থেমে নেই কামার শিল্পীদের হাতুড়ির আঘাত
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৩, ১৪:০৩
থেমে নেই কামার শিল্পীদের হাতুড়ির আঘাত
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

হাপার টানা সৃষ্ট বাতাসে কয়লায় জ্বলছে আগুন। লাল লোহায় হাতুড়ির আঘাত। টুংটাং শব্দ আর আগুনে লাল হওয়া লোহাকে আকৃতি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ছুরি, চাপাতি, দা, বটিসহ নানান সব উপকরণ। পাশেই শান দিয়ে এসবকে চকচকে করে তুলছেন এক কামার শিল্পী। পবিত্র ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসায় এভাবেই ব্যস্ততা বেড়েছে কামার শিল্পীদের।


সারা বছর অলস সময় পার করলেও প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে ব্যস্ততা বেড়ে যায় এসব কামার শিল্পীদের। নাওয়া, খাওয়া, বিশ্রাম বাদ দিয়ে দিনরাত চলে আগুন-লোহার কাজ। কারণ ঈদের আগেই কাস্টমারকে দিতে হবে সে সবের ডেলিভারি।


চকবাজারের কামারপল্লীতেও দেখা গেছে দা-ছুরি বানানোর ধুম। কামাররা দোকানে বিভিন্ন আকারের দা-ছুরি বানিয়ে সাজিয়ে রেখেছেন। আবার অনেকে ঘরের পুরাতন ছুরি-দা এনে দিচ্ছেন ধার করানোর জন্য। এখানে আকার ভেদে ধামা-দা বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। একটি ছুরি তৈরি করতে আকারভেদে নেওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বড় ছুরিগুলোতে বানাতে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। আর বটি বানাতে কামাররা নিচ্ছেন ৫০০ টাকা পর্যন্ত। চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ রেল হাউজিং, পাহড়তলী, খুলশী আবাসিক, চকবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।


কামারপট্টিতে ছুরি কিনতে আসা সরোয়ার বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানের ঈদ আসলে দা-ছুরি কেনা হয়। এবারও এখানে এসেছি কিনতে। কিন্তু গত বছরের চেয়ে দাম একটু বেশি চাইছে। বড় ছুরিগুলোর দাম ৬০০ টাকার ওপরে বলছে।’


চট্টগ্রাম চকবাজারের কামারপল্লীর রাতুল দাশ বলেন, ‘বছরের অন্য সময় একবারে ফাঁকা থাকলেও প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে বেচা-বিক্রি বেড়ে যায়। এখন যেহেতু ঈদের দুই/তিন দিন বাকি, সেহেতু এখন প্রচুর কাজের চাপ। দিনরাত কাজ করে যেতে হচ্ছে তাদের। তবে আগের তুলনায় কাজ কমেছে। কারণ বাজারে বিভিন্ন দোকানে ঈদের সময় রেডিমেড, চাইনিজ সব চাপাতি, চাকু, ছুরি পাওয়া যায়। সেগুলো দেখতেও সুন্দর, তাই অনেকে এখন ওগুলো কেনে না। তবে আমরা যেগুলো লোহা পিটিয়ে বানাই সেগুলোর মান এবং স্থায়িত্ব অনেক বেশি, গুনগত মানের হয়।’


তিনি আরও বলেন, এখন সব কিছুর খরচ অনেক বেশি। আগের মতো এখন আর লাভ করা যায় না। কারণ এগুলো ভালো মতো কাজ করতে হলে লাগে রেলের লোহা, এখন এসব লোহা ১৩০/১৪০ টাকা কেজি পড়ে যায়। এক বস্তা পাথর কয়লা ২৫০০-২৬০০ টাকা বস্তা পড়ছে। যা আগে অনেক কম ছিল। ফলে এখন ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে গেছে।


কামার শিল্পী রাজীব দাশ বলেন, ‘আগে ব্যবসা ভালোই চলত কিন্তু বর্তমান বাজারে ব্যবসা খুব খারাপ। এখন আমাদের ব্যস্ততা বহুগুণে বেড়েছে। ঈদের জন্য চুক্তিভিত্তিক কারিগর এনেছে অনেকে, সব কামারের দোকানে চলছে ব্যস্ততা। ঈদের আগের রাত পর্যন্ত এ ব্যস্ততা চলবে।’


বিবার্তা/জাহেদ/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com