রেমাল মোকাবিলায় উপকূলে বিশেষ সতর্কতা জারি
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৪, ১৭:৫৪
রেমাল মোকাবিলায় উপকূলে বিশেষ সতর্কতা জারি
ফেনী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় অর্ধশত আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখাসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।


২৬ মে, রবিবার বিকাল থেকে সোনাগাজী উপকূলে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় আতঙ্কে আছেন উপকূলবাসী।


জানা গেছে, দূর্যোকালীন সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরতদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার, চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিস্কুট, ৫০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের ব্যবস্থাসহ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। রেমালের প্রভাবে রবিবার সকালে থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ও হালকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি রোধে রেমালের গতিবিধি পর্যালোচনা করে সকাল থেকে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের উপকূলীয় বাসিন্দাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসারও বিষয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে।


এর আগে শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, জনপ্রতিনিধিগণ অংশ নেন।


সভা শেষে ঘূর্ণিঝড়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে প্রশাসনের কর্মকর্তা, সিপিপির কর্মকর্তা, দল নেতা, স্বেচ্ছাসেবক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উপকূলীয় চারটি ইউনিয়ন চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, সোনাগাজী সদর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে লোকজনের খোঁজখবর নিয়ে তাদেরকে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সচেতনতাসহ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।


দক্ষিণ পূর্ব চর চান্দিয়ার ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম মিয়াজি বলেন, উপকূলের মানুষ সাহসী। বারবার দুর্যোগ মোকাবিলা করেছে এখানকার মানুষগুলো। তবে নদী ভাঙ্গনের পর থেকে বেড়িবাঁধ না থাকায় অতিবন্যার আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা।


চর চান্দিয়া এলাকার সিপিপির দল নেতা নুর নবী বলেন, রবিবার বিকেলে সোনাগাজী উপকূলে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত প্রচার করা হয়েছে। এলাকায় মাইকিং করে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে বলছেন। এছাড়া গবাদিপশুগুলোকেও নিরাপদে সরিয়ে নিতে তারা প্রচারণা চালাচ্ছেন।


চর দরবেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টো বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা পেয়ে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সভা করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনাসহ জনগণকে সতর্ক করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সোনাগাজীতে অর্ধশত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ উপজেলার সবকটি বিদ্যালয়কে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলায় একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে এবং ১৪টি চিকিৎসক দল, জনপ্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও ভিডিপি এবং গ্রাম পুলিশের সদস্যরা মাঠে কাজ করবেন। দুর্যোগকালীন উদ্ধার তৎপরতাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য সিপিপির দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ আড়াই হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছে।


ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির কর্মসূচির (সিপিপি) সহকারী পরিচালক মুনীর চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে উপজেলার সর্বত্র সিপিপির সদস্যরা কাজ করছেন। প্রতিটি এলাকায় সিপিপির সদস্যদের সহায়তায় জনগণকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সতর্ক করে জানমাল ও গবাদিপশুর নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া বিষয়ে বলছেন। ঘূর্ণিঝড় আসার খবরে উপকূলের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।


বিবার্তা/মনির/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com