১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে ক্ষুদ্র এক ইংরেজ বেনিয়া গোষ্ঠীর সাথে এ দেশীয় আরেকটি দালাল চক্র নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার বিশাল নিস্ক্রিয় বাহিনীকে পরাজয়ের মাধ্যমে শুরু হয় এ দেশীয় দেশপ্রেমিক মানুষের ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। এ পরাজয় শুধুমাত্র একটি বাহিনীর ছিল না, কিংবা সিরাজ-উদ-দৌলার ছিল না; এটা ছিল বিশাল ভারত বর্ষে দীর্ঘকালের ন্যায় পরায়ণ শান্তিপূর্ণ মুসলিম শাসন অবসানের যাত্রা। দেশীয় দালাল ও বিশেষ এক উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্ররোচনায় ও সহযোগিতায় এক পর্যায়ে ভারতীয় উপমহাদেশ ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয় ও লুপ্ত হয় হাজার বছরের স্বাধীনতা। ১৯৩ বছরের দীর্ঘ সময়ের অপশাসন, কুশাসন, শোষণ, নির্যাতনের যাতাকলে নিষ্পেষিত মুসলমানরা দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়ে। প্রতিটি পদে পদে তারা ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিণত হয়।
১৯৪৭ সালে হিন্দুদের তুলনায় অতিশয় দুর্বল মুসলিম জনগোষ্ঠী দেশ বিভাগের কঠিন যুক্তি তর্কে কুলিয়ে উঠতে না পেরে ও ইংরেজদের পক্ষপাতিত্বের কারণে নিজেদের পাওনা হিসেবে চাপিয়ে দেয় বৃহত্তর ভারতের দুই প্রান্তে দু’টি ক্ষুদ্র এলাকাকে নিয়ে পাকিস্তান নামক মুসলিম রাষ্ট্র। বিশাল ভারতবর্ষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য মুসলিম জনপদ হারিয়ে যায় ষড়যন্ত্রের গভীর অস্তাচলে।
এরপর শুরু হয় ভারত বেষ্টিত এ ক্ষুদ্র বাংলার বা পূর্ব পাকিস্তানের আরেক এপিসড। শুরু হয় সদ্য জন্ম নেয়া অতিশয় দুর্বল এ শিশু দেশটির উপর নানা ধরণের ভাইরাসের আক্রমণ। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুর, নির্মম, নৃশংস আক্রমণকে প্রতিহত করে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে আমরা প্রতিষ্ঠা করি লাল সবুজ পতাকার নতুন একটি দেশ। দেশটি প্রতিষ্ঠালগ্নে অনেক স্বপ্ন ও আশা নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে যা লিখা হয় তা ছিল, “যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর তাদের কার্যকর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে; সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন সে ম্যান্ডেট মোতাবেক আমরা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারস্পরিক আলাপ- আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র ঘোষণা করছি।”
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো তেপান্ন বছর পেরিয়ে গেলেও ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’ প্রতিষ্ঠা তো দূরের কথা আমরা এখন আত্মঘাতি খেলায় মত্ত হয়ে দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। তাই আজকের এ সেমিনারে আমরা আলোচনা করবো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কি ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি। তবে, এই চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করে একটি সুন্দর ও ন্যায়বিচারপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য কিছু করণীয়ও রয়েছে। আসুন, আমরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অন্তরায় ও করণীয় বিষয়ে আলোচনা করি। এই অন্তরায়গুলো বিভিন্ন রূপে থাকতে পারে বা সমাজে বিভিন্নভাবে প্রতিফলিত হতে পারে। নীচে কিছু প্রধান অন্তরায় তুলে ধরা হল:
জাতীয় কোর ভেল্যু বা আদর্শ নির্ধারনে ব্যর্থতা (Absence of National Core Value): জাতীয় কোর ভ্যালু একটি দেশের জন্য হৃদপিন্ডের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি দেশের নাগরিকদের মধ্যে একতা, নৈতিকতা এবং দায়িত্বশীলতার ধারণা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। জাতীয় কোর ভ্যালুর গুরুত্ব নিম্নরূপ:
- সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ: কোর ভ্যালুগুলি একটি জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ইতিহাসকে সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে। এটি জাতীয় পরিচয় এবং গৌরব বৃদ্ধি করে।
- নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা: কোর ভ্যালুগুলি নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ গড়ে তোলে যা সমাজের সব স্তরে ইতিবাচক আচরণের প্রচলন ঘটায়।
- একতা ও সংহতি বৃদ্ধি: কোর ভ্যালুগুলি সমাজে একতা ও সংহতির ভিত্তি তৈরি করে। এটি সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সহায়ক।
- নাগরিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা: কোর ভ্যালুগুলি নাগরিকদের দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতে সাহায্য করে, যা রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য অপরিহার্য।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নত করা: জাতীয় কোর ভ্যালুগুলি একটি দেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে। এটি দেশের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে। স্বাধীনতার পর আমাদের কোন সুনির্দিষ্ট পররাষ্ট্রনীতি তৈরি করা হয়নি। ফলে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সরকারি দল নিজের দলীয় স্বার্থ রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন দেশকে খুশি করার নীতি অবলম্বন করে।
- নেতৃত্বের উন্নয়ন: কোর ভ্যালুগুলি ভবিষ্যৎ নেতাদের মধ্যে সঠিক মূল্যবোধ এবং আদর্শ গড়ে তুলতে সহায়ক হয়, যা দেশের স্থায়ী উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জাতীয় কোর ভ্যালু দেশের শিক্ষা, পরিবার, সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি নীতিমালার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত, যাতে প্রতিটি নাগরিক এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে সঠিকভাবে তা পালন করতে পারে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, তেপান্ন বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা দেশের কোর ভ্যালু নির্দিষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছি।
সর্বগ্রাসী মিথ্যার ভয়াবহ ছড়াছড়ি: মিথ্যা হলো সকল অন্যায় ও পাপাচারের উৎসস্থল। বাংলাদেশের সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যা হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন পদ পর্যন্ত অধিকাংশ ব্যক্তিবর্গ সারাক্ষণ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে।
সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব: দেশে যোগ্য ও সৎ নেতৃত্ব বিকশিত হচ্ছে না। কারণ, অসৎ নেতৃত্ব সৎ নেতৃত্ব বিকাশের প্রধান অন্তরায়। এ ভাবে দেশকে পরিকল্পিত ভাবে নেতৃত্বশূন্য করা হচ্ছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন ভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে, যার মাধ্যমে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। ছাত্র রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নে সৎ নেতৃত্ব ধ্বংস হওয়ার শেষ পর্যায়ে।
সর্বগ্রাসী দুর্নীতি: দেশটা এখন কিছু সংখ্যক অমানুষের কাছে লোভনীয় মাংসের টুকরোতে পরিণত হয়েছে। যে যেভাবে পারছে সে সেভাবে খাচ্ছে। মাঝখানে জনগণ হচ্ছে নিঃস্ব, শোষিত ও বঞ্চিত। সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি সাম্য, সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে বড় বাঁধা সৃষ্টি করে। দুর্নীতি সমাজের নিচের স্তর থেকে উপরের স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান থাকলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
দেশে এখন সর্বব্যাপী দুর্নীতি, ব্যাংক খাত নিয়ন্ত্রণহীন ও অরক্ষিত। প্রশাসনের সব স্তর জবাবদিহিতার অভাব, অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ভরা। এর ফলে সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ের বদলে হচ্ছে ব্যাপক অপচয়। বিপুল ঋণ করে তৈরি করা হচ্ছে বাজেট। এ পরিস্থিতিতে বাজেট একটি ঋণের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে। দুর্নীতি এখন একটা প্রাতিষ্ঠানিক চরিত্রে রূপ নিয়েছে। দেশে এখন বিজনেসের নতুন মডেল হয়েছে আর তা হচ্ছে ঋণখেলাপি মডেল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ব্যাংক খাতে বিশৃঙ্খলা এমন পর্যায়ে এসে পড়েছে যে, অর্থনীতির সবচেয়ে সংবেদনশীল জায়গায়টি এখন নিয়ন্ত্রণহীন ও অরক্ষিত অবস্থায়। বিনিয়োগের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ এখনো করতে পারিনি। অর্থনীতিতে যে আস্থার পরিবেশ সেটা তো তৈরিই হয়নি বরং প্রশাসনের সব স্তরে জবাবদিহিতার অভাব, অনিয়ম ও দুর্নীতির ফলে সরকারি ব্যয়সাশ্রয়ের বদলে হচ্ছে ব্যাপক অপচয়।
