ফরিদপুরে ঐতিহ্যবাহী কুমার নদ রক্ষায় জেলা প্রশাসশনের উদ্যোগে কাজ করছে প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী। কার্যক্রমে নগরীর ১০ পয়েন্টে কচুরিপানা পরিষ্কার এবং বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে।
ফরিদপুর পৌরসভার ১০টি এলাকায় আড়াই কিলোমিটার নদের এ কচুরিপানা অপসারণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এনডিসি মো. মজিবুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কুমার নদের কচুরিপানা অপসারণে জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দশ হাজার মানুষ কাজ করছেন, তাদের মধ্যে মৎস্যজীবী ৯০০, ছাত্রী-ছাত্রী ১ হাজার, অন্যান্য পেশার ৮ হাজার ১০০ জন রয়েছেন। কাজে অনুপ্রেরণা জোগাতে বিসর্জন ঘাট সংলগ্ন মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গান পরিবেশন করছে বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা।
শনিবার (১৭ জুন) সকাল ৭ টায় ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল আহসান তালুকদার।
অপসারণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াছিন কবীরের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসীম কুমার সাহা প্রমুখ।
এছাড়া এসময় উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ফরিদপুর পৌরসভার কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিবর্গ, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তর, এনজিও ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের জনগণ।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং ফরিদপুর জেলা পরিষদ, ফরিদপুর পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের সার্বিক সহযোগিতায় এ অপসারণ কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়া হয়।কার্যক্রমে ফরিদপুরের বাইরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী এবং স্বেচ্ছাসেবকরা অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শেখ স্বাধীন শাহেদের নেতৃত্বে একটি টিম মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে নগরীর শামসুল উলুম মাদ্রাসা পয়েন্টে কাজ করেন। তিনি জানান,আমাদের দেশ বহি:শত্রু দ্বারা আক্রান্ত নয় যে যুদ্ধ করেই দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হবে। বৃক্ষরোপণ, যত্রতত্র ময়লা না ফেলা,বিদ্যুতের অপচয় না করাই এখন দেশপ্রেমের সংজ্ঞা হতে পারে। কুমার নদ রক্ষায় এ কার্যক্রমকে আমরা দেশমাতৃকার সেবা বলেই অবহিত করতে পারি "।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে এ ব্যাপারে কার্যক্রমের মূল উদ্যোক্তা ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, সকালে উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে একযোগে শহরের আড়াই কিলোমিটার এলাকার দশটি স্পটে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী কচুরিপানা অপসারণে নদে নামে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও লোকজন অংশগ্রহণ করে।
জেলা প্রশাসক বলেন, চোখের সামনে একটা নদী মারা যাবে এটা হতে পারে না। যেকোনো মূল্যেই এ কচুরিপানা অপসারণ করতে হবে। তাইতো চ্যালেঞ্জ জেনেও এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে সবার সাড়া পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর শহর ছাড়াও জেলার অন্য উপজেলাগুলোতেও একইদিন কচুরিপানা ও বর্জ্য অপসারণ কর্মসূচি চলছে।
বিবার্তা/রাসেল/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]