
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে গত বুধবার সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সমর্থকসহ অন্তত ২,৩০০ জনের বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক মামলা করেছে পুলিশ। এ পর্যন্ত অন্তত ১৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত দুই দিনে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া ও কাশিয়ানী থানায় পৃথকভাবে এই তিন মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় পুলিশের ওপর হামলা, যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনটি মামলায় গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানসহ মোট ১৫৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত বুধবার থেকে জেলাজুড়ে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৪ জনে।
এরমধ্যে সদর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে বলে জানান সদর থানার ওসি মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।
কাশিয়ানী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) যে মামলা দায়ের হয়েছে, তাতে ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে শনিবার (১৯ জুলাই) নিশ্চিত করেছেন কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন।
কোটালীপাড়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় ১৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জে জারি হওয়া কারফিউর মধ্যেই যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে মুকসুদপুরে ৬৬ জন, সদরে ৪৫ জন, কাশিয়ানীতে ২৪ জন, টুঙ্গিপাড়ায় ১৭ জন এবং কোটালীপাড়ায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে।
এখন পর্যন্ত সহিংসতায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোররাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
গত বুধবার গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এনসিপি নেতাদের পদযাত্রা ও বহরে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাদের একাধিকবার সংঘর্ষ হয়।
পরে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর প্রথমে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কারফিউ ঘোষণা করা হয়।
তবে বর্তমানে ওই কারফিউ সাময়িকভাবে শিথিল করা হয়েছে; আজ রাত ৮টা পর্যন্ত মোট ১৪ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]