
মাগুরার শালিখা থানার সদরে গোপালগ্রাম এলাকায় একটি ভাড়া বাসা থেকে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের নাম রুনা খাতুন।
নিহত রুনা খাতুন মাগুরা সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) সাইফুল ইসলামের স্ত্রী।
শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালের দিকে শালিখা উপজেলা সদরের গোপাল গ্রামের প্রবাসী তাহের উদ্দীনের ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেশী মিজানুর বিশ্বাস সহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, ভোরে সেহেরি খাওয়ার পর আমাকে বাঁচাও বলে চিৎকার শুনতে পান। কিন্তু বাড়ির গেটে ও ঘরের দরজায় তালা দেওয়া থাকায় বাড়িতে কেউই ঢুকতে পারেনি। সকালে শুনতে পারি দারোগার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ।
এ সময় ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশের দুই হাঁটু মেঝেতে লাগানো ছিল। পুলিশের সন্দেহ হয়। যার ফলে,পুলিশ তার দুই পুত্র ফয়সাল ইসলাম রাতুল (২০) ও মোহাম্মদ আলী (১৫) এবং বড় ছেলের স্ত্রী হৃদরী খাতুনকে (১৮) থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের বোন শারমীন আক্তার সীমা বলেন, আমার বাবা মারা গেলে সাইফুল ও তার দুই ছেলে আমার বাবার বাড়ির বোনের অংশের সম্পত্তি বিক্রির জন্য আমার বোনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। নিরুপায় হয়ে আমার বোন রুনা তার অংশের সমুদয় সম্পত্তি বিক্রি স্বামীর হাতে তুলে দেয়। আমার দুই ভাগ্নে ও ভাগ্নে বউ মাদকাসক্ত হওয়ায় আমরা কেউ তাদের বাসায় যেতাম না বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সীমা।
তিনি আরো বলেন, আমার বোনকে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা সকালে সংবাদ পেয়ে গোপালগঞ্জ থেকে এসে মাটিতে শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পেয়েছি। শারমীন আক্তার সীমার স্বামী জানান, ডাক্তাররা অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে আশঙ্কা করেছেন।
মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেহেদী রাসেল জানান, সাইফুল রাতে থানার ডিউটিতে ছিল। সকালে জানতে পারে তার স্ত্রী মারা গেছে।
শালিখা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন বলেন, লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার দুই ছেলে ও পুত্রবধূকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নিহতের স্বামী এবং সন্তানেরা এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে জানালেও মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার কালে শরীরে বেশকিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শরীরের হাতেপায়ে, বিভিন্ন স্থানে অসংখ্যবার প্যাথেডিন টাইপের ইনজেকশন নেওয়ার চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। তবে ঠিক কী কারণে এবং কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে সেটি ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবার্ত/মনিরুল/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]