বর্ষার আগেই টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আগাম ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক বসতবাড়ি ফসলি জমি যমুনার পেটে বিলীন হয়ে গেছে। গত ৩-৪ দিন থেকে সলিমাবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনরোধে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, যমুনার ভাঙনে প্রতিবছরই নাগরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শত শত ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে চলে যায়। গত কয়েকদিনের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হচ্ছে- সলিমাবাদ ইউনিয়নের পাইসকা মাইঝাইল, খাস ঘুনিপাড়া, চর সলিমাবাদ ও ভূতের মোড়, ভারড়া ইউনিয়নের শাহজানী, মারমা ও উলাডাব এবং দপ্তিয়র ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর, কাটি নিশ্চিন্তপুর ও বাক কাটারি।
কয়েক বছরে এসব এলাকার সহ সহস্রাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যমুনায় বিলীন হয়েছে। গত কয়েকদিনের ভাঙনে সলিমাবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন স্কুলের বেশির ভাগ অংশ নদীতে চলে গেছে। এছাড়াও নতুন ভবনে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। সম্প্রতি পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পরে বৃহস্পতিবার থেকে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
সলিমাবাদ পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুল আওয়াল জানান, শুকনো মৌসুমে ভাঙনরোধে যদি ব্লক বা বেড়িবাঁধ স্থাপন করা হতো তাহলে গ্রামের শত শত মানুষের উপকারে আসত। বর্ষা শুরুর আগেই স্কুলটি ক্ষতির মুখে পড়ত না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আখিরুল জানান, সলিমাবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ভূতের মোড় পর্যন্ত এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্কুলের অনেকাংশ নদীতে চলে গেছে।
সলিবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ জানান, কয়েকদিনের ভাঙনে বিদ্যালয়ের টয়লেট ও স্কুল ভবনের এক কক্ষ চলে গেছে। বিদ্যালয়ের সরঞ্জামগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভাঙনের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছে। ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না। এসময় স্থায়ী সমাধানের জন্য বেড়িবাঁধ ও ব্লক স্থাপনের দাবি জানান তিনি।
সলিমাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান শাহীদুল ইসলাম অপু জানান, পাঁচ বছর ধরে সলিমাবাদ এলাকায় যমুনার ভাঙন শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত চার শতাধিক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি যমুনা গর্ভে চলে গেছে। এ বছর নতুন করে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। গ্রামের প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিলীনের পথে। পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ও আমাদের এমপি টিটু এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙনরোধে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। স্থায়ী সমাধানের পরিকল্পনা রয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, ভাঙনরোধে ৩’শ মিটার এলাকায় বৃহস্পতিবার থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। বন্যাকালীন সময়ে স্থায়ীভাবে কোনো সমাধান করা যাবে না। পার্শ্ববর্তী এলাকায় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে প্রকল্প চলমান আছে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিবার্তা/ইমরুল/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]