
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মইনুল ইসলাম (৪০) খুনের জের ধরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন, ভাঙচুর এবং লুটের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও নিহত পরিবারের লোকজন প্রতিপক্ষ আসামিদের অন্তত ২০টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ব্যাপক ভাঙচুর ও লুট শেষে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীর জানিয়েছেন।
২৩ আগস্ট, শুক্রবারও দিনভর এ তাণ্ডবলীলা চলেছে। গত ৩দিন ধরে এমন তাণ্ডবলীলা চললেও পুলিশের ভূমিকা নিস্ক্রিয় থাকায় এমন ঘটনা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী ও আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ আগস্ট বিকেলে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বালিরদিয়াড় ছাতারিপাড়া গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মইনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০-১২ জন বিএনপি কর্মী মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে প্রতিবেশী দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি চঞ্চল মোল্লার বাড়ির সামনে গিয়ে গালমন্দ করে। এসময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা চঞ্চল মোল্লার নেতৃত্বে ১৫-২০ জন আওয়ামী লীগ কর্মী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মইনুল ইসলামের ওপর হামলা চালায়। মইনুল ইসলামকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১২দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান।
মরিচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ও ব্যবসায়ী মইনুল ইসলামের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বালিরদিয়াড় গ্রামে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সুন্নত আলীর নেতৃত্বে রকি, হাকিম, ইন্তাদুল, আইনুল, মুন্না, মুনাজ সহ অন্তত ৫০-৬০ জন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে বুধবার থেকে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) পর্যন্ত দফায় দফায় হত্যা মামলার আসামি টগর মোল্লা, বক্কর মোল্লা, চঞ্চল মোল্লা, নাসির, স্বপন, জুয়েল, মরজেত মোল্লা, শামীম, বিল্লাল, জনি ও টিপু সহ অন্তত ২০ জনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুট ও আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এসময় ওইসব বাড়ির লোকজন আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেলে হামলাকারীরা গরু, ছাগল, খাদ্য-শস্য ও ঘরের আসবাবপত্র লুট করে নেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই এলাকায় নারী-পুরুষ শুন্য অবস্থা বিরাজ করছে। আজ শুক্রবারও জুম্মার নামজ শেষে আসামিদের বাড়ির ঘরের টিন, জানালা, দরজা ও ইট খুলে নিতে দেখা গেছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মুসল্লি জানিয়েছেন।
দৌলতপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মইনুল ইসলাম নিহত হওয়ার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, হামলার ঘটনার পর পরই ১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের অনেকে জামিনে রয়েছেন এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে এলাকায় বিজিবি মোতয়েন রয়েছে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, দৌলতপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমেদের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। এখন পরিস্থিতি অনেকটা শাান্ত রয়েছে।
বিবার্তা/শরীফুল/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]