টাঙ্গাইলে এ বছর পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে কোরবানি পশু হিসেবে জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড় হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে দেলদুয়ার উপজেলার কালা মানিক ও সদর উপজেলার সাদা বাহাদুর ও বস।
এই নামগুলো কোনো গল্প বা সিনেমার নাম নয়। এগুলো কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য নিবন্ধন করা ষাঁড় গরুর নাম। এসব ষাঁড় গরুর ওজন ২৫ থেকে ৫২ মণের মধ্যে। দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত।
সরেজমিনে দেলদুয়ার উপজেলার ভেঙ্গুলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পূর্বপাশে টিনের চৌচালা ঘরে জেলার আলোচিত কালা মানিককে পরিচর্যা করছেন এক কলেজছাত্রী। তার নাম হামিদা আক্তার। সে করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজে মাস্টার্স শেষ বর্ষে পড়ালেখা করছেন।
কালা মানিকের মাথার উপর সার্বক্ষণিক একটি ফ্যান চলছে। সাংবাদিক পরিচয়ে কালা মানিককে বাড়ির আঙিনা নিয়ে আসেন। কথা হয় হামিদার সাথে।
তিনি বলেন, কালা মানিকের জাত ফ্রিজিয়ান ও ওজন প্রায় ৫২ মণ। দাম চাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, ইতঃপূর্বেও আমি ফ্রিজিয়ান জাতের রতন ও টাইগার নামের দুটি বড় আকৃতির ষাঁড় বিক্রি করেছি। মানিক নামের ষাঁড়টির ন্যায্য দাম পেলে বিক্রি করব। তাই সামর্থ্য ও দয়াবানদের নিকট তিনি আকুতি জানান ষাঁড় গরুটি কেনার জন্য।
তিনি আরও বলেন, দাম যাই হোক বাড়ি থেকে যদি এই ষাঁড়টি বিক্রি করতে পারতাম। তাহলে ওই টাকা দিয়ে তিনি একটি খামার করবেন।
অপরদিকে, সাদা বাহার ও বস নামের ষাঁড় গরু পালনকারী ইউপি চেয়ারম্যান সুজায়েত হোসেন বলেন, এবার গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। যেমন ভুসি, খুদ, চাল ও ভুট্টার দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। যে কারণে গবাদিপশু পালনে হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে।
তিনি আরও বলেন, বাহাদুর ও বসের ওজন প্রায় ২৯ মণ ও ৩১ মণ। তিনি ষাঁড় দুটির দাম চাচ্ছেন ১৭ ও ২০ লাখ টাকা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, আসন্ন ঈদে কোরবানি পশুর প্রস্তুত রয়েছে এক লাখ ৯১ হাজার ৭১৫টি। তার মধ্যে ৭১ হাজার ৫৬০টি গরু ও এক লাখ ২০ হাজার ১শ ৫৫টি ছাগল। জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজারে কিছুটা বেশি। উদ্ধৃতি রয়েছে ৪১ হাজার ৭১৫টি গবাদি পশু। বেশি মুনাফার আশা সারাবছর পরিশ্রম করে অতি যত্নে এসব পশু লালন পালন করেছে প্রান্তিক খামারিরা। প্রত্যেক খামারি তাদের প্রিয় পশুটি সর্বোচ্চ দামে বিক্রি করতে শেষ বেলায় ব্যস্ত সময় দিন কাটাচ্ছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া জানান, জেলায় সবচেয়ে বড় ষাঁড় হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে দেলদুয়ারের কালা মানিক। সদর উপজেলার সাদা বাহাদুর ও বস। ষাঁড়গুলোকে কোন প্রকার ওষুধ প্রয়োগ করা হয় সে জন্য আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রেখেছি এবং পরামর্শ দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, কয়েক বছর যাবত নিজেদের লালন পালন করা পশু দিয়ে জেলার চাহিদা মেটানো হচ্ছে। অতিরিক্ত পশুগুলো দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হয়। প্রাকৃতিকভাবে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণের জন্য খামারিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
পশু মোটাতাজাকরণের জন্য প্রত্যেক খামারিকে ঘাস চাষের জন্য বিশেষভাবে বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রাণীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার না করার জন্য খামারিদের সচেতন করা হয়েছে। পাশাপাশি কোরবানির পশুর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য জেলার প্রতিটি হাটে পশু চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক নিয়োগ রয়েছে।
বিবার্তা/ইমরুল/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]