সুইজারল্যান্ডে
গরুর গলায় ঘণ্টা থাকবে কি না, গণভোটে সিদ্ধান্ত
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩৯
গরুর গলায় ঘণ্টা থাকবে কি না, গণভোটে সিদ্ধান্ত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সুইজারল্যান্ডের অন্যতম একটি প্রতীক সবুজ চারণভূমিতে গরুর পাল ঘাস খাচ্ছে এবং ওদের গলায় ঝোলানো ঘণ্টা সারাক্ষণই টুংটাং করে বাজছে। তবে, ঐতিহ্যবাহী এই প্রথা যে সবারই ভালো লাগে, বিষয়টি এমন নয়।


চলতি বছরের শুরুর দিকে মধ্য সুইজারল্যান্ডের আরওয়ানগেন গ্রামে এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়। সেখানে বলা হয়, একটি আবাসিক এলাকার পাশের মাঠে থাকা ১৫টি গরু রাতভর থাকে। এদের গলায় বাঁধা ঘণ্টার শব্দে রাতে ঘুমানো দায়।


মাঠের পাশে ভাড়ায় থাকা অ্যাপার্টমেন্টের দুই জোড়া দম্পতি মাঠের ওই গরুগুলোর গলায় থাকা ঘণ্টা যাতে কৃষক রাতের বেলা সরিয়ে নেন, সে জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কিন্তু ঘণ্টার ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার রক্ষায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এ নিয়ে তাঁরা ভোটের দাবি তোলেন।


আরওয়ানজেনের মেয়র নিকলাউস লুন্ডসগার্ড-হ্যানসেন এক প্রশ্নের জবাবে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো এমন অভিযোগ শুনে অবাক হয়েছিলাম। গরু যে এত বেশি শব্দ করে, এটা আমি জানতাম না। তবে জানতে পারলাম এরাও মানুষকে বিরক্ত করতে পারে।’ তবে এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে এত প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়াটা তাঁকে অবাক করেছে।


অভিযোগটি সুইজারল্যান্ডের প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে তুলে ধরতে অভিযোগের পক্ষে গ্রামের মোট বাসিন্দাদের ১০ শতাংশের সমর্থন দরকার ছিল। গ্রামের মোট ৪ হাজার ৮০০ বাসিন্দা।


উল্টো গ্রামবাসীরা ‘বেল ইনিশিয়েটিভ’-এর পক্ষে অর্থাৎ গরুর গলায় ঘণ্টা বাঁধার পক্ষে ১ হাজার ৯৯ গ্রামবাসীর সই সংগ্রহ করেছেন। সেখানে বলা হয়, গরুর গলায় সব সময় ঘণ্টা বেঁধে রাখার অধিকার কৃষকদের আছে।


পরে গত সোমবার সন্ধ্যায় এই উদ্যোগ আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরসভা পরিষদে তুলে ধরা হয়। এ নিয়ে আগামী বছরের জুনে ভোটাভুটি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগে নেতৃত্বদানকারী একজন চিকিৎসক আন্দ্রেস বাউম্যান বলেন, বৈঠকে থাকা ১৬৬ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জন গরুর গলায় ঘণ্টা বাঁধার বিরোধিতা করেছিলেন।


আল্পইন পবর্তমালার চারণভূমিতে চরে বেড়ানো গৃহপালিত পশুদের অবস্থান জানার জন্য একসময় এই ঘণ্টা অপরিহার্য ছিল। এরপর জিপিএস ট্র্যাকার আসার পর এই ঘণ্টার প্রয়োজনীয়তা কমে যায়। তারপরও এই ঘণ্টা সুইস গ্রামীণ জীবনের একটি শক্তিশালী প্রতীক হিসেবে রয়ে গেছে।


গ্রীষ্মকালে আল্পাইনে জমিতে কৃষিকাজের প্রচলিত রীতির অংশ হিসেবে গবাদিপশুর পালকে উঁচু পাহাড়ের চারণভূমিতে নিয়ে যাওয়া হতো। এদের গলায় বাঁধা হয় আলংকারিক ঘণ্টা। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’ তালিকায় স্থান করে নেয় এটি।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com