যেভাবে তৈরি হলো আল-আকসা মসজিদ
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৫৯
যেভাবে তৈরি হলো আল-আকসা মসজিদ
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মুসলমানদের প্রথম কিবলা মসজিদুল আকসা। মসজিদুল হারাম, মসজিদুন নববীর পরই যার স্থান। খ্রিস্টপূর্ব ৯৫৭ সালে এটি প্রথম নির্মাণ হয়। খ্রিস্টপূর্ব ১০০৪ সালে মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। এরপর বিভিন্ন যুগে এর সংস্কার হতে থাকে। মসজিদটি ৩৫ একর জমির ওপর নির্মিত। এই মসজিদটির নির্মাণশৈলী মুসলিম ঐতিহ্যের রাজসাক্ষী।


হযরত আবু জর গিফারি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! দুনিয়াতে প্রথম কোন মসজিদটি নির্মিত হয়েছে? তিনি বলেন, মসজিদুল হারাম। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? প্রতিউত্তরে তিনি বললেন, তারপর হলো মসজিদুল আকসা। এরপর আমি জানতে চাইলাম যে, উভয়ের মধ্যে ব্যবধান কত বছরের? তিনি বললেন চল্লিশ বছরের ব্যবধান। (বুখারি ৩১১৫)


আল-আকসা নির্মাণ সর্বপ্রথম ফেরেশতাদের মাধ্যমে অথবা আদম আ.-এর কোন সন্তানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। হাদিস থেকে জানা যায়, এটি কাবা শরীফ নির্মাণের চল্লিশ বছর পরে নির্মিত হয়। হযরত ইয়াকুব আ. কে আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিলে তিনি তা পুননির্মাণ করেন। তার প্রায় হাজার বছর পরে হযরত দাউদ আ. তার পুনর্নির্মাণ শুরু করেন। হযরত দাউদ আ. নির্মাণ শেষ করতে পারেননি। তার ছেলে হযরত সুলাইমান আ.-এর হাতে তার সংস্কার সমাপ্ত হয়।


পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুসারে হযরত সুলাইমান আ. ছিলেন একজন নবী। প্রতাপশালী বাদশাহ। তার জন্ম আনুমানিক ১০১১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এবং মৃত্যু আনুমানিক ৯৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এবং তার রাজত্বকাল ছিল প্রায় ৯৭০ থেকে ৯৩০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী। তিনি ছিলেন হযরত দাউদ আ.-এর ছেলে। হযরত সুলাইমান আ. আল-আকসা ঘিরে জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন।


আল্লাহ তা‘আলা তাকে নবুয়ত, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও তার পিতার রাজত্বের স্থলাভিষিক্ত করেন। আল্লাহ অন্য কোনো নবীকে দান করেননি এমন কিছু নেয়ামত তাকে দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আমি দাউদের জন্য সুলাইমানকে দান করেছিলাম, সে কতই না উত্তম বান্দা। অবশ্যই সে ছিল আমার প্রতি সদা প্রত্যাবর্তনশীল।’ (সুরা: ছদ, আয়াত ৩০)


হযরত সুলাইমান আ. কে আল্লাহ তা‘আলা জিনকে বশীভুত করার ক্ষমতা দান করেছিলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, 'আর আমি সুলাইমানের অধীন করেছিলাম বাতাস, যা সকালে এক মাসের পথ ও বিকালে এক মাসের পথ অতিক্রম করত। আমি তার জন্যে গলিত তামার এক ঝরণা প্রবাহিত করেছিলাম। কতক জিন তার সামনে কাজ করত তার পালনকর্তার আদেশে। তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করবে, আমি জ্বলন্ত অগ্নির-শাস্তি আস্বাদন করাব। তারা সুলাইমানের ইচ্ছানুযায়ী দুর্গ, ভাস্কর্য, হাউজসদৃশ বৃহদাকার পাত্র ও চুল্লির উপর স্থাপিত বিশাল ডেগ নির্মাণ করত। হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতা সহকারে তোমরা কাজ করে যাও। আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পসংখ্যকই কৃতজ্ঞ।’ (সুরা: সাবা ১২)


অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার অধীন করে দিয়েছিলাম শয়তানদের কতককে (শয়তান জিন বোঝানো হয়েছে), যারা তার জন্য ডুবুরীর কাজ করত। এছাড়া অন্য আরও কাজ করত। আমি তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতাম’। (সুরা: আম্বিয়া ৮২)


