নাল আবেদীন শিশির নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির একজন যুগ্ম আহবায়ক।


বিবিসি বাংলা লিখেছে, আফিজুর রহমান ও জয়নাল আবেদীন শিশির দুজনেই তাদের কাছে জনকণ্ঠ দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।


শিশিরের ভাষ্য, পত্রিকা পরিচালনার জন্য যে বোর্ড তারা করেছেন, সেটা জনকণ্ঠে কর্মরত সাংবাদিকদের ‘সর্বসম্মতিক্রমে’ করা হয়েছে।


আর আফিজের দাবি, সম্পাদক যে অভিযোগ করেছেন, তা ‘অসত্য’।


‘লাল-কালো’ মামলা


হাতিরঝিল থানায় ইস্রাফিল ফরাজির করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ১ অগাস্ট সকাল ৬টায় জনকণ্ঠ পত্রিকার ফেইসবুক পেইজে আওয়ামী লীগের শোক দিবসের কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে ‘নিউজ কার্ডে’ লাল রং থেকে কালো রং করা হয়। এ নিয়ে সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা তৈরি হয় বলে তুলে ধরা হয়।


বাদীর ভাষ্য, “বিষয়টি শামীমা খান, তার ছেলে জিসাল এ খান এবং জাকির হোসেনকে জানালে তারা আওয়ালী লীগের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে লাল থেকে কালো রং ধারণ করার পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন।”


মামলায় বলা হয়, ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাংবাদিক আজাদ সোলায়মান অফিসে এলে তাকে সমাধানের জন্য বলা হলে তার সঙ্গে থাকা অন্যরা পত্রিকার প্ল্যানিং এডিটর জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির, সাংবাদিক মীর জসীম, অনলাইন উপদেষ্টা সাবরিনা বিনতে আহমেদসহ অন্যদের ওপর চড়াও হয় এবং হুমকি দেয়।


সাবরিনাকে যৌন নির্যাতন করা হয় বলেও অভিযোগ করা হয় মামলায়।


হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু বলেন, শনিবার রাত ১২টার পরে এ মামলা হয়, যেখানে গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের ভাইস চেয়ারম্যানকেও আসামি করা হয়েছে।


তিনি বলেন, ২০২৫ সালের সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে এ মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ১৫ জনের নাম রয়েছে। বাকিরা ‘অজ্ঞাত’।মামলার তদন্ত চলছে, কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।


আসামির তালিকায় আছেন জনকণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত অতিকুল্লাহ খান মাসুদের স্ত্রী সম্পাদক শামীমা এ খান, তার ছেলে গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের ভাইস চেয়ারম্যান জিসাল এ খান, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, সহকারী হিসাবরক্ষক মোস্তাক আহমেদ, সহকারী হিসাবরক্ষক মোশাররফ হোসেন, মানবসম্পদ বিভাগের ফারহানা খান, পত্রিকাটির জেনারেল ম্যানেজার মফিজুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আজাদ সোলায়মান, আওয়ামী লীগের ‘অনলাইন একটিভিস্ট’ মারুফ হোসাইন, ছাত্রলীগ কর্মী ইয়াছার আরাফাত, মো. আশিক, মো. ওয়াসিম আকরাম, অমিত দে, যুবলীগের মো. বিশাল খান ও সরদার সানিয়াত হোসেন।



‘স্যাবোটাজ, দখল’


মামলার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে জনকণ্ঠের সম্পাদক শামীমা এ খান বলেন, “লালকে কালো করার কোনো সিদ্ধান্তই ছিল না।


“এই লাল-কালো নিয়ে যে কথা উঠেছে, সেটা তাদেরই (আন্দোলনকারী অংশ) পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়েছে। এটা পুরো স্যাবোটাজ, এটা না করতে পারলে তারা এ অবস্থা সৃষ্টি করতে পারত না।”


অফিসের বাইরে অবস্থান করার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, “তারা এখন বাসে করে লোক নিয়ে আসছে। পুলিশ প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না।”


শামীমা এ খান বলেন, মামলা হওয়ার বিষয়টি এখনো তিনি জানেন না।


আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা জনকণ্ঠ পত্রিকার বিভিন্ন হোয়াটঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত ছিল বলে মামলায় বলা রয়েছে।


এজাহারে অভিযোগ করা হয়, “মালিক পক্ষ সবার সহায়তায় সাইবার স্পেস ব্যবহার করে ছবি ও সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করে জাতিগত বিদ্বেষ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করে।”


