
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধে অন্তত ১৫টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
৯ জুলাই, বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত অন্তত ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজী, পরশুরাম ও সদর উপজেলার প্লাবিত গ্রামের সহস্রাধিক পরিবারের মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। প্রতিবছর এমন দুর্ভোগে পড়া মানুষদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে, কেন হাজারো প্রতিশ্রুতির পরও টেকসই বাঁধ নির্মাণ হয় না? কবে এই দুর্ভোগের শেষ হবে?
জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানির ঢলে এসব নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পায়। মঙ্গলবার রাত থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপরে বইছে। একই ভাবে সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর পানিও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতি ঘন্টায় তিনটি নদীর নতুন নতুন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে থাকায় ফেনীর উত্তরাঞ্চলের দুই উপজেলা পরশুরাম ও ফুলগাজীতে প্রায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র ট্রাক ভাড়া করে যাতায়াত ও মালামাল আনে নেওয়া করতে হচ্ছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, মুহুরী দুটি, কহুয়া নদীর দুটি ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ১১টি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে মুহুরী নদীর ফুলগাজী অংশে দুটি ও সিলোনিয়া নদীর পরশুরাম অংশে ৯টি। তিনি জানান, ভাঙন রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
তবে উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে, পরশুরাম ও ফুলগাজী মিলিয়ে মোট ১৫টি স্থানে ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান জানান, উপজেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ১১টি স্থানে ভেঙে মঙ্গলবার রাত থেকে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। বন্যাকবলিতদের রাতেই আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিয়া ইসলাম বলেন, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের চারটি স্থানে ভাঙন হয়েছে। বন্যাকবলিতদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সেখানে শুকনা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরশুরামের মধ্যম ধনীকুন্ডা, নোয়াপুর, শালধর, পশ্চিম অলকা, জঙ্গলঘোনা, গদানগর, উত্তর মনিপুর, মেলাঘরসহ অন্তত ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজী উপজেলার পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া, সাতকুচিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম অলকা, উত্তর ও মধ্যম ধনীকুন্ডা, মধ্যম মণিপুরসহ অন্তত ১৮টি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে।
পরশুরামের নাট্যকর্মী মাসুদ রানা বলেন, ‘সিলোনিয়া নদীর আলতাফ আলী চৌধুরীর বাড়ির পেছনের অংশে বেড়িবাঁধ ভেঙে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পানি আমাদের ঘরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাতেই প্রশাসনের লোকদের সহযোগীতায় এলাকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছেন। সকাল থেকে বাড়ি-ঘরের কোন চিহ্নই দেখা যাচ্ছে না।
জজহিরুল ইসলাম নামে করইয়া গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের এলাকায় প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী। কেউ কেউ দোতলা ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।অন্যরা আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন। তিনি বলেন, প্র
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসমাইল হোসেন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় ৮জুলাই সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জরুরি সভা হয়েছে। ফুলগাজীতে ৯৯টি, সোনাগাজীতে ৪৩ টি ও পরশুরামে ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষনা দেয়া হয়েছে। আশ্রিতদের প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। বুধবারের ন্যায় বৃহস্পতিবারসহ আগামী দুই দিনও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বিবার্তা/মনির/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]