সর্বনিম্ন দরদাতা পেলেন গরুর হাটের ইজারা
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১৭:৪২
সর্বনিম্ন দরদাতা পেলেন গরুর হাটের ইজারা
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঐতিহ্যবাহী গোয়ালন্দ গরুর হাট ইজারায় অনিয়মের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতাকে হাট ইজারা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।


অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি গোয়ালন্দ গরুর হাট ইজারার জন্য দরপত্র আহবান করে গোয়ালন্দ পৌরসভা। দরপত্রে গরুর হাটের সরকারি কাঙ্খিত মূল্য দেয়া হয় ২৭ লক্ষ ৪ হাজার টাকা। গরুর হাট ইজারার জন্য মোট তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। তিনটি দরপত্রের মধ্যে মণ্ডল ট্রেডার্স সর্বোচ্চ দরদাতা ডাক মূল্য ২৯ লক্ষ টাকা, মৌ এন্টারপ্রাইজ ২৭ লক্ষ ১৫ হাজার ৩শ ৭৫ টাকা এবং সর্বনিম্ন দরদাতা জাকির হোসেন ২৬ লক্ষ এক হাজার টাকা হিসেবে দরপত্র জমা দেন।


নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা মণ্ডল ট্রেডার্স ডাক মূল্য ২৯ লক্ষ এবং আয়কর ও ভ্যাট ৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা সর্বমোট ৩৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে মেয়রের অনুকূলে জমাও করেন। কিন্তু পৌরসভা সর্বোচ্চ দরদাতাকে হাট ইজারা না দিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা জাকির হোসেনকে গরুর হাট ইজারা প্রদান করেন। জাকির হোসেন কাঙ্খিত সরকারি মূল্যের চেয়ে ১ লক্ষ ৩ হাজার টাকা কমে দরপত্র জমা দেন। কাঙ্খিত মূল্য না পেলে পুনরায় দরপত্র আহবান করার বিধিও এক্ষেত্রে আমলে নেয়া হয়নি।


আরো জানা যায়, ইজারা বিজ্ঞপ্তিতে ২য় ও ৩য় বার দরপত্র প্রস্তাব আহবানের সুযোগ থাকলেও তা অবলম্বন করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, নীতমালা অনুসারে উল্লেখিত দরের ৩০% টাকা জামানত হিসাবে বিডি/ পে- অর্ডারের মাধ্যমে জমা দেয়ার বিধান থাকলেও বিজ্ঞপ্তির শর্তে ১০০% (একশত ভাগ) জমা দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তথাপি সর্বোচ্চ দর প্রস্তাবকারী শতভাগ মূল্যের বিডি/ পে-অর্ডার দাখিল করে। অন্যদিকে সর্বনিম্ন দর দাতা জাকির হোসেনের প্রস্তাবিত দর সরকারি কাঙ্খিত মূল্যের চেয়ে কম এবং ৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দেন। বাকি ১১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নগদ টাকা জমা দেন। যা তফসিলে ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেবার কথা থাকলেও জমা না দিয়ে নগদ টাকা প্রদান করায় ইজারা দিয়ে দেন।


বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা মণ্ডল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নাসিম মাহমুদ ইভান জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। গত ১৫ মে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারি কমিশনার আতিকুল ইসলাম রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকে একটি পত্র দেন। পত্রটিতে উল্লেখ করা হয় শর্তাবলি লংঘন করে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা প্রদান করা হয়নি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে অবহিত করার জন্য বলা হল।


বিষয়টি জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিষয়টি আমরা জানি। বর্তমানে তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু এখন বলা যাবে না।


এ বিষয়ে গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতা এবং তার পরের জন নিয়ম অনুযায়ী টাকা জমা ও দরপত্র জমা দেয় নাই। এজন্য আমরা পৌর পরিষদ সভা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জাকির হোসেনকে ইজারা দিয়েছি। সরকারি কাঙ্খিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে কেন দিলেন, আর পুনরায় কেন দরপত্র আহবান করলেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, চারদিকে হাট আর স্থান কমে যাবার কারণে আমাদের গরুর হাট ছোট হয়ে আসছে। আমরা এই হাটটি টিকিয়ে রাখার জন্য পরিষদের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইজারা দিয়েছি।


বিবার্তা/মিঠুন/সউদ/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com