পিরোজপুরের নজিরপুরে বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অষ্টসখী সহযোগে গান লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঘরানা হলো অষ্ট গান। সাধারণত চৈত্র মাসের শেষ দিকে চৈত্র সংক্রান্তিকে সামনে রেখে গ্রামে গ্রামে হাটবাজার ও বাড়ি বাড়ি এ গান পরিবেশিত হয়ে থাকে। তবে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ অষ্ট গান।
নাজিরপুরে রাধা-কৃষ্ণ, শিব-দুর্গা, রামায়ণ-মহাভারতের কাহিনী ছাড়াও পণপ্রথা, সাম্প্রদায়িক প্রসঙ্গ, কৃষি সমস্যা, বৃক্ষ রোপণ, সমাজের অসঙ্গতি বা শিক্ষামূলক বিষয় প্রভৃতি অষ্ট গানের বিষয়বস্তু।
অষ্টসখী সহযোগে এ গান পরিবেশিত হয় বলে একে অষ্ট গান বলা হয়। এটি একটি গোষ্ঠীবদ্ধ নৃত্যসহ সংগীত পরিবেশনা। সামনে অষ্ট সখী এবং পেছনে হারমোনিয়াম, বেহালা, বাঁশি, কাসি, কর্তালযোগে এ গান পরিবেশিত হয়। অষ্টক গান বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অংশ। অষ্ট গানকে অষ্টক গানও বলা হয়।
প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যুগ যুগ ধরে নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী, দীর্ঘা, মালিখালিসহ বিভিন্ন এলাকার নমঃশুদ্র সদায় লোকসংস্কৃতির এ ঘরানাকে লালন করে আসছে।
শ্রীরামকাঠী অষ্ট গান দলের ম্যানেজার মিল্টন রায় বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমাদের মত অনেক দল অষ্ট গান পরিবেশন করত এক সময়। দিন দিন এ অষ্টগান হারিয়ে যাচ্ছে আমি গ্রাম বাংলার এ সংস্কৃতিকে ধরে রাখার চেষ্টা করতেছি। এখন আর আগের মত অষ্ট গানের দল নেই। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ অষ্ট গান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন বাসা ও বাড়িতে এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অষ্ট গান পরিবেশন করেন। এসময় বাসা ও বাড়ির মালিক বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওই গানের দলকে খুশি মনে অর্থ দিয়ে থাকে । এ অর্থ দিয়ে পূজা পর্বণ করা হয় বলে জানান তারা।
নাজিরপুরের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তরুণ মিস্ত্রি বলেন, দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ অষ্ট গান। আগামী প্রজন্মকে ঐতিহ্যবাহী এ অষ্ট গানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং অষ্ট গানকে ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
বিবার্তা/মশিউর/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]