কৃষি শিল্প ধ্বংসের সম্মুখীন: কৃষি নির্ভর বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য শুরু হয় পানি আগ্রাসন। চালু করা হয় ‘ফারাক্কা বাঁধ’ নামক এক মরণফাঁদ। যার প্রভাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। শুরু হয়েছে মেরুকরণ প্রক্রিয়া। এর ফলে কৃষি শিল্প মারাত্মক ধ্বংসের পথে এবং খাদ্য-দ্রব্য মূল্য সাধারণ জনগণের সাধ্যের বাইরে।
মূল্যবোধহীন শিক্ষা ব্যবস্থা : শিক্ষার অভাব মানুষকে সচেতন হতে বাধা দেয়। অশিক্ষিত জনগণ সহজেই বিভ্রান্তিতে পড়ে এবং নিজেদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে। এজন্যই শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের মাধ্যমে জাতিকে মেরুদন্ডহীন করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন।
স্বার্থান্বেষী রাজনীতি: রাজনীতিকদের ব্যক্তিগত স্বার্থ, ক্ষমতা লিপ্সা ও দলীয় স্বার্থ গণতন্ত্র, সাম্য ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পথে বড় অন্তরায় হয়ে জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছে।
অধিকার হরণ: সমাজের প্রান্তিক ও দুর্বল জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিত ভাবে অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে। এই ধরনের বৈষম্য গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।
অর্থনৈতিক বৈষম্য: ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক সমতা না থাকার কারণেই সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা হয়নি।
অসামাজিক কার্যকলাপ: অপসংস্কৃতি, অশ্লীলতা, মাদকাসক্তি, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি সমাজে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে এবং গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে ফেলেছে।
আইনের শাসনের অভাব: আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের সঠিক প্রয়োগ জরুরি। কিন্তু আইনের শাসনের অভাবে সামাজিক ন্যায়বিচার ধ্বংসের সম্মুখীন।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভাব: মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না থাকার কারণে গণতন্ত্রের প্রকৃত চর্চা করা সম্ভব হচ্ছে না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণের মাধ্যমে মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব হয়েছে।
প্রযুক্তিগত ও ডিজিটাল বিভাজন: ডিজিটাল বিভাজন বা প্রযুক্তিগত সুবিধার সমতা না থাকলে সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং উন্নয়ন সম্ভব হয় না, যা বর্তমানে বিরাজমান।
ইহুদী ও সাম্রাজ্যবাদীদের চক্রান্ত: এই চক্র জনপ্রিয় শাসককে ক্ষমতাসীন হতে দেয় না, বা ক্ষমতায় থাকতে দেয় না। পৃথিবীর অনেক দেশেই তারা সংখ্যালগুদের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করে ও টিকিয়ে রাখার জন্য সকল অনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে। ভারতীয় উপমহাদেশেও ইহুদীবাদের অনুসারী ব্রাম্মন্যবাদীরা একই পন্থা অনুসরণ করে সংখ্যাগুরুর উপর সংখ্যালগুর অপশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। ভারত, বাংলাদেশ, ইয়েমেন প্রভৃতি দেশ এর উদাহরণ। তারা নীতি-নৈতিকতাহীন, মেরুদন্ডবিহীন দুর্বৃত্বদের গনতন্ত্রের মোড়কে পৃথিবীর দেশে দেশে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠা করার কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।
প্রতিবেশি দেশের সুপরিকল্পিত চক্রান্ত: ভারত অবশ্যম্ভাবীভাবে তার আধিপত্য বিস্তার করছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত হবে সব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র। ছোট জাতি-রাষ্ট্রগুলোর সর্বনাশ ঘটবে। তারা সাংস্কৃতিকভাবে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে থাকবে, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন থাকবে না। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, অর্থনৈতিক আগ্রাসন, পানি আগ্রাসন, বোমাবাজি, তথ্য সন্ত্রাস ও নির্বিচারে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যাসহ সর্বগ্রাসী ভারত তার আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সুজলা-সুফলা, শষ্য-শ্যামলা ছোট্ট এ দেশটি আজ সত্যিই প্রতিবেশী দেশের গভীর ষড়যন্ত্রের জালে আবদ্ধ।
