
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানবজাতির জন্য সর্বত্তম আদর্শ। একজন মুমিনের ঈমান পূর্ণ হয় তখনই, যখন সে তাকে নিজের প্রাণ, সন্তান ও সব প্রিয় বস্তুর চেয়েও বেশি ভালোবাসে। এই ভালোবাসা মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য, দুনিয়ার শান্তি ও আখেরাতের মুক্তির পথ দেখায়।
ফজিলত-১: রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালোবাসা ঈমানের পূর্ণতার প্রতীক। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালোবাসা ছাড়া কোনো মুসলমানের ঈমান পূর্ণ হয় না। হাদিসে এসেছে, তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা-মাতা, সন্তান এবং সমগ্র মানবজাতির চেয়ে প্রিয় হয়ে যাই। (সহিহ বুখারি, মুসলিম)। অতএব, নবীর প্রতি ভালোবাসা হলো ঈমানের মৌলিক শর্ত। যার অন্তরে এ ভালোবাসা থাকবে না, তার ঈমান কখনো পূর্ণ হবে না।
ফজিলত-২: রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ভালোবাসা অন্তরে শান্তি ও প্রশান্তি আনে। মানুষ যখন রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবনী, চরিত্র ও শিক্ষার কথা চিন্তা করে এবং তাকে ভালোবাসে, তখন তার অন্তরে প্রশান্তি নেমে আসে। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন রহমতের অবতার; তাঁর জীবন মুমিনের হৃদয়ে শান্তির সঞ্চার করে। এই ভালোবাসা মুমিনের অন্তরকে প্রশান্ত করে এবং দুশ্চিন্তা দূর করে।
ফজিলত-৩: রসুলকে ভালোবাসার মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা যায়। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন, বলুন (হে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম): তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমাকে অনুসরণ করো; তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ মাফ করবেন। (সুরা আলে ইমরান: ৩১)। অতএব, রসুলকে ভালোবাসা ও অনুসরণ করার মাধ্যমেই আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যায়।
ফজিলত-৪: রসুলের ভালোবাসা মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য ও রহমতের যোগ্য করে তোলে। যে ব্যক্তি রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালোবাসে, আল্লাহ তাকে তাঁর বিশেষ রহমত ও নৈকট্যের যোগ্য বানিয়ে নেন। এই ভালোবাসা মানুষকে গুনাহ থেকে দূরে রাখে এবং তাকে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের কাতারে স্থান করে দেয়।
ফজিলত-৫: রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালোবাসা জান্নাত লাভের মাধ্যম। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালোবাসা হলো জান্নাতের নিশ্চয়তার অন্যতম পথ। এক সাহাবি নবীজিকে জিজ্ঞেস করলেন, কিয়ামতের দিন মানুষের অবস্থা কী হবে? তিনি জবাবে বললেন, যাকে যে ভালোবাসে, সে তার সাথেই থাকবে। (সহিহ বুখারি, মুসলিম)। অতএব, নবীকে ভালোবাসা মানেই তাঁর সঙ্গ লাভ করা, আর তার সঙ্গ মানেই জান্নাতের মহা নেয়ামত।
ফজিলত-৬: যে রসুলকে ভালোবাসে, সে কিয়ামতের দিন তার সুপারিশ লাভ করবে। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিয়ামতের দিন উম্মতের জন্য মহান সুপারিশ করবেন। যে ব্যক্তি তাকে ভালোবাসে এবং তার সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরে, সে অবশ্যই তাঁর সুপারিশ পাওয়ার যোগ্য হবে।
ফজিলত-৭: রসুলের ভালোবাসা মানুষকে পাপকর্ম থেকে বিরত রাখে। যে হৃদয়ে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রকৃত ভালোবাসা থাকবে, সে কখনো তাঁর শিক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে পাপ কাজ করতে পারবে না। নবীর ভালোবাসা মানুষকে নেক আমলের দিকে উৎসাহিত করে এবং মন্দ কাজ থেকে দূরে রাখে।
ফজিলত-৮: রসুলের ভালোবাসার মাধ্যমে মুমিনদের আমল কবুল হয়। আল্লাহ শুধুমাত্র সেই আমল কবুল করেন, যা তার সন্তুষ্টির জন্য এবং রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। তার প্রতি ভালোবাসা মুমিনকে সুন্নাহ অনুসরণে দৃঢ় করে তোলে, ফলে তাদের আমলগুলো কবুল হয়।
ফজিলত-৯: রসুলকে ভালোবাসা কিয়ামতের ভয়াবহতা থেকে আশ্রয় দেয়। কিয়ামতের দিন যখন মানুষ দিশাহারা হবে, তখন রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ভালোবাসাই হবে মুমিনদের জন্য নিরাপত্তার ঢাল। তার প্রেমে আবদ্ধ উম্মত তাঁর পতাকার নিচে আশ্রয় লাভ করবে।
ফজিলত-১০: রসুলের ভালোবাসা আখেরাতে মুক্তি ও জান্নাতের চিরন্তন সুখ লাভের উপায়। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ভালোবাসাই আখেরাতের মুক্তি ও জান্নাতের অনন্ত সুখের চাবিকাঠি। যে ব্যক্তি তাঁকে ভালোবাসবে এবং তাঁর পথ অনুসরণ করবে, সে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে শান্তি ও সফলতা লাভ করবে।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]