চলতি বছর পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, এনবিআর এক বিশেষ আদেশে এ বছর ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধির মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ব্যতীত সকল ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। ২০২৫-২৬ কর বছরে বেশ কয়েক শ্রেণির করদাতা অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও তাঁরা ইচ্ছা পোষণ করলে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। অন্যদিকে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিলে সমর্থ না হলে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের নিকট সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত/যুগ্মকর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তিনি পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ বছর করদাতার পক্ষে তাঁর ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিও অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। এছাড়া, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতাদের ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও তাঁর পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ই-মেইল অ্যাড্রেস ইত্যাদি তথ্য [email protected] ই-মেইলে পাঠিয়ে আবেদন করলে আবেদনকারীর ই-মেইলে OTP এবং Registration Link পাঠানো হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতারাও ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করত এবং সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।

এতে বলা হয়, কোনো রকম কাগজপত্র বা দলিলাদি আপলোড না করে করদাতারা তাঁদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে এন্ট্রি করে সহজে ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসেই ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং অথবা মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) এর মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করে ই-রিটার্ন দাখিল করবেন। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের acknowledgement slip এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট নিতে পারেন। এ জন্য দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশি করদাতার কাছে ই-রিটার্ন দাখিল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সহজবোধ্য করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত বছরের ন্যায় এ বছরেও করদাতাদের অনলাইন রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে। করদাতারা ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বছর করদাতার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি তথা আয়কর আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যন্টস, কষ্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস এবং চার্টার্ড সেক্রেটারিজকেও ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোন সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। ওই কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোনকল করে করদাতারা e-Return সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এছাড়া, www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন থেকে করদাতারা e-Return সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা লিখিতভাবে জানালে তার সমাধান পাচ্ছেন। সারা দেশের সকল কর অঞ্চলে স্থাপিত ই-রিটার্ন হেল্প-ডেস্ক হতে অফিস চলাকালীন ই-রিটার্ন দাখিল বিষয়ক সকল সেবা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। করদাতাদের নিজ নিজ কর অঞ্চলে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে ই-রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা গ্রহণ করছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সকল করদাতাকে ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিনীত অনুরোধ করছে।

গত ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম উদ্বোধনের পর ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছে।

বিবার্তা/এমবি