
প্রতিবেশী দেশ ভারতে যাতায়াতের জন্য ১৯৮৭ সালে শুরু হয় দর্শনার জয়নগর আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম। দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীরা চিকিৎসা, ভ্রমণ, ব্যবসাসহ নানা কাজে এ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ব্যবহার করেন।
এছাড়া চুয়াডাঙ্গার আশপাশের বিভিন্ন জেলার মানুষও খুব সহজে দর্শনা দিয়ে ভারতের গেদে হয়ে কলকাতায় প্রবেশ করতে পারেন।
এ চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ৯০০ থেকে ১০০০ যাত্রী আসা-যাওয়া করেন। উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজলভ্য ও খরচ কম হওয়ায় চলাচল বেশি এ পথে।
জয়নগর আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই কাস্টমস ভবনের ভেতরে ছোট্ট একটি ঘরে বসেন ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পাসপোর্টধারী যাত্রীদের মালামাল যেখানে দেখেন, সেখানেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়।
বলাই চলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কাস্টমসের সেই পুরোনো ছোট জরাজীর্ণ ভবনে জোড়াতালি দিয়ে তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করছে দীর্ঘদিন ধরে। যার ফলে দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও যাত্রীদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল ৩তলা বিশিষ্ট দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ভবনের কাজ শুরু হয় যা শেষ হয় ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। ভবনটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয় তিন কোটি ৬ লাখ টাকা।
নির্ধারিত সময়ে যশোরের মেসার্স মহিদুল ইসলাম ট্রেডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শেষ করেন। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনে রয়েছে সকল সুযোগ-সুবিধা। তবে ভবন নির্মাণ ৩ বছর আগে শেষ হলেও অজানা কারণে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি।
নতুন ভবনটি দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় একদিকে যেমন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে অন্যদিকে ভারত-বাংলাদেশ থেকে যাতায়াত করা দুই দেশের যাত্রীরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের।
দর্শনার আনোয়ারা বেগম নামের এক যাত্রী বলেন, চিকিৎসার জন্য আমাদের নিয়মিত ভারতে যাতায়াত করতে হয়। বর্তমানে যেখানে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় সেখানে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা নেই। অনেকদিন ধরেই দেখছি নতুন ভবন। চালু হলে যাত্রীরা অনেক সুবিধা পাবে। নতুন ভবনটি দ্রুত চালুর দাবি জানাচ্ছি।
জীবননগরের বাসিন্দা আজাদ হোসেন বলেন, ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও দীর্ঘদিনেও চালু হয়নি। এখানে বসার ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত টয়লেট সুবিধা নেই। ফলে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হোক কর্তৃপক্ষের কাছে এ আহ্বান জানাই।
ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমান বলেন, কাস্টমসের এই ভবনে আমাদের এখানে ডাটা সার্ভার আছে। সেটা আগে নতুন ভবনে ট্রান্সফার করতে হবে। যেটা আমরা পারবো না। ডাটা সার্ভার এসবি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিস্থাপন করতে হলে তারাই এটা করতে পারে। সার্ভার প্রতিস্থাপন হলেই নতুন ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ সুপার নতুন ভবনে কার্যক্রম চালুর কথা বলেছেন। কিন্তু আমি এখানের সব সুবিধা-অসুবিধার কথা জানিয়েছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
চুয়াডাঙ্গা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মহসীন বলেন, কার্যক্রমের উপযোগী করে ইতোমধ্যে আমরা ভবনের চাবি হস্তান্তর করেছি। কিন্তু কেন ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে না সেটা তাদের ডিপার্টমেন্টের বিষয়। ওটা তাদের জিজ্ঞাসা করলে সদুত্তর পাবেন।
বিবার্তা/সাঈদ/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]