
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লা মহাসড়ক অবরোধ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। অবরোধ তুলে নেয়ায় চার ঘণ্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় টানা চার ঘণ্টার অবরোধের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
৭ জুলাই, রবিবার বিকাল ৪টা থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাত ৮টার দিকে শেষ হয়। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে যেকোনও সময় আবারও সড়কে নামতে পারেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা।
কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকা থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী উভয়মুখী অন্তত ১৫ কিলোমিটার যানজটের ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী ও চালকরা। বিশেষ ভোগান্তিতে পড়েছে বিদেশগামী ও চিকিৎসার জন্য যাতায়াতকারী যাত্রীরা। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো যানবাহনকে চলাচল করতে দেয়া হয়নি।
যাত্রীরা জানান, অবরোধে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বিদেশগামীরা। কারণ সঠিক সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে না পারলে অনেকেরই ফ্লাইট বাতিল হয়ে যাবে। আর ভারি ব্যাগ বোঝাই যাত্রীরা বাস থেকে নেমেও যেতে পারছেন না।
ঢাকা থেকে ফ্লাইট ধরার জন্য নোয়াখালী থেকে দুবাইগামী পারভেজ হোসেন জানান, রাতে আমি দুবাই যাব। রাত ১০টার মধ্যে বিমানবন্দরে থাকার কথা। যানজটের কারণে অনেক সময় পিছিয়ে পড়লাম। ঢাকা শহরে গিয়েও যদি যানজটে পড়ি তাহলে চরম ভোগান্তি হবে।
এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রওনা হওয়া অনেক যাত্রী বাস ও অন্যান্য যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে বিক্ষোভকারীদের পার হয়ে অন্যপাড় থেকে ছোট যানবাহনে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হতে দেখা গেছে।
ফেনী থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হওয়া মিজানুর রহমান জানান, শিশু সন্তানকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলাম। অবরোধের কারণে বাস যানজটে পড়ে টানা চার ঘণ্টা আটকে গেছি। পরিবারের সবাই বাসে চরম ভোগান্তিতে।
ঢাকাগামী তিশা ট্রান্সপোর্ট বাসের চালক তরিকত হোসেন মোল্লা বলেন, তিন ঘণ্টা একই জায়গায় আটকে আছি। বাসটা স্টেশন থেকে ছেড়ে এসেই আটকে পড়লাম। এখন যানজট ছাড়ছে, তবে আস্তে আস্তে চলছে। কারণ অনেক বাস যাত্রীর জন্য রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে পড়ে।
চট্টগ্রামগামী হানিফ পরিবহনের চালকের সহকারী ফখরুল ইসলাম বলেন, লোকাল আর মাইক্রোবাসগুলো যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে পড়লে যানজট আরো লম্বা হবে। তবে পুলিশ রাস্তায় আছে। আমরা দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই। পুলিশ রাস্তায় থাকলে দ্রুত যানজট ছেড়ে যাবে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় রাত ৮টায় কর্মসূচি শেষ করেছি। কারো আশ্বাস কিংবা অনুরোধে নয়। ইনশাআল্লাহ, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত আসলে আবারও মাঠে নামতে আমরা প্রস্তুত।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি খাইরুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরেছে। পুলিশ প্রতিটি পয়েন্টে কড়া নজিরদারি রেখেছে। সড়কের কোনও অংশে গাড়ি যাতে না দাঁড়িয়ে থাকে, আমরা সেই ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আশাবাদী, শিগগিরই যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
সর্বশেষ আন্দোলনকারীরা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাত ৮টা পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সে অনুযায়ী আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]