ফোটোনিক চিপ তৈরি করে চমক বাঙালি বিজ্ঞানীর
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:০২
ফোটোনিক চিপ তৈরি করে চমক বাঙালি বিজ্ঞানীর
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করার জন্য চলছে দৌড়। এটি এমন এক কম্পিউটার যা কাজের দিক দিয়ে এযাবৎকালে তৈরিকৃত সকল কম্পিউটারের চেয়েও ক্ষমতাবান। তবে ই-ব্যাঙ্কিং এবং ই-কমার্সের বারোটা বাজতে পারে। কারণ এই কম্পিউটার হ্যাক করা এবং পাসওয়ার্ড জানা খুবই সহজ কাজ হবে।


টেক জগতে কর্তৃত্বকারী বিশ্বের তাবড়-তাবড় দেশ এই দৌড়ে শামিল। সেই দৌড়ে রক্তিম হালদার নামে এক বাঙালি বিজ্ঞানীও রয়েছেন। তাঁর সহযোগী দুই বিজ্ঞানী মাইকেল ক্যুজ এবং হাতাম মাহমুদুল্লাহ। তাঁরা তিনজন তৈরি করেছেন ফোটোনিক চিপ।


পারিপার্শ্বিক প্রতিবন্ধকতা কোয়ান্টাম কম্পিউটারের একটা বড় উপদ্রব। এই চিপ ব্যবহার করলে পারিপার্শ্বিকতার প্রতিবন্ধকতা নিমেষে উধাও। যে কারণে গুগল যে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করেছে সেটা মাইনাস ২৭৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু এই ফোটোনিক চিপে সেটার দরকার নেই।


১৯৩৫ সালে অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানী আরউইন শ্রয়েডিঙ্গার কোয়ান্টাম মেকানিক্স কত অদ্ভুতুড়ে সেটা প্রমাণ করতে গিয়েছিলেন। তিনি কল্পনায় এক পরীক্ষা করেছিলেন।একটা বিড়াল, কিছু তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক, পটাশিয়াম সায়ানাইডের শিশি, হাতুড়ি, একটি বক্সের মধ্যে রাখা হল। যে মুহূর্তে রাসায়নিক তেজস্ক্রিয় হল, সে মুহূর্তে ঘা পড়বে হাতুড়িতে, ছড়াবে পটাশিয়াম সায়ানাইড গ্যাস, মারা যাবে বিড়াল। যেহেতু তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক কখন ভাঙবে বা ভাঙবে না, তা সম্পূর্ণ সম্ভাবনার ব্যাপার, সেহেতু এক ঘণ্টা বক্সের মধ্যে রাসায়নিক ভাঙতেও পারে, না-ভাঙতেও পারে। তার মানে, বেড়ালটা মরতেও পারে, না-ও মরতে পারে।


এক ঘণ্টা বাক্সের ডালা বন্ধ রইল। এর মধ্যে কী অবস্থা? বেচারা বেড়াল মরতেও পারে, না-মরতেও পারে।তার মানে, মরা এবং বাঁচা বেড়াল একটা থেকে দু’টো হয়ে গেল। এক ঘণ্টা বাদে বাক্সের ডালা খুললে আমরা কী দেখব? দুটো বেড়াল নয়, একটাই বেড়াল। দুটোর বদলে একটা বেড়াল কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অনুসারী। কোয়ান্টাম মেকানিক্স বলছে, দেখা মানে রেকর্ডেড ফেনোমেনন। এই জন্যই অ্যালবার্ট আইনস্টাইন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আকাশে না দেখলে চাঁদটা নেই?


কোয়ান্টাম কম্পিউটার একটা বেড়াল থেকে দুটো বেড়াল(মড়া এবং বাঁচা) হয়ে যাওয়ার ব্যাপার। এই জন্যই কোয়ান্টাম কম্পিউটার এত শক্তিশালী। সাধারণ কম্পিউটার যেখানে এক পা এগিয়ে যায়, কোয়ান্টাম কম্পিউটার সেখানে দুই পা এগিয়ে যায়। রক্তিম, মাইকেল ও হাতাম যে চিপ তৈরি করেছেন, তা কাজ করতে পারবে ‘কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট’ মেনে।


‘এনট্যাঙ্গলমেন্ট’ হলো কোয়ান্টামের অপর এক অদ্ভুতুড়ে ব্যাপার। এতোটাই অবিশ্বাস্য যে আইনস্টাইন পর্যন্ত একে বলেছিলেন, ‘দূর থেকে ভুতুড়ে’ প্রভাব। আলোর কণা ফোটন নিয়ে কাজ করায় এতে সুবিধা হয়েছে।


এই চিপ তত ঠান্ডা করতে হয় না। ক্ষুদ্র এবং হালকা বলে সহজেই বয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। ভবিষ্যত কম্পিউটার জগতে এই চিপ নতুন দিশা দেখাবে বলে আশা এই তিন বিজ্ঞানীর।


সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com