
ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাশহরগুলোতে পছন্দমতো বাসা খুঁজে পাওয়া চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। সাধ্যের মতো ভাড়া, অফিস থেকে বাসার দূরত্ব, সন্তানদের স্কুলের দূরত্ব-এমন নানা কিছু মিলিয়ে তবে পাওয়া যায় কাঙ্ক্ষিত ভাড়া বাসাটি। পুরো দেশব্যাপী এমনই এক সমস্যার সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছে অনলাইন ওয়েবসাইট ও অ্যাপভিত্তিক প্রচেষ্টা 'দ্য টুলেট'।
ফ্যামিলি বাসা, ব্যাচেলর বাসা, অফিস, হোস্টেল, সাবলেট, মেস অর্থাৎ ভাড়াসংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান মেলে এই টুলেট ডট কম-এ। ২০১৬ সালে অমিত ঘোষ অন্তু কতৃক প্রতিষ্ঠিত এ প্লাটফর্মটির বর্তমান প্রধান কাস্টোমার অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী (সাবেক) আঁখি রানী দাস (তিতলী) এবং টুলেট ডট কম।
মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাসস্থান। নতুন শহরে গিয়ে বাসা খোঁজা অনেকের জন্যই এক চ্যালেঞ্জ। হোক চাকরির প্রয়োজনে, উচ্চশিক্ষার জন্য কিংবা অন্য কোনো কারণে—প্রায় সবাইকেই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এই ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয়। এই সমস্যার সহজ সমাধান দিচ্ছে দ্যা টুলেট, যেখানে অনলাইনে এক ক্লিকেই পাওয়া যাবে পছন্দের বাসা। একইসঙ্গে এটি তৈরি করছে নতুন আয়ের সুযোগ যা আপনাকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করবে।
২০১৬ সালে অমিত ঘোষ অন্তু 'দ্যা টুলেট' প্রতিষ্ঠা করেন, মূলত বাড়ি খোঁজার সমস্যার সমাধান করার লক্ষ্যে। তিনি দেখেছিলেন, শহরাঞ্চলে চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী কিংবা নতুন বাসিন্দাদের জন্য বাসা ভাড়া নেওয়ার প্রক্রিয়া অনেক সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য। তাই, প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি সহজ, নির্ভরযোগ্য এবং দ্রুতগামী সেবা দেওয়ার জন্য তিনি এই প্ল্যাটফর্ম চালু করেন। বর্তমানে এটি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাসা ভাড়া খোঁজার ডিজিটাল মাধ্যম হয়ে উঠেছে।বর্তমানে এটির রেজিস্ট্রার ইউজার রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ, এবং সর্বমোট বাসা ভাড়ার পোস্ট সংখ্যা প্রায় এক লাখের মতন। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় একশত পঞ্চাশ জনের মতো নতুন রেজিস্ট্রার যুক্ত হচ্ছে। এছাড়া, সারা বাংলাদেশে সদ্য তিন মাস আগে চালু হওয়া 'বাসা খুঁজে আয় করুন' ফ্রিল্যান্সার প্রোগ্রামে এখন প্রায় সাড়ে পাঁচশত অধিক এজেন্ট কাজ করছে, যারা বাড়ি ভাড়ার জন্য ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালার সংযোগ ঘটিয়ে উপার্জন করছেন। (https://www.thetolet.com)
দ্যা টুলেট কীভাবে কাজ করে?