পবিত্র কোরআনের আয়াত থেকে বোঝা যায়, জিনদের দিয়ে হযরত সুলাইমান আ. অনেক কাজ করাতেন। জিনেরা সাগরে ডুব দিয়ে তলদেশ থেকে মূল্যবান মণি-মুক্তা, হীরা-জহরত তুলে আনত। ঈমানদার জিনেরা তো সাওয়াবের আশায় হযরত সুলাইমান আ.-এর আনুগত্য করত। দুষ্ট জিনগুলো বেড়ীবদ্ধ অবস্থায় সুলাইমানের আ.-এর ভয়ে কাজ করত। আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে থাকায় এ দুষ্ট জিনরা হযরত সুলাইমান আ.-এর কোন ক্ষতি করতে পারত না। বরং সর্বদা তার হুকুম পালনের জন্য প্রস্তুত থাকত। তাদের মাধ্যমেই আল-আকসা নির্মাণ ও সংস্কার করেন তিনি। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর জিনের মধ্যে কিছুসংখ্যক তার (সুলাইমান আ.) সম্মুখে কাজ করত তার পালনকর্তার (আল্লাহর) আদেশে।’ (সুরা: সাবা, আয়াত ১২)।


জিনদের মাধ্যমে আল-আকসা নির্মাণ
হযরত সুলাইমান আ. আল-আকসার মূল নির্মাণ কাজ শেষ করেন। তারপরও আরও অনেক কাজ রয়ে যায়। এমন সময় হযরত সুলাইমান আ.-এর শেষ সময় চলে আসে। এই কাজগুলো অবাধ্য জিনদের ওপরে ন্যস্ত ছিল। তারা হযরত সুলাইমান আ.-এর ভয়ে কাজ করত। তারা তার মৃত্যু সংবাদ জানতে পারলে কাজ ফেলে রেখে পালিয়ে যাবে। তাই নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আল্লাহর নির্দেশে মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত হয়ে হযরত সুলাইমান আ. তার কাচ নির্মিত মেহরাবে প্রবেশ করেন। যাতে বাইরে থেকে ভেতরের সবকিছু দেখা যায়। তিনি বিধান অনুযায়ী ইবাদতের উদ্দেশ্যে লাঠিতে ভর করে দাঁড়িয়ে গেলেন। যেনো রূহ বেরিয়ে যাবার পরেও লাঠিতে ভর দিয়ে দেহ স্বস্থানে দাঁড়িয়ে থাকে।


আল্লাহর হুকুমে তার দেহ লাঠিতে ভর করে এক বছর দাঁড়িয়ে থাকল। দেহ পচলো না, খসলো না বা পড়ে গেল না। জিনেরা ভয়ে কাছে যায়নি। ফলে তারা হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে কাজ শেষ করে ফেলল। এভাবে কাজ সমাপ্ত হলে আল্লাহর হুকুমে কিছু উই পোকার সাহায্যে লাঠি ভেঙ্গে দেয়া হয়। লাঠি ভেঙ্গে যাওয়ায় হযরত সুলাইমান আ.-এর দেহ মাটিতে পড়ে যায়। এগুলো কোনো বানানো ঘটনা নয়।


আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যখন আমি সুলাইমানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুনপোকাই জিনদেরকে তার মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। হযরত সুলাইমানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। অতঃপর যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, যদি তারা অদৃশ্য বিষয় জানতো, তাহলে তারা (মসজিদ নির্মাণের) এই হাড়ভাঙ্গা খাটুনির আজাবের মধ্যে আবদ্ধ থাকতো না’ (সুরা: সাবা ১৪)


জিনদের মাধ্যমে বায়তুল মুকাদ্দাসের পুনর্নির্মাণ করাতে করাতে তিনি আল্লাহর প্রিয় হয়েছিলেন। হযরত ইয়াকুব আ.বায়তুল মুকাদ্দাস পুনর্নির্মাণ করার প্রায় হাজার বছর পর আল্লাহর আদেশে দাউদ আ.-এর পুনর্নির্মাণ শুরু হয়। এই নির্মাণকাজ শেষ হয় হযরত সুলাইমান আ.-এর আদেশে জিনদের মাধ্যমে


