বিশ্ব পর্যটন দিবসকে কেন্দ্র করে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালে মেতেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। কার্নিভালের সাথে সরকারি টানা তিন দিনের ছুটি যুক্ত হওয়ায় প্রায় ২ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। হোটেল-মোটেলগুলোর ৯০ শতাংশের বেশি কক্ষ বুকিং রয়েছে। সমুদ্র সৈকত ও মেলা প্রাঙ্গণের পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। মেলা উপলক্ষ্যে হোটেল-মোটেল ও খাবার রেস্তোরাসহ পর্যটনের বিভিন্ন খাতে ছাড় দেয়ার কথা থাকলেও কেউ পেয়েছে, কেউ পায়নি বলে জানিয়েছে পর্যটকরা। তবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দিচ্ছে ভিন্ন তথ্য।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পয়েন্টের তিন কিলোমিটার এলাকা যেন রূপ নিয়েছে জনসমুদ্রে। আগত পর্যটকদের বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসের ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকতের বালিয়াড়িতে। তাদের কেউ এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে, কেউ পরিবার নিয়ে। এসব ভ্রমণ পিপাসুদের কেউ বিস্তীর্ণ সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘুরাঘুরি, কেউ বিচ বাইক, জেটস্কি ও ঘোড়ায় চড়ে, কেউ সাগরের নীল জলে গোসল করে। আবার কেউ কিটকটে বসে পরশ নিচ্ছেন হিমেল হাওয়ার।
এদিকে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলাকে ঘিরে হোটেল কক্ষ ও খাবার রেস্তোরাসহ বিনোদনের বিভিন্ন সেবা খাতে দামের ছাড়ের কথা বললেও আগত পর্যটকদের কেউ কেউ ছাড়তো নয়ই, উল্টো অতিরিক্ত দাম নেয়ার অভিযোগ করেছেন। তবে নিরাপত্তাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে খুশির কথা বলছেন তারা।
ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা নুরুল ইসলাম বাপ্পী জানান, টানা তিনদিনের ছুটি দেখে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন। এসে খুব ভাল লাগছে। তবে মেলা উপলক্ষ্যে যে ছাড়ের কথা বলা হয়েছে তা অনেক জায়গায় বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ ব্যাপারে একটু নজর দেয়া দরকার।
সিলেট থেকে আসা আরেক পর্যটক তানবিরুল ইসলাম জানান, এবারে ঘুরতে এসে খুবই ভাল লাগছে। কারণ মেলা উপলক্ষ্যে বাড়তি প্রাপ্তি ছিল। রেডিয়েন্ট ফিস ওর্য়াল্ডসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া গেলেও প্রতিটি ক্ষেত্রে যে ৬০ শতাংশ ছাড় দেয়ার কথা তা সঠিক নয়। এছাড়া অনেক আবাসিক হোটেলে ছাড় দেয়ার দূরের কথা উল্টো বাড়তি দাম রাখছে।
আরেক পর্যটক লাইলা আক্তার জানান, তিনি পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। তিনি আবাসিক হোটেল ও রেস্তরায় দুটিতেই ছাড় পেয়েছেন। এবারের ভ্রমণটা তাদের খুবই ভাল লেগছে।
তবে ছাড় না দেয়ার প্রসঙ্গে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা বলছেন ভিন্ন কথা।
বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (কক্সবাজার শাখা) রাশেদুল ইসলাম ডালিম জানান, বৃহস্পতিবার থেকে টানা তিনদিন সরকারি ছুটি থাকায় অনেকে মেলা উপলক্ষ্যে ছাড় ঘোষণার আগে হোটেল কক্ষ বুকিং দিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে ছাড় ছাড়াও তাদের স্বাভাবিক দাম দিতে হয়েছে। আবার কিছু হোটেল কর্তৃপক্ষ বিপুল সংখ্যক পর্যটক সমাগমকে কেন্দ্র করে অসাধু উপায় অবলম্বন করে থাকতে পারে। অন্যদিকে খাবার রেস্তোরার ক্ষেত্রে মৌসুমী ব্যবসায়ি এবং নিয়ন্ত্রণহীন কিছু প্রতিষ্ঠানকে দায়ি করেছেন তারা।
ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার শেহেরীন আলম জানান, টানা ছুটি ও পর্যটন মেলাকে ঘিরে আগত লাখো পর্যটকের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধে সার্বিক ব্যবস্থা রয়েছে। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আগত পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতের পাশিপাশি ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, ইনানীর পাথুরে সৈকত, হিমছড়ি ঝর্ণা, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, শহরের বার্মিজ মার্কেট, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক ও রামুর বৌদ্ধ বিহারসহ কক্সবাজারের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।
বিবার্তা/ফরহাদ/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]