করোনাভাইরাসকে পরাজিত করার পর আবার জনগণের কল্যাণে কাজ শুরু করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পরিচালক ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। এর আগে দেশে করোনাভাইরাসে রোগী শনাক্ত হওয়ার পর তিনি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন।
করোনা জয় করে সিলেট করোনা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের হাতে ভেন্টিলেটর তুলে দিচ্ছেন নাদেল।
এক পর্যায়ে তিনি নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। পরে দুই সপ্তাহ লড়াই করে তিনি করোনামুক্ত হন। কিন্তু করোনামুক্তির পর তিনি বসে থাকেননি। আবারো মানুষের কল্যাণে কাজ শুরু করেছেন। তবে এবার করোনা চিকিৎসা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কাজ করছেন। ইতোমধ্যে সিলেট করোনা হাসপাতালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুটি ভেন্টিলেটর দিয়েছেন তিনি। বিবার্তার সাথে একান্ত আলাপকালে এমন তথ্য জানিয়েছেন নাদেল।
তিনি বলেন, গত ২২ মে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি জানতে পারি। এরপর নিজ বাসায় আলাদা একটি রুমে পরিবার থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখি। কঠোর নিয়ম মেনে চলায় আমার পরিবারের আর কেউই আক্রান্ত হননি। পরে ৩ জুন দ্বিতীয়বার পরীক্ষা শেষে তার রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। ফলে তিনি কোভিড-১৯ থেকে মুক্ত হন। এরপর ৫ জুন থেকে আবার সাধারণ মানুষের জন্য কাজ শুরু করেন ত্যাগী এই নেতা।
ওই দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের জন্য দুটি ভেন্টিলেটর উপহার দেন। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল শামসুদ্দিন হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. ইউনুছুর রহমানের কাছে ভেন্টিলেটর দুটি হস্তান্তর করেন।
এ সময় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়, এনেস্থেশিয়া বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ময়নুল ইসলাম ডালিম, শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মহাপাত্র, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শফিউল আলম জুয়েলসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে বাসায় বাসায় ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন নাদেল।
বিবার্তাকে নাদেল আরো বলেন, করোনা ইউনিট ঘোষণা দেয়ার পর শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভেন্টিলেটর না থাকার বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছিল। শুরুর দিকে মাত্র দুটি ভেন্টিলেটর নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পরে নয়টি ভেন্টিলেটর দেয়া হয় সিলেটের এ বিশেষায়িত করোনা হাসপাতালে। এরপর সম্প্রতি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আরো তিনটি ভেন্টিলেটর দেয়া হয় এ হাসপাতালে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া দুটিসহ এ হাসপাতালে ভেন্টিলেটর হলো ১৬টি। এছাড়ারো আরো তিনটি ভেন্টিলেটর দেয়ার জন্য কাজ চলছে। খুব শিগগিরই আরো তিনটি ভেন্টিলেটর ওই হাসপাতালে দেয়া হবে।নিজে আক্রান্ত হওয়া সম্পর্কে নাদেল বলেন, করোনা সংক্রামণ বাড়ার সময় থেকেই আমি সিলেটে অনেক কাজ করেছি।
কাজ করতে গিয়ে আমার মাথায় ছিল, যে কোনো সময় আমার করোনা হতে পারে। ইফতারের কোনো একটি প্রোগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হই আমি। ত্রাণ বিতরণসহ অন্য সবখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা গেলেও ইফতারের প্রোগ্রামে সম্ভব হয়নি। যদিও আমি গ্লাভস ও মাস্ক ব্যবহার করেছি। তবুও কোনো না কোনোভাবে সংক্রমণ হয়ে গেছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে সিলেটে ত্রাণ বিতরণ করছেন নাদেল।
তিনি বলেন, করোনা শনাক্ত হওয়ার পর আমি মনোবল হারাইনি। নিজের ইচ্ছায় অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ওষুধ খেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, অসুস্থ অবস্থায় দলীয় নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ যারা তার জন্য শুভ কামনা করেছেন তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। এছাড়া যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন তাদের মনোবল না হারিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
বিবার্তা/খলিল/উজ্জ্বল/জাহিদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]