আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নরসিংদীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৪
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৩, ১৯:২৫
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নরসিংদীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৪
নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ মোট ১০ জন আহত হয়েছেন। এসময় তাদের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।


২০ জুলাই, বৃহস্পতিবার ভোরে সদর উপজেলার মেঘনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শর্টগানসহ নাজমুল ইসলাম (২০) ও আল আমিন (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।


গুলিবিদ্ধরা হলেন হলেন- আল আমিন (৩০), নাহিদ সরকার (২২), সাকিব সরকার (২৪) ও শফিউল্লাহ (৩৫)। টেঁটাবিদ্ধরা হলেন হালিম মিয়া (৫০), হারুন মিয়া (২০), মাসুদ রানা (২৪) ও নাজমুল ইসলাম (২০) । এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আলামিনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তারা আলোকবালীর খোদাদিলা গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আলোকবালী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বজলুর রহমান ফাহিম এবং যুবলীগের নেতা জাকির হোসেনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর জেরে উভয় গ্রুপের মধ্যে মামলা পাল্টা মামলা হয়েছে।


এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা জাকির ও ফাহিম এলাকা ছাড়া হয়ে পড়েন। সর্বশেষ এদিন ভোররাতে ৫ লক্ষ টাকা চুক্তির ভিত্তিতে ৩ জন অস্ত্রধারী ও তাদের সমর্থকরা বাশঁগাড়ী ও নীলক্ষার থেকে লোকজন নিয়ে এলাকায় ঢুকেন। এ খবর জয়নাল গ্রুপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা তাদের প্রতিহত করে।


এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সেসময় প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে আলামিনসহ ৪ জন গুলিবিদ্ধ হন। দুই পক্ষের কমবেশি ১০ জন আহত হন। পরে গুলিবিদ্ধ ও আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


শর্টগানসহ গ্রামবাসীর হাতে আটক নিলক্ষা গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, ৫ লাখ টাকা চুক্তিতে আমরা অস্ত্রসহ তিনজন নিলক্ষা গ্রাম থেকে এখানে এসেছি। জাকিরের দলকে জিতিয়ে দিব এবং যাকে পাবে তাকেই মারব।


এক পক্ষের নেতা জয়নাল আবেদিন বলেন, মামলায় আসামি হয়ে জাকির এলাকা ছাড়া। হঠাৎ ফজরের নামজের পর পর জাকির ও ফাহিমের নেতৃত্বে বাঁশগাড়ী ও নীলক্ষার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করেন। পরে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে ঘেরাও দিয়ে অস্ত্রসহ নাজমুল নামে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।


এ বিষয়ে অপর পক্ষের নেতা জাকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বুধবার আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ছিল। সেখানে আমাদের লোকজন যাওয়ায় জয়নাল ও তার ভাইয়েরা আমাদের লোকজনকে মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে জয়নাল লোকজন নিয়ে আমার ও আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়।


৫ লাখ টাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ভাড়া আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ। এসব সঠিক নয়।


নরসিংদী সদর থানার উপ-পরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। শর্টগানসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে। এখন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।


নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভূইয়া জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহ নিলক্ষা গ্রামের নাজমুলকে বন্দুকসহ এবং সন্দেহজনকভাবে আরো ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বিস্তারিত জানা যাবে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।


বিবার্তা/কামরুল/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com