
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় একটি আবাসিক হোটেলে স্ত্রী ও সন্তানকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক স্বামী আজিজুল হককে (২৩) আটক করেছে পুলিশ। আটক আজিজুল হক সেনা সদস্য বলে জানা গেছে।
২ জুন, রবিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার বনানী এলাকায় শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের তৃতীয় তলার ৩০১ নম্বর কক্ষ থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- বগুড়া সদর উপজেলার নারুলি ধাওয়াপাড়া এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে আশা মনি (২১) এবং তার ১১ মাস বয়সী ছেলে আব্দুল্লাহ আল কাফি।
আটক সেনা সদস্য আজিজুল হক বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে। তিনি সেনা সদস্য হিসেবে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত আছেন।
তার স্ত্রী আশামনি বগুড়া শহরের নারুলী তালপট্টি এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে।
শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে আজিজুল নিজেকে মিরাজ এবং তার স্ত্রীকে তমা এবং তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ পরিচয় দিয়ে হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া করেন।
রবিবার (২ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আজিজুল হক রুমে ছেড়ে দিবে বলে ভাড়া পরিশোধ করতে চান। এ সময় হোটেলের ম্যানেজার তার স্ত্রী-সন্তান কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা সকালে চলে গেছেন। এ সময় ম্যানেজার রুম দেখে বুঝে নেয়ার কথা বললে আজিজুল হক স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করলে তাকে আটক করে থানায় খবর দেন হোটেল ম্যানেজার।
এদিকে, আশামনির বাবা আসাদুল জানান, তিন বছর আগে আজিজুল হকের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। মেয়ে সন্তান প্রসবের আগে থেকেই বাবার বাড়িতে বসবাস করে। জামাই দুই মাসের ছুটিতে বাড়ি আসে। রবিবার তার কর্মস্থলে চলে যাওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার জামাই আজিজুল নারুলীতে শ্বশুরবাড়ি আসেন। সেখানে দুই দিন থাকার পর শনিবার বিকেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরে মার্কেট করার জন্য বের হয়। রাত ১০টার দিকে আজিজুল হক ফোন করে তার শ্বশুরকে জানান, রাত ৮টার দিকে তিনি স্ত্রী-সন্তানকে নারুলী যাওয়ার জন্য রিকশায় তুলে দেন। কিছুক্ষণ পর থেকে স্ত্রীর ফোন বন্ধ পাচ্ছেন। পরদিন রবিবার সকালে তিনি তার মেয়ের সন্ধান চেয়ে শহরে মাইকিং করার ব্যবস্থা করেন এবং সদর থানায় জিডি করতে গেলে বনানীতে হোটেলে মা এবং সন্তানের লাশ উদ্ধারের খবর পান।
এদিকে পুলিশ হোটেলে পৌঁছে সেনা সদস্য আজিজুল হককে হেফাজতে নেয়ার পর তিনি পুলিশের কাছে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরাফত ইসলাম বলেন, রাতে যেকোনো সময় আজিজুল তার স্ত্রী-সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে কক্ষের বাথরুমে রাখে এবং ছেলের মাথা বিচ্ছিন্ন করে সকালে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়। পুলিশের একটি দল মাথা উদ্ধারের জন্য আজিজুলকে সঙ্গে নিয়ে নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, কক্ষ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি রাম দা এবং চাকু উদ্ধার করা হয়েছে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আজিজুল হক পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক বলেছেন, দাম্পত্য কলহের কারণে তিনি স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করেছেন। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]