কুয়াকাটায় হযবরল পরিস্থিতি, পর্যটকদের অসন্তোষ
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২১
কুয়াকাটায় হযবরল পরিস্থিতি, পর্যটকদের অসন্তোষ
কুয়াকাটা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর কুয়াকাটায় পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পর্যটন নগরীটির পরিবেশকে একেবারে পাল্টে দিয়েছে। এক সময় যেখানে কুয়াকাটায় শুধু সাপ্তাহিক ছুটির দিনেই পর্যটকদের ভিড় থাকত, সেখানে এখন প্রায় প্রতিদিনই পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়।


তবে এবারের ঈদে বাড়তি পর্যটকসম্ভার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সব মিলিয়ে হযবরল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে কুয়াকাটার পর্যটকদের। এখানে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের চৌরাস্তা এলাকায়। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোভ্যানের লাগামহীন নৈরাজ্যে অতিষ্ঠ সবাই।


বুধবার (২ এপ্রিল) সকাল থেকে কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট চৌরাস্তা এলাকায় এ বিশৃঙ্খলা চোখে পড়ে। সড়কে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোভ্যান এবং মোটরসাইকেলে পার্কিং জোন তৈরি করায় যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সৈকতে যাওয়া পর্যটকদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম এই চৌরাস্তা এলাকা।


আগে কুয়াকাটায় পৌঁছাতে পটুয়াখালী, বরিশাল, এবং ঢাকা থেকে ফেরি পাড়ি দিতে হতো, কিন্তু এখন বিষখলী, আন্ধার মালিক, খাপরাভাঙ্গা, পায়রা এবং পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে গেছে। এখন কুয়াকাটায় প্রতিদিনই পর্যটকের উপস্থিতি থাকে। তবে এই ভিড়ের কারণে পর্যটকদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা যাচ্ছে না। বিশেষত, কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাতায়াতের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায়, পর্যটকরা প্রধানত জিরো পয়েন্টের আশপাশে ভিড় জমাচ্ছেন।


এছাড়া আবাসিক হোটেলের সংকটও তীব্র হয়ে উঠেছে। ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের থাকার জায়গা পাওয়া যায় না। এর ফলে অনেকেই কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পর্যটকরা মনে করছেন, নতুন নতুন হোটেল নির্মাণের মাধ্যমে এখানে ভ্রমণ করতে উৎসাহী হবে বিভিন্ন শ্রেণির পর্যটকরা।


বরিশাল থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা অনিক আহমেদ বলেন, সরকারি যে কোনো ছুটির দিনে কুয়াকাটায় আসা মানেই ভিড়ের মাঝে আটকে থাকা। কুয়াকাটা বিশাল এলাকা, কিন্তু যাতায়াতের সুবিধা খুবই কম। বিশেষ করে চৌরাস্তা এলাকায় এমনভাবে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, ভ্যান এবং মোটরসাইকেলগুলো রাখা হয়েছে, এরপর আসলে পর্যটকদের যাতায়াতের কোনো সুযোগ থাকে না। এগুলো দেখার ও যেন কেউ নেই। খাবারের হোটেলগুলোতেও অরাজকতা এবং ব্যবসায়ীরা সেবা প্রদানে উদাসীন।


এ বিষয় কুয়াকাটা ইজিবাইক মালিক সমিতির সভাপতি রহমান বিশ্বাস বলেন, কুয়াকাটায় আগত অধিকাংশ পর্যটকদের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণ সেবা দিয়ে থাকি আমরা। সেজন্য আমাদের অধিকাংশ সময়ই চৌরাস্তা ও জিরো পয়েন্টে এলাকায় থাকতে হয়। তবে পর্যটকদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করেই গাড়িগুলো রাস্তার পাশ দিয়ে পার্কিং করা হয়। কিন্তু ব্যাটারিচালিত গাড়িগুলোর জন্য যদি নির্দিষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা থাকত তাহলে রাস্তার পাশে এভাবে রাখতে হতো না।


ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পুলিশ পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, কুয়াকাটার সব দর্শনীয় স্থানগুলো সার্বক্ষণিক ট্যুরিস্ট পুলিশের নজরদারিতে থাকে। তবুও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, সেগুলো অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। কুয়াকাটা চৌরাস্তা এলাকায় আমাদের পুলিশের একটি টিম সব সময় দায়িত্ব পালন করছে।


কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, পর্যটকদের হয়রানির বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন সচেতন এবং নিয়মিত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কুয়াকাটা চৌরাস্তা এলাকা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতায় নিরাপদ রাখা হবে।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com