
নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর বালুমহালগুলো নতুন মৌসুম হতে পুনরায় ইজারা কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ শ্রমিকরা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) তারা পৌর শহরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন-হাইকোর্ট বিভাগের ৫৩৩২/২০১৫ নম্বর রিট মামলার আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য সোমেশ্বরী নদীর বালুমহাল হতে ইজারাদারগণ বালুমহাল ব্যবস্থাপনা আইন , বিধিমালা ও ইজারার শর্তানুযায়ী বালু ও পাথর উত্তোলন করছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। সোমেশ্বরী নদীতে স্তূপাকারে বালু নেই। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সাথে বালু এসে জমা হয়। সোমেশ্বরী নদীতে সারা বছর পানি থাকে না। ঢলের সময় পানি আসে আবার কয়েক দিন পর চলে যায়। ফলে নদী ভাঙন হয় না।
নিয়মিতভাবে মনিটরিং করায় বর্তমানে নদীর ঠিক মিডল পয়েন্ট হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে নদীর পাড় ভাঙ্গনের কোন সম্ভাবনা নেই। সোমেশ্বরী নদীর বালু উত্তোলন স্থানে পানি না থাকায় মাছ ও জলজ প্রাণী নেই। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
সোমেশ্বরী নদীর চর হতে প্রতি বছর বালু উত্তোলন করা না হলে বিগত সময়ের ন্যায় ঢলের সাথে বালু এসে ফসলি জমি ভরাট হয়ে যাবে এবং অকাল বন্যা দেখা দিবে। এ বছর সোমেশ্বরী নদীর বালুমহাল হতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ বালুমহালের মাধ্যমে প্রায় শ্রমিকসহ ৯০০০ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বালুমহাল এর ইজারা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে এলাকায় চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধিসহ মাদক ব্যবসার প্রসার ঘটবে।
সোমেশ্বরী নদীর কয়েক বছর আগের প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদ ও ছবি এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য অজ্ঞতাবশত পরিবেশন করে সোমেশ্বরীর নদীর মিথ্যা বর্ণনা দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ প্রসঙ্গে।
এই নদীটি ভারতের অংশে সিমসাং নামে এবং বাংলাদেশের অংশে প্রায় ২৬ কিলোমিটার নদী সোমেশ্বরী। আমরা জানি শুষ্ক মৌসুমে দেশের নদীগুলোর পানি শুকিয়ে যায়। পাহাড়ি ঢল না থাকলে সোমেশ্বরী নদীর শুরুর প্রান্ত থেকে ৩/৪ কিলোমিটার পানি থাকে না-এটা শত বছরের চিত্র। কয়েক যুগ ধরে সীমান্তের দিকে ২ কিলোমিটার নাব্যতা ছিল না যাহা রুহী এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার আলহাজ মোশতাক আহমেদ রুহী সুইং কাটার ড্রেজার মেশিন দিয়ে জনস্বার্থে পরিকল্পিত খনন ও উত্তোলনের ফলে এই দুই কিলোমিটার নাব্যতা ফিরে পাওয়ায় চলতি বছর পাহাড়ি ঢলে নদী তীর ভাঙন হয়নি এবং বন্যার সৃষ্টি হয়নি।
বিরিশিরি থেকে জারিয়া পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার নদীপথের বিভিন্ন স্থানে জনস্বার্থে তিনি নিজ উদ্যোগে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে নদী খনন করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে এনেছেন। ফলে নদীর দুই তীরের বাসিন্দাদের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে।
নদী খনন করা সরকারি উদ্যোগে হয়। ব্যক্তিগত উদ্যোগে নদী খনন নজিরবিহীন ঘটনা।
চলতি বছর দুর্গাপুরের ১,২,৪ ও ৫ নং বালুমহালের ইজারাদার রুহী এন্টারপ্রাইজ। সরকারের সকল মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে দেশের একমাত্র এই বালুমহাল থেকে ২.৫ ততোধিক সিলেকশন বালু দিয়ে।
উল্লেখ্য এপ্রিল থেকে এক মাস এই বালুমহাল বন্ধ থাকায় হযরত শাহজালাল তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ সহ মেগা প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দেশের মেগা প্রকল্পগুলো সহ সরকারি- বেসরকারি সকল প্রকল্পের কাজ এই দু্র্গাপুরের সিলেকশন বালু দিয়ে হয়। পিডব্লিউডি সহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার টেন্ডার শর্তে দুর্গাপুরের সিলেকশন বালু বিদ্যমান। ভেজা বালু পরিবহন বন্ধ। জনদুর্ভোগ নিরসনে নিজ অর্থায়নে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে বাইপাস সড়ক/ডাইভারশন নির্মাণ। পরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন শূন্যের কোটায়। স্বাভাবিক চলাচলের নিমিত্তে ও জনসাধারণের চলাচলের স্বার্থে দীর্ঘ ১৭ কিলোমিটার সড়ক পথে লাইনম্যান/ বেসরকারি ট্র্যাফিক ডিজিটাল সিস্টেমে নিয়ন্ত্রণ। সুইং কাটার ড্রেজার মেশিন দিয়ে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় নুরিপাথর থাকাতে। নিয়মিত শতাধিক শ্রমিক ২৪ ঘণ্টা রাস্তা পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত থাকেন। নদীর দুই পাড়ের মানুষের কোন অভিযোগ নেই বর্তমানে। হাজার হাজার মেহনতি শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বিবার্তা/পলাশ/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]