আল-আকসার আয়তন
ঐতিহ্যবাহী এ স্থাপনা ১৪৪ একর ভূমির ওপর আল আকসার কম্পাউন্ড অবস্থিত, যা প্রাচীন জেরুজালেম শহরের ১৬.৬ ভাগের এক ভাগ। আল-আকসা কম্পাউন্ড অর্ধ-আয়তাকার। এর পশ্চিম দিক ৯৪১ মিটার, পূর্ব দিক ৪৬২ মিটার, উত্তর দিক ৩১০ মিটার এবং দক্ষিণ দিক ২৮১ মিটার প্রশস্ত। কম্পাউন্ডের ভেতরে মসজিদুল আকসা ছাড়াও একাধিক ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। সোনালি বর্ণের কুব্বাতুস সাখরা। উমাইয়া খলিফা হযরত আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান ৭২ হিজরিতে এটি নির্মাণ করেন। এর পাশেই কিবলি মসজিদ নির্মাণ করেন খলিফা ওয়ালিদ ইবনে আবদুল মালিক। কিবলি মসজিদ নির্মাণ করতে ১০ বছর (৮৬-৯৬ হি.) সময় লেগেছিল। কুব্বাতুস সাখরা মূল অবয়বে টিকে থাকলেও কিবলি মসজিদ একাধিকবার পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন হয়েছিল। যেমন ১৩০ হিজরি ও ৪২৫ হিজরির ভূমিকম্পের পর আবার সংস্কার করতে হয়েছে।


আল-আকসা কম্পাউন্ডে ছোট-বড় ২০০ স্থাপনা রয়েছে। যার মধ্যে আছে মসজিদ, গম্বুজ, আঙিনা, মিহরাব, মিম্বার, আজানের স্থান, কূপ ইত্যাদি। এসব স্থাপনার মধ্যে কুব্বাতুস সাখরার অবস্থান আল-আকসা কম্পাউন্ডের ঠিক মধ্যখানে। কিবলি মসজিদের অবস্থান সর্বদক্ষিণে। এই মসজিদের সাতটি আঙিনা ও বারান্দা রয়েছে। কম্পাউন্ডের প্রবেশপথ ছয়টি। কম্পাউন্ডের ভেতর ২৫টি সুপেয় পানির কূপ। রয়েছে বেশ কয়েকটি পানির ফোয়ারা। পাথর আচ্ছাদিত কায়েতবাই ফোয়ারাটিই সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন। আরো আছে ৪০টি উঁচু আসন। যেখানে বসে প্রাজ্ঞ আলেমরা ধর্মীয় জ্ঞানের পাঠদান করে থাকেন। এসব স্থাপনা বিভিন্ন শাসনামলে নির্মিত।


মুসলমানদের ফিলিস্তিন বিজয়


১৫ হিজরি মোতাবেক ৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম বাহিনী ফিলিস্তিন ভূমি জয় করেন এবং আল-আকসা তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন হয়। বিজয়ের পর খলিফা হযরত ওমর রা. ফিলিস্তিন সফর করেন। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন হযরত আবু উবাইদা আমের ইবনুল জাররাহ, সাআদ বিন আবি ওয়াক্কাস, খালিদ বিন ওয়ালিদ ও আবু জর গিফারি রা.-সহ সাহাবিদের একটি দল। হজরত ওমর রা. একটি সন্ধিচুক্তির অধীনে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে আল-আকসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে পবিত্র পাথর ও আল আকসার আঙিনা পরিষ্কার করেন। তিনি আল আকসা মসজিদের দক্ষিণে ছোট একটি মসজিদ নির্মাণ করেন।


মুসলিম শাসনামলে আল-আকসার ইতিহাস


খোলাফায়ে রাশেদার পর উমাইয়া শাসনের সূচনা হয়। উমাইয়া শাসকদের রাজধানী ছিল দামেস্ক। দামেস্ক ফিলিস্তিনের কাছাকাছি হওয়ায় উমাইয়া খলিফারা আল-আকসাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। তাঁদের সময়ে আল-আকসার মৌলিক অবকাঠামোগত বহু উন্নয়ন হয়। উমাইয়াদের পর আব্বাসীয় খলিফাদের শাসনাধীন হয় আল-আকসা। কিন্তু তাদের রাজধানী বাগদাদ হওয়ায় মসজিদুল আকসার ব্যাপারে তাদের মনোযোগ অনেকটাই কম ছিল। তবে তারা প্রয়োজনীয় সংস্কার ও স্থানীয় ধর্মীয় কর্মকাণ্ডগুলোতে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।


