
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে মাদক ব্যবসায়ীর দেয়া 'হত্যার হুমকি'র ঘটনায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে থানায় জিডি করতে গেলে একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কতৃক হেনস্তার শিকার হয়েছেন সাংবাদিক জামাল হোসেন খোকন। পরে অবশ্য জিডি গ্রহণ করেছে থানা পুলিশ।
জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম মাধবখালী গ্রামের মাদক সম্রাট ও বিজিবি-পুলিশের কথিত সোর্স রাজনের বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় একটি জাতীয় পত্রিকায়। এরই জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী রাজন সাংবাদিক জামাল হোসেনের উপর চরম ভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেন।
এ ঘটনায় ১১ জুলাই, বৃহস্পতিবার জামাল হোসেন মাদক ব্যবসায়ী রাজনের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে রাজনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি নিতে জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত ) একরামুল হোসাইন আপত্তি তোলেন।
সে সময় পরিদর্শক তদন্তের কক্ষে উপস্থিত থাকা শাহপুর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এস আই মনিরুল সাংবাদিক সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যও করেন। তবে এক পর্যায়ে সাধারণ ডায়েরি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন পরিদর্শক (তদন্ত)। যার নং- ৪৯৫।
জানতে চাইলে সাংবাদিক জামাল হোসেন খোকন বলেন, আমি অভিযোগ পাই মাধবখালী গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্বাস উদ্দিনের ছেলে রাজন একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। একই সাথে এলাকায় সে বিজিবি পুলিশের সোর্স হিসেবে দাপট দেখায়।
রাজনের সব অপকর্ম ওপেন সিক্রেট হলেও তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তিনি একজন প্রান্তিক কৃষকের ছেলে হলেও হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন তিনি।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে বিরুদ্ধে দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে গত ৪ জুলাই একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর মাদক ব্যবসায়ী রাজন বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা দিয়ে আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে।
এ ঘটনার এক পর্যায়ে রাজন আমাকে একজন জনপ্রতিনিধির সামনে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমি জিডি করতে থানায় গেলে পরিদর্শক তদন্ত আমার সাথে অসদাচরণ করেন। পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষ নিয়ে কথা বলে জিডি নথিভুক্ত করতে গড়িমসি করেন। পরে আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে পরিদর্শক তদন্ত কোনো এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনে কথা বলে জিডি নথিভুক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, এ সময় পরিদর্শক (তদন্ত) একরামুল ও উপপরিদর্শক মনিরুল সাংবাদিকদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাজে মন্তব্য করেন। বিষয়টি আমি স্থানীয় সাংবাদিকদের অবহিত করি। পরে জীবন নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবিদ হাসান আমাকে ফোনে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ প্রসঙ্গে জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত ) একরামুল হোসাইন বলেন, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।
জীবন নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাবিদ হাসান বলেন, একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে শুনেছি। পরবর্তীতে উনার জিডিও নথিভুক্ত হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। সাংবাদিকদের সাথে যেটা হয়েছে সেটার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে বিষয়ে নজর রাখবো।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ক্রাইম এন্ড অপস) নাজিম উদ্দীন আল আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সাংবাদিক জামাল হোসেন খোকন জীবননগর সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জীবননগর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছেন। তার সাথে এমন ঘটনায় জীবননগরের সাংবাদিকসহ সচেতন মহলের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিবার্তা/আসিম/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]