
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আগুনে দগ্ধ হয়ে তাওহিদ (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় মোট ১১ জনের মৃত্যু হলো।
১৮মার্চ, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় র্বান ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের (এইচডি ইউ) হাইডিফেন্সি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। তার শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো।
এর আগে গত রবিবার তার বোন তৈয়বা (৪) মারা যায়।
মৃতার খালু রিফাত বলেন, ঘটনার দিন তার মা যখন বাসায় ইফতার নিয়ে ব্যাস্ত, ঠিক ঐ সময়ে বাইরে হৈচৈ শুনে ভাই-বোন দুজনেই বাইরে যায় এবং আগুনে দগ্ধ হয়ে। পরে তাদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ইনিস্টিউটে ভর্তি করা হয়।
তাদেরর বাবা সজল মিয়া একজন পরিবহন শ্রমিক। মা, সুমাইয়া বেগম গার্মেন্টস কর্মী।
রবিবার (১৭ মার্চ) রাত ১২ টা থেকে সোমবার সকাল ৭ টা পর্যন্ত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাষ্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মোতালেব, জহুরী ইসলাম, সোলায়মান, ও রাব্বি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা ৪ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১১ জনে।
নিহত জহিরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর বেড়াখোলা গ্রামের আয়নাল ফকিরের ছেলে। মোতালেবের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানার ঈদুল পুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। মোহাম্মদ সোলায়মান গ্রামের বাড়ি ময়মনসিং জেলার ফুলবাড়িয়া থানার ভালকজান গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। রাব্বি গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার তারতারিয়া গ্রামের শাহ আলমের ছেলে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম মৃতুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গাজীপুরে দগ্ধ তাওহিদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। গত রাত থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোতালেব,জহিরুল, মো. সোলায়মান ও রাব্বিসহ ৪ জন মারা যান। এ পর্যন্ত নারী শিশুসহ ১১ জন মারা গেলেন। চিকিৎসাধীন রয়েছ ১৭ জন তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ৪ জন বার্ন রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
গতকাল রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরিফুল ইসলাম (৩৫) ও মইদুল (৩০) নামে দুজন মারা যান। সন্ধ্যার দিকে মারা যান মাইদুলের স্ত্রী নার্গিস বেগম( ২৫) এদের মধ্যে আরিফুল গার্মেন্টস কর্মী ও মইদুল কারখানায় কাজ করতেন।
গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে সোলাইমান মোল্লা (৪৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়। শনিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় তায়েবা (৩) নামে দগ্ধ এক শিশু ও ভোরে মনসুর (৩২) নামে দুজনের মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিচালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের আগুন থেকে দগ্ধ হয়ে নারী-শিশুসহ ৩৪ জনের মধ্যে ৩২ হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানান, তেলিরচালা টপস্টার কারখানার পাশে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী শ্রমিক কলোনি তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন। তার বাড়িতে থাকা সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে গেলে পাশের দোকান থেকে তিনি নতুন গ্যাস সিলিন্ডার কিনে নিয়ে আসেন। বাড়িতে সেটি লাগানোর সময় সিলিন্ডারের চাবি খুলে গিয়ে পাশের চুলা থেকে আগুন ধরে যায়। তখন তিনি গ্যাস সিলিন্ডারটি ছুঁড়ে মারেন বাইরে। এসময়ে আশপাশে থাকা শিশু, নারী ও পথচারীর শরীরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৩৪ জন দগ্ধ হন।
পরে দগ্ধদের উদ্ধার করে কোনাবাড়ী এলাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পরে তাদের ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসলে ৩৪ জনের মধ্যে ৩২ জনকে ভর্তি করা হয়।
বিবার্তা/বুলবুল/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]