খাগড়াছড়িতে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিবহণ সেক্টর। ৮ জুলাই, শনিবার (রাত আড়াই টার দিকে) মুখোশ পরিহিত অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি মোটরসাইকেলে করে এসে বাস টার্মিনালে থাকা একটি বাস ও ৫টি পিকআপসহ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের গ্লাস ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবহন সংগঠনের নেতারা। এঘটনায় ক্ষোভ বিরাজ করছে পরিবহন সেক্টরে।
৯ জুলাই, রবিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরিবহণ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ ঘটনার জন্য সম্প্রতি এস আলম সার্ভিসসহ কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে এসে খাগড়াছড়িতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের এ ঘটনার জন্য দায়ী করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক ইব্রাহীম ভূইয়া বলেন, গভীর রাতের মোটর সাইকেলে এসে দুষ্কৃতিকারীরা ১টি বাস, ৫টি পিকআপ ও শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসে ইটপাটকেল দিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। রাতের আঁধারে এ হামলার ঘটনার জন্য এস আলমের একটি চক্র কৌশলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। জিসান নামের ১টি ছেলে ও তার সন্ত্রাসীদের দিয়ে এসব ঘটাচ্ছে বলে জানান।
তিনি আরো বলেন, পরিবহনের সাথে কারো বিরোধ নেই। এ ঘটনার জন্য এ চক্রই দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে আইনিগত ব্যবস্থা নিতে তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। নইলে পরিবহন ধর্মঘট দেয়ারও হুশিয়ারি জানান এ সময়।
এ ঘটনার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য সমন্বয় পরিষদ এর সভাপতি বিশ্বজিত রায় দাশ বলেন, এ ধরনের বিশৃঙ্খলা কারো কাম্য নয়। জড়িত অপশক্তি যে বা যারাই হোক না কেন তাদের ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে পরিবহন সেক্টর নিয়ে অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মনতোষ ধর বক্তব্যের একমত পোষণ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আবদুল মোমিন এ ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ঘটনায় যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে ভাংচুরের ঘটনার জন্য দায়ী করা জিসান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক বলে আখ্যায়িত করে বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে আমার কোন দ্বন্দ্ব নেই। তাই এ সব ঘটনার সাথে আমার জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে তিনি নিজেও আহ্বান জানান।
স্থানীয়দের দাবি পরিবহন সেক্টরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো না গেলে যে কোন সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টির আশঙ্কা করছে। তাই পরিবহন সংগঠনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনসহ পরিবহন সংগঠনের নেতাদের যথাযথ পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন খাগড়াছড়ির সচেতন সমাজ।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে খাগড়াছড়ি সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুর রহমান জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।
বিবার্তা/মামুন/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]