বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই তিস্তার পানি
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৩, ১৭:১১
বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই তিস্তার পানি
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। নদীর পানি কমা-বাড়ার কারণে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি জলকপাট খুলে রেখে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।


শুক্রবার (৩০ জুন) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ১৭ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় পানি কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরে তিস্তার পানি বিপৎসীমার অনেক নিচে ছিল। গতকাল রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করলে সকাল ৬টায় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে। আবার সকাল ৯টার দিকে কমে বর্তমানে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে তিস্তার পানি।


এদিকে পানি বাড়া-কমার কারণে তিস্তা নদীর উজানে বেড়েছে ভাঙন। ভাঙনে নদীর পেটে চলে গেছে ফসলি জমি, বসতভিটা। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা মুন্সিপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীর ডান তীরে জ্যামিতিক হারে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙছে ফসলি জমি, বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া পৈতৃক ভিটে-মাটি। হুমকির মুখে পড়েছে শতাধিক বাড়িঘর, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ।


ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, কয়েক দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি ওঠানামা করলেও বাড়িঘরে এখনো পানি ওঠেনি। তবে বিস্তীর্ণ এলাকার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫ চরগ্রামের মানুষ।


ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা জানান, গত কয়েক দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ছোটখাতা এলাকার উজানেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। যদি খুব ভাঙন দেখা দেয় আমরা প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।


তিনি আরও বলেন, এখন যেহেতু বর্ষাকাল তিস্তা নদীর পানি সামনে আরও বাড়তে পারে। পানি বাড়বে এ রকম পূর্বাভাস রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি।


পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের কর্মকর্তারা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। এর আগে, গত ১৯ জুন তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। তারপর ২০ জুন থেকে পানি কমতে শুরু করে স্বাভাবিক হলেও আজ আবার বেড়েছে।


এদিকে, ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদীপাড়ের বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি বাড়লেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কমাতে মাইকিং করে স্থানীয়দের সতর্ক করেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com