
আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়ে থাকে।
হাদিসে এসেছে, আশুরার রোজা পালনে বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ হয়। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মহররম মাসে রোজা ফরজ ছিল। দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে আশুরার রোজা ঐচ্ছিক হিসাবে বিবেচিত হয়। আশুরার দিন এবং আশুরার আগের দিন (৯ তারিখ) অথবা পরের দিন (১১ তারিখ) মিলিয়ে দুটি রোজা পালনের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) নসিহত করেছেন। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা। এছাড়া কারবালার শোকাবহ ও হৃদয় বিদারক ঘটনাবহুল এ দিনটি বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
৬১ হিজরির এই দিনে ফোরাত নদীর তীরবর্তী কারবালার প্রান্তরে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.)। তিনি হজরত আলী (রা.) ও হজরত ফাতেমার (রা.) পুত্র। হজরত আলীর মৃত্যুর পর খলিফা হন হজরত মুয়াবিয়া (রা.)। জীবদ্দশাতেই তিনি পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকার মনোনীত করেন।
তবে ইয়াজিদের কাছে বায়াত নিতে অস্বীকৃতি জানান ইমাম হোসেন (রা.)। প্রতিবাদে মদিনা ছেড়ে কুফায় হিজরতের জন্য যাত্রা করেন তিনি। পরে কারবালা ময়দানে সঙ্গীদের নিয়ে যাত্রাবিরতি করেন। ইমাম হোসেন (রা.) ও তার অনুসারীদের আটক করে মদিনায় ফিরিয়ে নিতে ইয়াজিদের নির্দেশে উমর ইবনে সাদ বিন আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য কারবালায় প্রবেশ করে।
আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে ইমাম হোসেনের শিবিরে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তারা। পানির অভাবে কাফেলার নারী-শিশুরা তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পড়লেও ইমাম হোসেন আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানান। ১০ মহররম অবরোধের বিরুদ্ধে অসম এক যুদ্ধে ইমাম হোসেন ও তার ৭২ সঙ্গী শহীদ হন। শিমার ইবনে জিলজুশান কণ্ঠদেশে ছুরি চালিয়ে ইমাম হোসেনকে হত্যা করে।
ইসলাম ধর্মমতে, ১০ মহররম আশুরার দিনেই কেয়ামত হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) এই দিনে রোজা রাখতেন।
কারবালার শোকাবহ স্মরণ ছাড়াও মুসলমানদের কাছে ১০ মহররম গুরুত্বপূর্ণ দিন। শিয়া মতাবলম্বীরা ইমাম হোসেনের শোকে এ দিনে মাতম করেন। আজ রাজধানীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তাজিয়া মিছিল হবে।
আশুরা উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, পবিত্র আশুরা জুলুম ও অবিচারের বিপরীতে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় মানবজাতিকে শক্তি ও সাহস জোগাবে। তিনি সমাজে সাম্য, ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসলিম উম্মার ঐক্য, সংহতি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করেন।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]