THE TOLET একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যা ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে। বাসা ভাড়া খোঁজার ঝামেলা কমায়– অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজেই বাসার তালিকা দেখা যায়। লোকেশন, বাজেট ও সুবিধা অনুযায়ী ফিল্টার– ব্যবহারকারীরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী বাসা খুঁজতে পারেন। দালাল ছাড়াই সরাসরি যোগাযোগ– এতে বাড়তি খরচ কমে এবং লেনদেন হয় স্বচ্ছ ও নিরাপদ।
অনলাইনে বাসা খোঁজার সুবিধা ও দ্যা টুলেট-এর কর্মসংস্থান সৃষ্টি:
THE TOLET শুধু বাসা খোঁজার মাধ্যম নয়, এটি নতুন আয়ের সুযোগ তৈরি করছে। অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বাসা খুঁজে দেওয়ার মাধ্যমে। ফ্রিল্যান্স এজেন্ট হিসেবে কাজ করে ও নিবন্ধিত হয়ে বাসা খোঁজার কাজে যুক্ত হয়ে উপার্জন করা সম্ভব এ অ্যাপের মাধ্যমে। বাড়িওয়ালাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করে যাদের কাছে খালি বাসা আছে, তাদের তথ্য সংগ্রহ করে প্ল্যাটফর্মে যোগ করলেই রয়েছে আয়ের সুযোগ।
কেন THE TOLET ব্যবহার করবেন?
আগে বাসা খোঁজার জন্য ঘুরে বেড়াতে হতো, যা এখন মাত্র কয়েক ক্লিকেই সম্ভব। সহজ এবং দ্রুত বাসা খোঁজার সমাধান দেয় 'দ্যা টুলেট'। বিভিন্ন বাজেট ও লোকেশনের বাসা একই জায়গায় পাওয়া যায়, ফলে তুলনা করা সহজ হয়। দ্যা টুলেট নিশ্চিত করে যে, বাসা ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য যাচাই করা হয়, যাতে প্রতারণার সম্ভাবনা কমে। দালালমুক্ত ও স্বচ্ছ লেনদেন প্রতিষ্ঠা হয়। বিশ্বস্ত ও নিরাপদ প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি টুলেট ডট কম দেয় অতিরিক্ত আয় করার সুযোগও।
ট্যুলেট ফ্রিল্যান্সার মাহি'র কথা :
আমি মোহাম্মদ মাহি, মিরপুরে থাকি।এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছি। পরীক্ষার আগে কিছু সময় ফ্রি থাকায় দ্যা টুলের ডট কম-এ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করি। আমার অভিজ্ঞতা সত্যিই দারুণ ছিল। কাজের পরিবেশ খুবই পজেটিভ এবং পেশাদার ছিল। যেসব কাজ আমাকে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো সময়মতো সম্পন্ন করার পর যথাসময়ে পেমেন্টও পেয়েছি—যা একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের জন্য ভরসা ও প্রেরণার উৎস। এই প্ল্যাটফর্মটি তরুণদের জন্য একটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে, যারা পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু উপার্জন করতে চায়। আমার এসএসসি পরীক্ষা সামনে থাকায় আপাতত কাজ থেকে বিরতি নিয়েছি, তবে পরীক্ষার পর আবার দ্যা টুলের ডট কম-এ কাজ শুরু করবো ইনশাআল্লাহ।
সবশেষে বলবো, যারা নতুনভাবে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েতে কাজ করতে ইচ্ছুক,তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম।
দ্যা টুলেট- নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনা ও আগামীর প্রত্যাশা:
টুলেট ডটকম-এর অমিত ঘোষের টিমে চিফ কাস্টমার অফিসার অফিসার হিসেবে হিসেবে আঁখি রানী দাস তিতলি, কমিউনিটি ম্যানেজার হিসেবে মো. মোস্তাফিজুর রহমান, চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে মো. শাহীন আলম, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপার হিসেবে পঙ্কজ কুমার কাজ করছেন। টুলেট ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিটি রাস্তা এবং বাসার দেয়াল হবে বাসা ভাড়া লিফলেটবিহীন এবং তৈরি হবে হাজার হাজার কর্মসংস্থান-এমনটাই স্বপ্ন দেখেন উদ্যমী তরুণ অমিত ও তাঁর দলের সদস্যরা। এ ছাড়া এখন দ্য টুলেট অ্যাপটির আইওএস সংস্করণের কাজ চলছে। দ্রুত এটি অ্যাপল স্টোরের জন্য প্রকাশ করা হবে।
বিবার্তা/বাপ্পি/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]