এদিকে কথিত ‘সম্পাদকীয় বোর্ড সদস্য’ ইস্রাফিল ফরাজির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, “মালিকপক্ষের ‘ফ্যাসিবাদী’ বেশ ধারণের প্রতিবাদে আগামী দুই দিন (সোমবার ও মঙ্গলবার) মুদ্রণ সংস্করণে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতিতে ছাপাখানা বন্ধ থাকবে।”


পরে রাতে ইস্রাফিল ফরাজি বলেন, রবিবার কাজ হচ্ছে, সোমবার পত্রিকা বাজারে পাওয়া যাবে। তবে মঙ্গল ও বুধবার বাজারে পাওয়া যাবে না।"


তিনি বলেন, অনলাইন ও ই-পেপার চালু থাকবে।


এদিকে রাত ১টার দিকে পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণের প্রিন্টার্স লাইনে সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে কারো নাম দেখা যায়নি।


সেখানে লেখা রয়েছে, “সম্পাদকমণ্ডলী কর্তৃক গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবার-এর সদস্য প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে গ্লোব প্রিন্টার্স লি. ও জনকণ্ঠ লি. থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।”


পত্রিকাটির রোববারের মুদ্রণ সংস্করণের ই-পেপারেও সম্পাদক কিংবা প্রকাশকের নাম নেই। সেখানেও প্রিন্টার্স লাইনে একই কথা লেখা রয়েছে।


আলোচনায় আফিজ


জনকণ্ঠের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা। সেখানে বলা হয়েছে, জনকণ্ঠের মালিক পক্ষ, মালিকবিরোধী পক্ষ ও কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে আলাপ করে তারা জেনেছে, আওয়ামী লীগের পতনের কিছুদিন আগে গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে যোগ দেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা আফিজুর রহমান।


মালিকপক্ষ অভিযোগ করেছে, আওয়ামী লীগের পতনের পর আফিজুর রহমান বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সাথে জড়িত কয়েকজনকে পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ দেন। একজন বিএনপি নেতার স্ত্রীকেও তিনি সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসেন।


পত্রিকাটির প্রকাশক ও সম্পাদক শামীমা এ খান বিবিসি বাংলাকে অভিযোগ করেন, আফিজুর রহমানই পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুন লোকজন এনেছে এবং তারা ‘ষড়যন্ত্র করে পত্রিকা দখল’ করেছে।


"তারাই অগাস্টে পত্রিকার ব্যানারে লাল-কালো ইস্যু তুলে সাবোটাজ করেছে। নিজেরাই পত্রিকার টেম্পলেট কালো করে আমাদের নামে প্রচার করে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে," বিবিসি বাংলাকে বলেন তিনি।


আফিজের বিরুদ্ধে আগেও নানা অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের সময় তিনি পদ্মা ব্য্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।


নাফিজ সরাফাত ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। আর ওই বোর্ডের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন আরাফাত। সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়ার পর সাবেক মেজর আফিজ ওই ইউনিভার্সিটির প্রধান সমন্বয়ক, ডাইরেক্টর (অ্যাডমিশন, মার্কেটিং ও স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স) হিসেবে চাকরি নিয়েছিলেন।


ডিজিএফআইয়ে চাকরি করার সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ‘হস্তক্ষেপ’, সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’, ‘হুমকি-ধামকি দেওয়া’র অভিযোগ রয়েছে আফিজের বিরুদ্ধে। অনেক সাংবদিকদের তিনি ডিজিএফআই কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ‘হয়রানি ও চাপ প্রয়োগ’ করেছেন, এমনকি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে প্রভাব খাটিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।


গোপালগঞ্জে বাড়ি হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সখ্য ছিল আফিজের, এমনকি খোদ শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ছবিও পত্রিকায় এসেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে এবং পরে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের আগে জুলাই মাসে সম্পাদকদের একটি অংশের সঙ্গে যে দুটি বৈঠক শেখ হাসিনা করেছিলেন, সেখানেও আফিজ উপস্থিত ছিলেন।


নানা অভিযোগের কারণে আফিজকে একবার ডিজিএফআই থেকে সরানো হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের এক মন্ত্রীর তদবিরে পরে তাকে ফের ওই গোয়েন্দা সংস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়। তবে পরে তাকে অবসরেই পাঠানো হয়।


সে সময় শাস্তি এড়াতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে পিএইচডি গবেষণাও শুরু করেছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আফিজ। তবে সেই গবেষণা তিনি শেষ করেছিলেন কি না, তা এখন পর্যন্ত জানতে পাওয়া যায়নি।


