ফিরে এলেন মহানায়ক; পূর্ণতা পেলো বিজয়
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৫৭
ফিরে এলেন মহানায়ক; পূর্ণতা পেলো বিজয়
কাজী সালমা সুলতানা
প্রিন্ট অ-অ+

১০ জানুয়ারি (সোমবার), ১৯৭২। স্বদেশে ফিরলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান— তাঁর স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশে।


১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত হয়, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লিখিতভাবে এ আত্মসমর্পণের ঘটনা ঘটে। হাজার হাজার মুক্তিপাগল বাঙালির সামনেই দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রধান জেনারেল নিয়াজি। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী মিলে গঠিত যৌথ বাহিনীর পক্ষে দলিলে স্বাক্ষর করেন জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম আর লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ’।


পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ— সেদিন বাঙালির জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু তা বিজয়ের আনন্দে ভাসাতে পারেনি বাংলার মানুষকে। একদিকে ঘরে ঘরে স্বজন হারানোর বেদনা, অন্যদিকে এই বিজয়ের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু তখনও পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। তাই বিজয়ের আনন্দে অপূর্ণতা থেকে যায়। ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়। প্রায় পাঁচ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারায়। এদিকে বাংলার নেতা তখনও পাকিস্তানের কারগারে, কেমন আছেন তাঁর খবরও পাওয়া যাচ্ছে না।


অবশেষে সব প্রতিকূলতার অবসান ঘটে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৯ জানুয়ারি পাকিস্তান থেকে লন্ডন পৌঁছালে বাঙালি জানতে পারে তাদের নেতা মুক্ত। তাদের নেতা আসছেন স্বদেশে। তাদের নেতা আসছেন তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে। এর চেয়ে আর আনন্দের সংবাদ আর কী হতে পারে! তাই গোটা জাতি উদ্বেলিত হয়ে ছিল কখন নেতা আসবেন—


৮ জানুয়ারি ১৯৭২, বাঙালি জানতে পারে তাদের নেতা মুক্তি পেয়েছেন। তাঁকে লন্ডনে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। দেশে ফেরার খবর শুনে অনেক নারী-পুরুষ রোজা রাখে, নেতা যেন সুস্থভাবে দেশে ফিরে আসেন। অনেক মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।


সেদিনই বাঙালির প্রাণপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগার থেকে মুক্তি পান। সেই মুক্তিও স্বাভাবিক কোনো ঘটনা ছিল না। পাকিস্তানের মিয়াওয়ালি কারাগারে বঙ্গবন্ধুর বিচার চলছে। তার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ। এর মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগও আছে। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। জেনারেল ইয়াহিয়া খানও চাচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিতে ঝোলাতে; কিন্তু বিধি বাম। এরই মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যায়। আর এর সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানে ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন হয় এবং সেই আন্দোলনে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয় সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে। নতুন প্রেসিডেন্ট হন জুলফিকার আলী ভুট্টো। তখনও বঙ্গবন্ধু জানতে পারেননি যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেছে।


১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে অর্থাৎ ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর ৯ মাস তাঁকে থাকতে হয় পাকিস্তানের বিভিন্ন কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে। এ সময় প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গুনতে হয় তাঁকে।


৮ জানুয়ারি ১৯৭২, জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে একটি বিশ্রামাগারে নিয়ে যান। তখনও বঙ্গবন্ধু জানতেন না, বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম। আলাপের একপর্যায়ে ভুট্টো বলেন, পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে একটি বন্ধন রাখা যায় না? ভুট্টোর এই কথার কারণ বুঝতে না পেরে অত্যন্ত দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমার দেশের মানুষের সঙ্গে কথা না বলে আমি কিছু বলতে পারছি না।


সেখান থেকেই পিআইএ’র একটি বিশেষ বিমানে বঙ্গবন্ধুকে লন্ডন পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেদিন সকাল ৭টায় বিবিসির ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে প্রচারিত খবরে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বিমানযোগে লন্ডনে আসছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।’


সকাল ৮টার মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে ব্রিটিশ সরকারের সম্মানিত অতিথি হিসেবে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ক্যারিজেস হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা (পরে প্রধানমন্ত্রী) হ্যারল্ড উইলসন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসে বলেন, ‘গুড মর্নিং, মি. প্রেসিডেন্ট।’ বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতির কথা জেনে হাজার হাজার বাঙালি হোটেল ঘিরে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে আকাশ-বাতাস মুখরিত করেন।


দুপুরের দিকে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এক মুহূর্তের জন্য আমি বাংলাদেশের কথা ভুলিনি। আমি জানতাম ওরা আমাকে হত্যা করবে, আমি আপনাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবো না; কিন্তু আমার জনগণ মুক্তি অর্জন করবে।’
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সকাল থেকেই তেজগাঁও বিমানবন্দরের রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে ছিল সারিবদ্ধ মানুষ। বিমানবন্দর ও রাস্তার দু’পাশে অপেক্ষমাণ জনতা বাঙালির মহান নেতা আসছেন।


