চলাচলের রাস্তায় বেড়া, অবরুদ্ধ রিকশাচালকের পরিবার
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৪, ১৮:৫৯
চলাচলের রাস্তায় বেড়া, অবরুদ্ধ রিকশাচালকের পরিবার
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

লক্ষ্মীপুরে ২৭ বছর ধরে চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে রিকশাচালক আবুল বাশারের পরিবারকে প্রায় ১ মাস ধরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারটি।


৯ মার্চ, শনিবার সকালে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গন্ধর্বপুর গ্রামের মোক্তার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।


জানা গেছে, বাশারের জমিটি কেনার জন্যই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন প্রতিবেশী মমিন উল্যা। এ রাস্তায় কোনোভাবেই বাশারের পরিবারকে হাঁটার সুযোগ দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।


এদিকে যাতায়াতের পথ বন্ধ করার ঘটনায় ভুক্তভোগী আবুল বাশার ৭ মার্চ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ১৬ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রগঞ্জ থানা ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ইতোমধ্যে থানা পুলিশ ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডাকলেও তাদের কার্যালয়ে যায়নি অভিযুক্ত মমিন উল্যা।


ভুক্তভোগী বাশার গন্ধর্বপুর গ্রামের মৃত মমিন উল্যার ছেলে ও পেশায় রিকশা চালক। অভিযুক্ত মমিন উল্যা একই গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের ছেলে।


নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রায় ২৭ বছর আগে ঘটনাস্থলে বসতঘর নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করে। তখন আশপাশে অন্য কারও ঘর বাড়ি ছিল না। পরবর্তীতে তার বাড়ির সামনে মমিন উল্যারা জমি কিনে। তারাও বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। ২৭ বছর ধরেই বাড়ি পশ্চিম দিক দিয়ে বাশারের পরিবার চলাফেরা করছে। মমিন ও বাশারদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় দীর্ঘ এতোদিন কোন সমস্যা সৃষ্টি করা হয়নি। ৪ বছর আগে হঠাৎ করে মমিন তার জমির ওপর দিয়ে বাশারকে হাঁটতে নিষেধ করে। এরপরও মমিন ওই রাস্তায় চলাফেরা করত। প্রায় ১ মাস আগে মমিন তার চলাচলের রাস্তায় বাঁশ ও জাল দিয়ে বেড়া দিয়ে দেয়। এতে বাশার তার পরিবার নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে জানিয়েও কোনোভাবেই মমিনের মন গলানো যাচ্ছে না। মমিন কারো কথাই শুনছে না।


অটোরিকশা চালক আবুল বাশার বলেন, পথের জন্য মমিনের কাছ থেকে জমি কিনতে চেয়েছি, তিনি দিচ্ছেন না। পার্শ্ববর্তী একজনের কাছ থেকে জমি কিনতে চাইলেও তিনি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। মূলত মমিন আমার বাড়িটি কিনতে চাচ্ছে। আমি গরীব মানুষ, বাড়ি বিক্রি করলে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে যাবো। আমার পরিবারে ১০ জন সদস্য। সবাইকে নিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছি। বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য রাস্তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য ডিসি ও ইউএনওর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।


এ বিষয়ে মমিন উল্যা বিবার্তাকে বলেন, বাশারদের আমার রাস্তা দিয়ে হাঁটতে দেবোই না। তারা আমার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ ও থানায় অভিযোগ দিয়ে ভুল করেছে। আমাকে কষ্ট দিয়েছে। তাই তাদের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই সম্ভব না।


স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল বিবার্তাকে বলেন, বাশারের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে তিনবার অভিযুক্ত মমিন উল্যাকে ডাকা হয়েছে। কিন্তু তিনি একবারও আসেনি।


সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বিবার্তাকে বলেন, অভিযোগপত্রটি এখনো আমি পাইনি। রোববার কার্যালয় গেলে অভিযোগপত্রটি পাবো আশা করি। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।


বিবার্তা/সুমন/রোমেল

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com