আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৩, ১৮:২৪
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন
মোংলা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টানা তিন মাস নিষেধাজ্ঞার পর বনজীবী ও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন। আগামী ১ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত করা হচ্ছে সুন্দরবন। আবারও পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে সুন্দরবন। আর বনের ওপর নির্ভরশীল জেলেরাও যাবে তাদের জীবিকার অন্বেষণে। এতে স্বস্তি ফিরেছে এসব পেশায় যুক্ত সাধারণ মানুষের। ইতোমধ্যে জেলে, ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ ও বোটচালকরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য।


তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলে বাওয়ালি পর্যটক কেউ-ই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারেননি। জেলে বাওয়ালিদের সঙ্গে ট্রলার মালিকসহ সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদেরও দুর্দিনে কেটেছে এ সময়। অভাব-অনটনে পড়ে থাকা বনজীবীরা কষ্ট ভুলে আবারও নতুন উদ্যমে রুজির সন্ধানে ফিরতে চান সুন্দরবনে।


মোংলা টুর অপারেটর মো. মিজানুর রহমান বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেই সড়ক পথে পদ্মা সেতু পার হয়ে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ভিড় করবে সুন্দরবনে। এ জন্য আমরা আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করেছি।


সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীলরা বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জেলে ও মৎস্যজীবীরা তিন মাস খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করেছে। তাই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার সাথে সাথে বন বিভাগ থেকে পাশ পারমিট নিয়ে তারা জীবিকার অন্বেষণে ছুটে যাবেন সুন্দরবনে।


সুন্দরবন খুলনা অঞ্চলের বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দে বলেন, বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুমে জুন, জুলাই ও আগস্ট এই তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটক এবং জেলেসহ সব ধরনের মানুষের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সুন্দরবনে তিন মাস প্রবেশ বন্ধ থাকায় বন্যপ্রাণীরা নির্বিঘ্নে প্রজনন করতে পেরেছে। যার সুফল হিসেবে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর প্রজনন বৃদ্ধি পেয়েছে।


তিনি আরও বলেন, এখন বনের বিভিন্ন এলাকায় হরিণ, বানর, গুঁইসাপ অজগরসহ বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী ঘোরাফেরা করতে তারা দেখেছে। তিন মাস বন্ধ থাকার পর ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে ভ্রমণে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তারা সব ধরনের প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এক দিনের মধ্যে সুন্দরবন ভ্রমণ করে ফিরতে পারবে। পদ্মা সেতুর কারণে সুন্দরবনে পর্যটকদের ঢল নামবে বলে তিনি আশাবাদী।


সুন্দরবন করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন , বনের বিভিন্ন এলাকায় পর্যটন স্পটগুলোকে সংস্কার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। কয়েকটি ফুট ট্রেইল ও ওয়াচ টাওয়ার সংস্কার করা হয়েছে। একইসাথে বনের মধ্যে পায়ে হাঁটা পথগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন প্রস্তুত রয়েছে। সুন্দরবন ভ্রমণে আসা প্রায় অধিকাংশ পর্যটক করমজলে আসেন।


উল্লেখ্য, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের মাছ ও বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি, বিচরণ এবং প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিংয়ের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। ২০১৯ সাল থেকে এই কার্যক্রম চালু হয়েছে। তবে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এই সময় এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করেছে বন মন্ত্রণালয়। এই তিন মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাস-পারমিটও। ফলে নদী-খালে মাছ শিকারও বন্ধসহ দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবন ছিল পর্যটকশূন্য।


বিবার্তা/রানা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com