
টানা দর পতনের মুখে পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। চলতি বছরের শুরুতে গতিশীল থাকলেও সম্প্রতি কোম্পানিগুলোর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের পর পুঁজিবাজারের সেই গতি কিছুটা কমেছে। বিশেষ করে অসাধু চক্রের বিভিন্ন ধরনের গুজব রটানোর কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে।
পতনের ধারা অব্যাহত থাকায় রমজানের প্রথম দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়। ফলে ডিএসইর প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ৫১ পয়েন্ট উধাও হয়ে যায়। ফলে বিনিয়োগকারীদের মনে একটি আতঙ্ক ঘুরপাক খেতে থাকে । সেটি হলো নতুন ভাবনা-মূল্যসূচক কি ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যাবে? একবার নেমে গেলে কোথায় গিয়ে থামবে?
এমন আতঙ্কের মধ্যেই আজ লেনদেন শুরুর কয়েক ১৩ মিনিটের মধ্যে সূচকের পতন ঘটেছে। ফলে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৬০০০ পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। যা ৩৩ মাস পর ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে গেলো মূল্যসূচক । ফলে হতাশায় ভুগছেন বিনিয়োগকারীরা।
তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন , বিনিয়োগকারীরা গুজবে আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে ডিএসইর সূচক ৬০০০ পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে। তবে এমনটি হওয়ার মতো কোনো দৃশ্যমান কারণ নেই। যারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে শেয়ার বিক্রি করছেন, তাদের আরও জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ। এ পরিস্থিতিতে ফোর্সড সেল না করার আহ্বান জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, পুঁজিবাজার নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের সোচ্চার হওয়ার জন্য সতর্কবার্তা জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস ও জেড ক্যাটাগরির বিষয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, এরকম কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় এ মুহূর্তে কমিশনের বিবেচনায় নেই। এরকম গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের নিম্নগতিতে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন লেনদেন শুরুর প্রথম ঘন্টায় কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। একইসঙ্গে গত দিনের তুলনায় টাকার অংকে কমেছে লেনদেনের পরিমান।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, বেলা ১১টায় ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৯৭৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩০২ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৫৭ পয়েন্টে।
এসময় লেনদেন হওয়া ৩৫৮টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯১টির, দর কমেছে ১৯৮টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৯ টির। এ সময় টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ১১৪ কোটি ৩ লাখ টাকা।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের চেয়ে ২৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭ হাজার ২৩৯ পয়েন্টে।
এ সময় লেনদেন হওয়া ৮৯ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩ টির, দর কমেছে ৪০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬ টির। আলোচিত সময়ে টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]