জনকণ্ঠ দখল ও দলীয় লোক নিয়োগের অভিযোগ নিয়ে বিবিসি বাংলার কাছে তিনি দাবি করেছেন, প্রতিষ্ঠানকে ‘সেইফ ও সাসটেইন’ রাখতে যা করার, নিয়োগের ক্ষেত্রে সেটিই তিনি করেছেন।


"হাউজ দখলের প্রশ্নই আসে না। এ ধরনের অভিযোগ আমি ডিজার্ভ করি না। ম্যাডাম (সম্পাদক) অনেকগুলো অসত্য বলেছেন।"


বিবিসি বাংলা বলছে, এর আগে মে মাসেও জনকণ্ঠ ভবনে মব তৈরি করে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। তখনো এনসিপি নেতা জয়নাল আবেদীন শিশিরের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে এবং দল থেকে তার কাছে ব্যাখ্যাও দাবি করা হয়।


এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে শিশির বলেন, দখলের অভিযোগ আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ভাষ্য। আমরা এখনো মালিকানা ও প্রকাশনায় নেই। পরিচালনার জন্য শুধু একটা বোর্ড করেছি। কর্মরত সব সাংবাদিকদের সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


বিবিসি বাংলা লিখেছে, সবশেষ বিরোধ সামনে আসে অগাস্ট থেকে পত্রিকার ব্যানার লাল ও কালো করা নিয়ে। এ ঘটনার জের ধরে মালিকপক্ষ বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি সমর্থক হিসেবে আসা নয় জনকে চাকরিচ্যুত করলে তারাও পাল্টা অবস্থান নেয়।


একপর্যায়ে জনকণ্ঠের সব কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দেয় তারা। শুক্রবার রাত থেকে এ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয় জনকণ্ঠ ভবনে। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে চাকুরিচ্যুতরা সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতাদের নিয়ে একটি সম্পাদকীয় বোর্ড গঠন করে জনকণ্ঠের নিয়ন্ত্রণ নেয়।


বিবিসি বাংলাকে শামীমা এ খান বলেন, “অনেক দিন ধরেই ষড়যন্ত্র করছিল তারা। এখন নিজেরাই কালো রং করে সাবোটাজ করেছে। অথচ আমরা পত্রিকার ব্যানার লালই করেছি। কিন্তু এটাকে ইস্যু করেই তারা পত্রিকা দখলের ষড়যন্ত্র করেছে।"


তবে শিশির বলছেন, "আমরা মালিক পক্ষের সঙ্গে দুদিন ধরে আলোচনার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আসেনি। তারা পত্রিকার ব্যানারে কালো রং ধারণ করে আমাদের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে।


“মালিক পক্ষের দুই-তিন জন লোক আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে এটি করেছে। সব সাংবাদিক সংগঠনের সঙ্গে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে পত্রিকাটি বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে একটি সম্পাদকীয় বোর্ড দরকার। সেটি করেছি এবং একটাও মামলাও করেছি।"



পাঁচ দফা দাবিতে যা আছে


রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিজেদের পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন ইস্রাফিল ফরাজি। এসব দাবি আদায়ে শনিবার প্রায় এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটা অংশ।


তাদের দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে—


>> জুলাই বিপ্লবে শহীদদের অবমাননা করে পত্রিকাটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাথে সঙ্গতি রেখে কালো টেমপ্লেট ধারণ করার জন্য জড়িত মালিক পক্ষকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।


>> লাল রং ধারণ করে পত্রিকাটি প্রকাশ করার কারণে জুলাই বিপ্লবের পক্ষের চাকুরিচ্যুত সকল সাংবাদিককে চাকুরিতে সসম্মান পুনর্বহাল করতে হবে।


>> আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রায় ৬ কোটি টাকা বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।


>> এই প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত তিন শতাধিক ব্যক্তির পাওনা টাকা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে এবং


>> প্রতিষ্ঠানের যেসব পাওনাদার মালিকপক্ষের অমানবিক আচরণের শিকার, তাদের দায় গ্লোব জনকণ্ঠের মালিককে নিতে হবে এবং সব পাওনা পরিশোধ করতে হবে।


১৯৯৩ সালে আতিকউল্লাহ খান মাসুদ পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠার পর এটি এক সময় পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। তবে পরবর্তীতে এটি আওয়ামী লীগপন্থি পত্রিকা হিসেবেই পরিচিত হয়ে ওঠে।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com