প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতির ফলে দ্রুত গতিতে বদলে যাচ্ছে প্রযুক্তির ধরণ। প্রযুক্তির বিকাশের গতি এতটাই বেড়ে গেছে যে, এখন একটা সামগ্রী কিনে আনতে না আনতেই শোনা যায় সেটাও নাকি পুরনো ধাঁচের।
শেষ যেখানেই হোক না কেন, প্রযুক্তির গতির সাথে তাল মেলাতে মেলাতে আমরা অনেক প্রযুক্তির কথা ভুলতে বসেছি। আজ তেমনি হারিয়ে যেতে বসা কিছু প্রযুক্তি নিয়ে এখানে আলোচনা করা হলো-
লেজার ডিস্ক প্লেয়ার : আজকের ডিজিটাল ভার্সেটাইল ডিস্ক (DVD) মার্কেটে আসার আগে এই লেজার ডিস্কই ছিল উচ্চবিত্ত পরিবারের বিনোদনের খোরাক। তবে DVD মার্কেটে আসার পরে এর করুণাবস্থা হয়।
সুপার ৮মিমি হ্যান্ডি ক্যাম : আজকাল হাতে হাতে হ্যান্ডি ক্যাম আর ডিজিটাল ক্যাম থাকলেও কয়েক দশক আগেও ছিল তা দুঃসাধ্য ব্যাপার। সেই ১৯৬৫ সালে কোডাকই প্রথম কোম্পানি যারা মার্কেটে নিয়ে আসে বিখ্যাত ৮মিমি হ্যান্ডি ক্যাম। সাথে সাথে সয়লাব হয়ে যায় মানুষের ঘরে ঘরে। পার্টিতে নিয়ে আসে আলাদা মাত্রা। তবে এই ক্যাম এখন শো কেসেই বেশি শোভা পায়।
বুম বক্স : ক্যাসেট টেপ বাজানোর যে যন্ত্র, যেটা আমাদের কাছে ক্যাসেট প্লেয়ার নামে পরিচিত তা মূলত বুম বক্স নামেই মার্কেটে রিলিজ হয় ১৯৭০ সালে। শুরুর দিকে খুবই ভারি ভারি হতো এগুলো। তবে মজার কথা হচ্ছে সাইজ আর ওজন কমতে কমতে এখন মার্কেট থেকেই ভ্যানিশ হয়ে গেছে এই জিনিস।
বেটামেক্স : আপনারা নিশ্চই ভিসিআর ডিভাইসের ভিএইচএস ক্যাসেটের সাথে পরিচিত। বেটামেক্স হচ্ছে সেই VHS এর ঠিক আগের প্রযুক্তি। ১৯৭৫ সালে সনি মার্কেটে এই বেটামেক্স এনে রীতিমত সাড়া ফেলে দেয়।
ভিএইচএস (VHS) : সনির বেটামেক্সের পরের প্রযুক্তি হলেও এটি মার্কেটে আনে JVC এবং সে যে কী পরিমাণ দাপটের সাথে মার্কেটে রাজত্ব করেছে তা আমরা ভালোই জানি। এর বিলুপ্তিও আমরা নিজের চোখেই অবলোকন করেছি।
রিল টু রিল : ক্যাসেট থেকে ক্যাসেটে গান রেকর্ড করার জন্যে সর্বপ্রথম এই যন্ত্রটি মার্কেটে সাড়া জাগায়। যদিও এখন কোথাও এটি ব্যবহার হয় না।
টার্নটেবল : আমাদের দেশে সরাসরি এই জিনিসের ব্যবহার ছিল বলে আমার জানা নেই। তবে এই জিনিসই এখন আমাদের দেশের DJ পার্টি এবং রেকর্ডিং স্টুডিওতে ব্যবহার করা হয়।
ফোনোগ্রাফ : নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মনে হয় প্রয়োজন নেই। অনেকে গ্রামোফোন নামেও চেনেন। ১৮৭৭ সালে টমাস এডিসনের জুগান্তকারী এই আবিষ্কারের মোহ থেকে শত বছরেও মানুষের মুখ ফেরাতে পারেনি অন্য কোনো ডিভাইস। এখনও শৌখিনেরা ড্রয়িং রুমে গ্রামোফোন শুনে নস্টালজিক হয়।
এইচএম রেডিও : বিংশ শতাব্দীতে এই কালচার স্টার্ট হলেও জরিপে দেখা যায় এখনও ৬ মিলিয়ন লোক এই প্রযুক্তির সাথে প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে সংযুক্ত। এই প্রযুক্তির সাহায্যে রেডিও অপারেটররা শর্টওয়েভ রেডিও কমিউনিকেশনে কানেক্টেড থাকে। এ পর্যন্ত হলিউডের বিভিন্ন বিগ বাজেটের মুভিতেও মাঝে মাঝে এই ডিভাইস ফিচারড হয়েছে।
ট্রান্সিসটর রেডিও : এখনো গ্রামে অনেক ময়-মুরুব্বি আছেন যারা রেডিওকে ট্রান্সিসটর নামেই ডাকেন। অনেকেই হয়ত অবাক হয় রেডিও কেন ট্রান্সিসটর বলা হয়? এটা হয়েছে মূলত তারা যে রেডিওতে বিনোদনের সকল খোরাক পেয়ে থাকতেন সেটিই ছিল তখনকার মূল্যবান ট্রান্সিসটার রেডিও।
ক্যাসেট টেপ : একটু আগে যে রিল টু রিল যন্ত্রটির কথা বলেছিলাম, সেটিতে মূলত এই ধরনের ক্যাসেটই রেকর্ড করা হত। আর এর ব্যাপারে নতুন করে বলার কিছু নেই। এমন কোনো টিউনার হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে না যে কি না এই টেপ একবার ভেঙ্গে এর নাড়ী নক্ষত্র পরীক্ষা করেনি।
টেলিগ্রাফ :আজকের টেলেক্স অথবা ফ্যাক্স ম্যাশিনের পথিকৃতই ছিল এই টেলিগ্রাফ যন্ত্র। মিলিটারি, শিপিং অপারেটর এবং সাধারণ মানুষের দ্রত যোগাযোগের ক্ষেত্রে সেই আমলে এটাই ছিল অন্ধের যষ্টি। তবে আজকাল এর দেখা মেলাই ভার।
বিবার্তা/উজ্জ্বল/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]