দেশ ও দেশের বাইরে নারী সরবরাহের পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ইয়াবা হোম ডেলিভারি দেন তারা। এমন অভিযোগে রাজধানী থেকে চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি মতিঝিল বিভাগ।
এ চক্রের প্রধান সামিনা আলম নীলা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়াসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ৬ হাজার নারী সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে ডিবি। এসব নারীর মধ্যে শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়েরাই বেশি।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চক্রের প্রধান সামিনা আলম নীলা, তার সহযোগী সৌরভ ইসলাম, চৈতি, তাসনিয়া বেলা, সাকিব আহম্মেদ ও মানসিব হায়াত।
৬ ডিসেম্বর, বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ডিবি মতিঝিল বিভাগ গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিবি প্রধান বলেন, তারা ঢাকায় অনেকদিন ধরেই নারী সাপ্লাই দিয়ে আসছিলেন। নারীর সঙ্গে করে তারা ইয়াবাও সাপ্লাই দিতো। ঢাকায় ভুয়া পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে এ ধরনের অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলো তারা।
হারুন অর রশীদ জানান, গ্রেফতার চৈতি ও সাকিব স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাগুলো মেনটেইন করতেন। কাউকে সেসব বাসায় নিয়ে গেলে আত্মীয়র ভুয়া পরিচয়ে নিয়ে যেতেন।
অভিযুক্ত নীলা অভিজাত হোটেল ও বাসা-বাড়িতে প্রায় ৬ হাজারের মতো নারী সাপ্লাই দিয়েছে। তিনি বিভিন্ন নারীদের ছবি দেখাতেন। তারপর চাহিদা অনুযায়ী নারীদের সরবরাহ করতেন।
অন্যদিকে গ্রেফতার সাকিব অভিজাত এলাকায় চলাচল করতেন, নিজেকে সচিবের ছেলে পরিচয় দিতেন। তার গাড়িতে পতাকা ছিল, সাথে বডিগার্ডও থাকত। কিন্তু আদতে আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি তার বাবা লেখাপড়াই জানেন না।
সাকিব সোনালি নামে একটা মেয়ের কাছ থেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নামে ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন। নারী-ইয়াবা সাপ্লাইয়ের পাশাপাশি সাকিব সচিবের ছেলে পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। তদন্তে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করা হবে।
ডিবিপ্রধান বলেন, সমাজের গণ্যমান্য বিভিন্ন পেশার কর্মকর্তাদের তারা নারী সরবরাহ করতো বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। আমরা তদন্ত করছি। তারা বলেছে অনেক জায়গায় অসংখ্য নারী সাপ্লাই দিয়েছে। এরমধ্যে আদৌ কেউ বিদেশে পাচার হয়েছে কি-না তদন্ত করে দেখা হবে।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, সাপ্লাই অনুযায়ী কেউ যখন তাদের নির্ধারিত বাসায় যেতেন, তখন সহযোগীরা তাদের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করে মাসের পর মাস ব্ল্যাকমেইলিং করে টাকা আদায় করতো। পরিবারকে জানিয়ে দেবে এমন ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও আমরা পেয়েছি।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]