ভোলার চরফ্যাশনে ধর্ষণের অভিযোগে আটক ধর্ষক উৎপল চন্দ্রকে চরফ্যাশন আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ৪ মার্চ, সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এর আগে রবিবার (৩ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার শশীভূষণে ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষক উৎপল চন্দ্রকে (২৫) হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসি। মামলায় অপর আসামি সুমন একই এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে।

উপজেলার শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের দৌলতগঞ্জ বাজার সংলগ্ন একটি খামার বাড়িতে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সেখানে উৎপল মুসলিম এক কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করে। এলাকাবাসি এ ঘটনা টের পেয়ে ধর্ষণ ওই যুবককে হাতেনাতে আটক করে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুরের দিকে শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের দৌলতগঞ্জ বাজার সংলগ্ন একটি খামার বাড়ির মধ্যে ভিকটিম কিশোরীর ডাক-চিৎকার শুনে এলাকাবাসী গিয়ে ধর্ষণের ঘটনা দেখে ভিডিও করেন। পরে ঘটনাটি এলাকাবাসী খামার বাড়ির ম্যানেজারকে অবহিত করলে ম্যানেজার ধর্ষক উৎপলকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন। এসময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধর্ষককে ধাওয়া দিয়ে আটক করে থানায় খবর দেন। পরে শশীভূষণ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোফরান একদল পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে থেকে ধর্ষক উৎপলকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। এছাড়া ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন।

মামলার এজাহারে ভিকটিম জানান, ভিকটিম ও উৎপল চন্দ্র শীল নামের যুবকের পাশাপাশি এলাকার বাড়ি। ধর্ষক উৎপল চন্দ্র শীলের সাথে গত ৬/৭ দিন আগে মাদ্রাসা যাওয়া আসার পথে পরিচয় হয় তার। সে সুবাদে রবিবার (৩ মার্চ) দুপুর সোয়া ১ দিকে উৎপল চন্দ্র শীল দেখা করার জন্য ভিকটিমের মুটোফোনে কথা বলেন এবং চরফ্যাশন থানার বসতউল্লা চৌমুহনী বাজারে যাওয়ার জন্য বলে। উৎপল চন্দ্রর কথায় সরল বিশ্বাসে রাজি হয়ে ভিকটিম সেখানে যান। সেখানে যাওয়ার পর উৎপল চন্দ্র শীল ও সুমন ভিকটিমকে ভুল বুঝিয়ে বাড়ি নিয়া যাওয়ার কথা বলে একটি মোটরসাইকেলে তুলে অপহরণ করে শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের দৌলতগঞ্জ বাজার সংলগ্ন একটি খামার বাড়িতে নিয়ে উৎপল চন্দ্র শীল সুমনের সহযোগিতায় ভিকটিমকে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় ভিকটিমের ডাক-চিৎকার শুনে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে এসে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে মোবাইল ফোনে ভিডিও চিত্র ধারন করেন এবং উৎপল চন্দ্র শীলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এসময় সুমন পালিয়ে যায়।

শশীভূষণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ম. এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণের শিকার যে মেয়েটা তার সাথে উৎপল নামের যুবকের পাশাপাশি এলাকার বাড়ি। তারা পূর্ব থেকে পরিচিত সে সুবাদে গতকাল রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে একে অপরের সাথে মুটোফোনে কথা বলে এক জাগায় মিলিত হন। এবং মেয়েটির অনিচ্ছা সত্ত্বেও এওয়াজপুর গ্রামের দৌলতগঞ্জ বাজার সংলগ্ন একটি খামারবাড়ির মধ্যে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এঘটনার পর স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান। পুলিশ সেখান থেকে উৎপল নামের এক হিন্দু যুবক ও ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। সোমবার দুপুরে আটক আসামি উৎপল চন্দ্রকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিবার্তা/শাহীন/জবা