
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শর্টগান দিয়ে উড়িয়ে দেয়ার হুমকির প্রতিবাদে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা হামলা চালিয়ে অধ্যক্ষের গাড়ি ভাংচুর করেছে।
৫ জুন, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দৌলতপুর কলেজ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দৌলতপুর কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তির জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে এমন অভিযোগে দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমানুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেনের নেতৃত্বে দৌলতপুর ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ দৌলতপুর কলেজ ক্যাম্পাসের আমতলায় অবস্থান নেয়।
এসময় তারা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছুক সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে গেলে দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত সহকারী রাজু আহম্মেদ, সহকারী লাইব্রেরিয়ান মোমেনুর রহমান মোহন ও অধ্যক্ষের দেহরক্ষী জাফর ইকবাল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের ওপর চড়াও হয় এবং তাদের শর্টগান দিয়ে উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
এরই প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ উত্তেজিত হয়ে তাদের ধাওয়া করলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকে।
খবর পেয়ে দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাকিবুল হাসান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে উত্তেজিত ও বিক্ষোভরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। অধ্যক্ষের কার্যালয়ের গেটে তালা ঝুলতে দেখে তারা অধ্যক্ষের প্রাইভেট গাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাংচুর চালায়। পরে পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণ করে।
এদিকে কলেজ ক্যাম্পাসে অধ্যক্ষের সশস্ত্র প্রবেশ ও অবস্থানের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং কলেজে সশস্ত্র অবস্থানের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গুলি করে উড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমানুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন বলেন, দৌলতপুর কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের পোষা গুন্ডারা আমাদের গুলি করে উড়য়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে বিচার দাাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বিবার্তাকে বলেন, দৌলতপুর কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তির বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে কলেজের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাক-বিতণ্ডা হয়। এরই প্রেক্ষিতে কলেজে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। পরে দৌলতপুর থানা পুলিশ গিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমন বিবার্তাকে বলেন, ছাত্রলীগ নেতাদের গুলি করে হত্যার হুমকির ঘটনা সঠিক নয়। বর্তমানে কলেজে ফরম পূরণ বা অন্য কোন কার্যক্রম চলছে না। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধে দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর নির্দেশে বহিরাগত ক্যাডাররা কলেজে হামলা চালিয়ে আমার গাড়িসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করেছে।
এ প্রসঙ্গে টোকেন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিবার্তাকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
বিবার্তা/শরীফুল/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]