লাখো মানুষের ভিড়ে রাজপথ পরিপূর্ণ; তাদের কণ্ঠে— ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ। বঙ্গবন্ধু এলেন। যে দেশ এবং যে স্বাধীনতার জন্য জীবনবাজি রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সেই মাটিতে পা দিয়েই তিনি আবেগে কেঁদে ফেলেন। বিমানবন্দরে অস্থায়ী সরকারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সবাই অশ্রুসজল হয়ে বরণ করেন ইতিহাসের এই মহানায়ককে।


তেজগাঁও বিমানবন্দরে বঙ্গন্ধুকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করার পর খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে জনসমুদ্রের ভেতর দিয়ে রেসকোর্স ময়দানে এসে পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। সেদিনকার রেসকোর্স ময়দান ছিল মানুষের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ।


বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১৭ মিনিট জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে ডাক দিলেন দেশ গড়ার সংগ্রামে। রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত মন্ত্রমুগ্ধ জনতা দু’হাত তুলে সেই সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।


মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহিদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেদিন বঙ্গবন্ধু ভাষণের শুরুতে বলেন, ‘স্মরণ করি আমার বাংলাদেশের ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, বুদ্ধিজীবী, সিপাই, পুলিশ, জনগণকে; হিন্দু-মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের আত্মার মঙ্গল কামনা করে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমি আপনাদের কাছে দুই-একটা কথা বলতে চাই।’


তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম— ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়; আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেটভরে ভাত না পায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না, যদি আমার বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না, যদি এ দেশের মানুষ, যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে, তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।’


দেশের উন্নয়নের জন্য তিনি ডাক দিলেন এভাবে— ‘যথেষ্ট কাজ পড়ে রয়েছে। আপনারা জানেন, আমি সমস্ত জনগণকে চাই, যেখানে রাস্তা ভেঙে গেছে, নিজেরা রাস্তা করতে শুরু করে দেও। আমি চাই জমিতে যাও, ধান বোনাও, কর্মচারীদের বলে দেবার চাই, একজন ঘুষ খাবেন না, আমি ক্ষমা করব না।’


ভাষণে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “বিশ্বকবি তুমি বলেছিলে, ‘সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তুমি দেখে যাও, তোমার আক্ষেপকে আমরা মোচন করেছি। তোমার কথা মিথ্যা প্রমাণিত করে আজ সাত কোটি বাঙালি যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছে। হে বিশ্বকবি, তুমি আজ জীবিত থাকলে বাঙালির বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে নতুন কবিতা সৃষ্টি করতে।”


ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোঁড়া হয়েছিল। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যু এসে থাকে যদি, আমি হাসতে হাসতে যাবো। আমার বাঙালি জাতিকে অপমান করে যাবো না। তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইব না এবং যাবার সময় বলে যাবো, জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।’


বাঙালি জাতির প্রতি অবিচল আস্থা ছিল তাঁর। স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে সেদিন বলেছিলেন, ‘এই বাংলাদেশে হবে সমাজতন্ত্র ব্যবস্থা, এই বাংলাদেশে হবে গণতন্ত্র, এই বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।’


বঙ্গবন্ধু দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, ‘যারা জানতে চান আমি বলে দেবার চাই, আসার সময় দিল্লিতে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে যে সময় আলোচনা হয়েছে। আমি আপনাদের বলতে পারি, আমি জানি তাকে। তাকে আমি শ্রদ্ধা করি। সে পণ্ডিত নেহেরুর কন্যা, সে মতিলাল নেহেরুর ছেলের মেয়ে। তারা রাজনীতি করছে। ত্যাগ করছে। তারা আজকে সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। যেদিন আমি বলব, সেই দিন ভারতের সৈন্য বাংলার মাটি ছেড়ে চলে যাবে এবং আস্তে আস্তে কিছু সৈন্য সরায়ে নিচ্ছে।’ পরে ১৭ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের সৈন্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মিত্রবাহিনী নিজ দেশে ফিরে যায়।


তিনি জনগণকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি দেখায়া দেবার চাই দুনিয়ার কাছে শান্তিপূর্ণ বাঙালি রক্ত দিতে জানে, শান্তিপূর্ণ বাঙালি শান্তি বজায় রাখতেও জানে।’


মহান মুক্তিযুদ্ধে বহির্বিশ্বের সমর্থনকে অকুণ্ঠ চিত্তে তিনি স্বীকার করেন এ ভাষণে। পাশাপাশি তিনি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানান ভারত সরকার, সে দেশের জনগণ ও সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। কৃতজ্ঞতা জানান ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নকে। আবার বঙ্গবন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
যুদ্ধাপরাধীদের গণবিরোধী ভূমিকা পালন করায় অনেক সহিংস ঘটনা ঘটে। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু সর্তকবাণী উচ্চারণ করেন, ‘আজ আমার কারও বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা নেই, একটা মানুষকে তোমরা কিছু বলো না, অন্যায় যে করেছে তাকে সাজা দেবো। আইনশৃঙ্খলা তোমাদের হাতে নিও না।’


১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হলেও বাঙালির বিজয়ের পূর্ণতার দিন ১০ জানুয়ারি। এদিনই বাঙালি জাতি তাদের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিজেদের মাঝে পায়, পায় বিজয়েরপূর্ণআনন্দ।


লেখক: তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com