বাংলাদেশের আকাশে আজ রাতে দেখা যাবে ‘বাকমুন’
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৩, ১৭:৪৩
বাংলাদেশের আকাশে আজ রাতে দেখা যাবে ‘বাকমুন’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

চাঁদের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য এবং স্বর্গীয় উপস্থিতি প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের আকর্ষণের বিষয়। প্রতি মাসে ভিন্ন ভিন্ন নামে এবং তাৎপর্যে ডাকা হয় চাঁদকে। এমনই একটি আকর্ষণীয় বিষয় হলো জুলাইয়ের ‘বাকমুন’। বিরল এক মহাজাগতিক দৃশ্য অবলোকন করতে পারবে বিশ্ববাসী। মহাজাগতিক নিয়ম মেনে আজ চাঁদ চলে আসবে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি। চাঁদকে দেখা যাবে তার স্বাভাবিক আকৃতি থেকে কয়েকগুণ বড়।


দ্য ওল্ড ফার্মার্স অ্যালম্যানাক অনুসারে, আজ দেখা যাবে বছরের প্রথম সুপারমুন। স্থানীয় আবহাওয়ার অবস্থার উপর নির্ভর করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা সূর্য ডোবার পরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে তাকিয়ে এই স্বর্গীয় ঘটনা দেখতে পাবে।


জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজ চাঁদ ওঠার কিছুক্ষণ পর পরই সুপারমুন দেখার সবচেয়ে সেরা সময়। আজকের সুপারমুনকে ‘পূর্ণ বরফ চাঁদ’ নাম দেয়া হয়েছে। কারন এখন পৃথিবীর বেশিরভাগ অঞ্চলে তুষারপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এমন নামকরন।


এছাড়া এ চাঁদকে স্ট্রোমমুন, হাঙ্গারমুন ও বোনমুনও বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৫৩ মিনিট থেকে দেখা যাবে সুপারমুনকে।


৩ জুলাই, সোমবার রাতের ‘বাকমুন’ বিশ্বজুড়ে দৃশ্যমান হবে। বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ এই দৃশ্য উপভোগ করবে। আজকের পরেও বেশ কয়েক রাত পূর্ণ এই চাঁদ দেখা যাবে। সুপারমুনটি রাতের আকাশে অন্যান্য পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে অধিক উজ্জ্বল ও ৭ শতাংশ বড় দেখাবে।


‘বাকমুন’ কি এবং কীভাবে ঘটে


যখন চাঁদের কক্ষপথ স্বাভাবিকের চেয়ে পৃথিবীর কাছাকাছি আসে, তখন মহাজাগতিক এই দৃশ্যকে সুপারমুন বলা হয়। যখন চাঁদের কক্ষপথ পৃথিবীর নিকটতম হয় এবং একই সময়ে চাঁদ পূর্ণ হয় তখন সুপারমুন ঘটে।


মূলত চাঁদ পৃথিবীকে একটি ডিম্বাকৃতির উপ-বৃত্তে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণের সময় চাঁদ কখনও পৃথিবীর কাছাকাছি, কখনও দূরে সরে যায়।


এই উপ-বৃত্তের সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দুটিকে অ্যাপোজি বলা হয়। পৃথিবী থেকে এর গড় দূরত্ব প্রায় ২ লক্ষ ৫৩ হাজার মাইল দূরে। আর উপ-বৃত্তের নিকটতম বিন্দুকে বলা হয় পেরিজি, যা পৃথিবী থেকে গড়ে প্রায় ২ লক্ষ ২৬ হাজার মাইল দূরে।


যখন পেরিজিতে পূর্ণিমার চাঁদ উপস্থিত হয়, তখন এটি পৃথিবী থেকে সাধারণ পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে কিছুটা উজ্জ্বল এবং বড় দেখায়। আর এই দৃশ্যকেই ‘সুপারমুন’ বলা হয়।


বৈজ্ঞানিক হিসেবে, সুপারমুনগুলো সাধারণ পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে প্রায় ৭ শতাংশ বড় এবং প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল দেখায়।


এদিকে, ৩ জুলাইয়ের পর ২০২৩ সালে আরও তিনটি সুপারমুন দেখা যাবে। তার একটি ১ আগস্ট, এরপর ৩০ আগস্ট এবং শেষ সুপারমুন দেখা যাবে ২৯ সেপ্টেম্বর।


জুলাইয়ের সুপারমুনকে কেন ‘বাকমুন’ বলা হয়


দেশে দেশে পূর্ণিমার চাঁদের নামকরণের ঐতিহ্য রয়েছে। তেমনি নেটিভ আমেরিকান লোককাহিনীতেও উপজাতিরা চাঁদ চক্রগুলো পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রাকৃতিক ঘটনার ওপর ভিত্তি করে চাঁদের নাম নির্ধারণ করে। এই নামগুলো কিছু নির্দিষ্ট সময়কে বোঝাতে, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বোঝাতে এবং কৃষি ও শিকারে সহায়তা করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।


‘বাকমুন’ ধারণাটি নেটিভ আমেরিকান উপজতির ঐতিহ্যে থেকে এসেছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, উত্তর আমেরিকার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে এই চাঁদের নামকরণ করা হয় বিশেষ প্রজাতির পুরুষ হরিণের নামে। এই হরিণ সাধারণত জুলাই মাসে তাদের বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে পৌঁছায়। এ সময়টাতে এরা ‘ভেলভেট’ নামে পরিচিত- যা মূলত নরম চুলে আচ্ছাদিত কিছু বোঝায়।


নেটিভ আমেরিকান উপজাতিরা জীবিকা নির্বাহের জন্য শিকারের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। ‘বাকমুন’ দিয়ে তারা সেই সময়কে নির্দেশ করে- যা শিকারের মরসুম হিসেবে পরিচিত। এই সময়ে (জুলাই মাসে) ব্যাপকভাবে হরিণ শিকার করা যেত।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com