৯৭০ খ্রিস্টাব্দে রামাল্লার যুদ্ধে আব্বাসীয় বাহিনী মিসরে ফাতেমি বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়। এর মাধ্যমেই ফিলিস্তিন ভূমির পতন শুরু হয়। ফাতেমিরা ছিল শিয়া ইসমাইলিয়া মতবাদের অনুসারী। যাদের বেশির ভাগ আলেম মুসলিম মনে করেন না। ফাতেমীয় শাসকরা মসজিদুল আকসার ওপর নানা ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করে এবং ফিলিস্তিন ভূমিতে ইসলামী শিক্ষাধারা বন্ধ করে শিয়া মতবাদ প্রচারের সুযোগ করে দেন। ফাতেমীয় শাসক হাকিমের শাসনামলের শেষভাগে ১০২১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ আল-কুদস ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চায় তার অতীত ঐতিহ্যের সবটুকু হারিয়ে ফেলে।


১০৭৩ খ্রিস্টাব্দে ফিলিস্তিন সেলজুকদের শাসনাধীন হয়। তারা ছিল সুন্নি মতবাদে বিশ্বাসী। ফলে আল-আকসা তার হারানো মর্যাদা ফিরে পেতে শুরু করে এবং ফিলিস্তিনে আবারও বিশুদ্ধ ইসলামী জ্ঞানের চর্চা শুরু হয়। ধারণা করা হয়, ১০৯৫ খ্রিস্টাব্দে আল আকসায় ইমাম গাজালি রহ.-এর আগমন ঘটে এবং তিনি কয়েক বছর অবস্থান করেন। কিন্তু এই সুদিন দীর্ঘস্থায়ী হলো না। ১০৯৯ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা আল আকসা দখল করে। তারা মসজিদুল আকসাসহ ইসলামী ঐতিহ্যগুলো ধ্বংস করতে তৎপর হয়।


ক্রুসেডারদের হাত থেকে আল-আকসা উদ্ধার
১১৮০ খ্রিস্টাব্দে মিসরের শাসক সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবি রহ. ক্রুসেডারদের হাত থেকে ফিলিস্তিন ভূমি মুক্ত করেন। বিজয়ের এক সপ্তাহের মধ্যে মসজিদুল আকসা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। পরবর্তী জুমা থেকে সেখানে নামাজ শুরু হয়। তিনি নিজ হাতে গোলাপজল দিয়ে আল-আকসা মসজিদ পরিষ্কার করেন। তিনি বিজয়ের প্রতীক হিসেবে একটি মিম্বার তৈরি করেন এবং এ ছাড়া আল-আকসা কম্পাউন্ডের ভেতর একাধিক শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন।


হযরত সালাহুদ্দিন আইয়ুবি ও তাঁর বংশধররা ক্রুসেডারদের একাধিক আক্রমণ থেকে ফিলিস্তিন ভূমিকে রক্ষা করেছিল। মামলুকরা আইয়ুবীয়দের উত্তরাধিকারী হলে তারা আল-আকসার নিরাপত্তায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দে ফিলিস্তিন ভূমি উসমানীয় শাসকদের নিয়ন্ত্রণে আসে, যা ১৯১৭ সাল পর্যন্ত অটুট ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের পরাজয়ের মাধ্যমে পবিত্র এই ভূমির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ব্রিটেনের হাতে।


ইহুদিদের দখলে আল-আকসা


১৯৬৭ সালে তৃতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইলিরা জয়ী হওয়ার পর থেকে আল-আকসা তাদের দখলে রয়েছে। এখন পর্যন্ত ইহুদিদের হাতে মুসলিমদের পবিত্র ভূমি আল-আকসা। ২০০৩ সালে জেরুজালেমে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের আল-আকসায় প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরাইল। এরপর থেকে সংকট আরও গভীর হতে থাকে। বিভিন্ন সময় ইহুদিরা মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে নিরীহ মুসল্লিদের ওপর হামলা চালানো শুরু করে। এ পর্যন্ত মুসলিমদের ওপর নির্যাতন চলেই আসছে।


বর্তমান যুদ্ধ ও সহিংসতা
এ নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালালে এক রক্তক্ষয়ী অধ্যায় সূচিত হয়। ইতিহাসে এ সংঘাত ভিন্নভাবে লেখা থাকবে। ইসরাইলি বিমান বাহিনীর গত ২১ দিনের বোমাবর্ষণে গাজায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি ও তাদের মধ্যে প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার উপত্যকার ১৫০টি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। এ শিবিরগুলো পরিচালনা করে আনরোয়া।


এ সহিংসতায় এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭ হাজারের মতো সাধারণ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ১ হাজার ৪০০ জনের মতো ইসরাইলি নিহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে গাজা শহরে বোমাবর্ষণ চলছে। নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com