সঠিক ইতিহাস বিকৃত করা: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে দেশের আপামর জনগণ দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী কঠিন এক যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলেও বিশেষ এক গোষ্ঠি ক্ষমতায় থাকার আনুকূল্য পাবার লক্ষ্যে স্বাধীনতা যুদ্ধের কৃতিত্বকে ভারতের হাতে তুলে দিতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করছে না; যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও দেশের সামরিক বাহিনীর কঠিন ত্যাগের অবমূল্যায়ণ বৈকি! তাছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্য পুস্তকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ও আমাদের মুসলিম জাতিসত্তাকে বিকৃত ভাবে উপস্থাপণ করে বর্তমানে প্রজন্মকে ব্রেইন ওয়াস করা হয়েছে।
জন সচেতনতার অভাব: দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দেশের অধিকাংশ জনগন সচেতন নন। ফলে দেশি-বিদেশী নানামুখী আগ্রাসনে দেশ নিপতিত হলেও নানা ধরণের গুজব ছড়িয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন: দেশটিকে সম্পূর্ণরূপে পঙ্গু করার জন্য শুরু থেকেই ভারত গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিশেষ করে সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। কোন জাতির স্বকীয়তা, জাতীয়তা, সামাজিক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ তার সংস্কৃতির উপর নির্ভর করে। যদি নিজেদের সাংস্কৃতিক ভিত মজবুত ও উন্নত এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত হয়, তাহলে এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা খুব কঠিন কাজ নয়। প্রয়োজন শুধু দৃঢ় মানসিকতা আর সংঘবদ্ধ শক্তিমত্তা।
ডিইসলামাইজেসন: এ দেশের সংখ্যাগুরু নাগরিকের জীবন বিধান ইসলামী মূল্যবোধকে ধ্বংস করার সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইসলামী মূল্যবোধকে দেশের শত্রুরা সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে গন্য করে। তাই তারা এ ধর্মীয় মূল্যবোধকে হেয় প্রতিপন্ন করার হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে সকল প্রকার ম্যাকানিজম ব্যবহার করেছে।
নৈতিক অবক্ষয় ও মাদকের প্রভাব: প্রতিবেশী দেশটির সীমান্ত ঘিরে হাজার হাজার ফেন্সিডিল তৈরীর কারখানা স্থাপিত হয়েছে, যার একমাত্র উদ্দেশ্য বাংলাদেশের কোমলমতি তরুণ-তরুনীদের নেশাগ্রস্ত করে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেওয়া; যাতে বাংলাদেশ যোগ্য নেতৃত্বশূন্য হয়ে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
ফ্যাসিবাদি শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণকে বিভক্ত করা: দেশে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’ প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায় হলো ফ্যাসিবাদি শাসন ব্যবস্থা। নানাবিধ পন্থায় বৃহত্তর জনগোষ্টিকে অবহেলা করে বহুবিধ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে একটি বিশেষ দলের, বিশেষ মতের, বিশেষ আদর্শের সদস্যদের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করা হয়েছে। ফলে বয়োজ্যেষ্ট সম্মানীত মানুষগুলো হয়ে পড়েছে একেবারে কোনঠাসা; এতে আমাদের সামাজিক ঐতিহ্য একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে।
এ ছাড়াও আরো কিছু অন্তরায় বিদ্যমান, যা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
১। ১৯৭১-২০২০ এর মধ্যে সৎ যোগ্য জ্ঞানী শ্রেণীকে পরিকল্পিত ভাবে সামাজিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২। আঞ্চলিকীকরন, আত্মীয়করন, দলীয় পদ বিক্রি, নমিনেশন বিক্রি, মন্ত্রীত্ব বিক্রির মাধ্যমে নিষ্ঠাবান অভিজ্ঞ রাজনীতিকদের বাদ দিয়ে তার স্থানে বৈধ-অবৈধ ব্যবসায়ীদেরকে রাজনীতিতে আনা হয়েছে।
৩। সাম্রাজ্যবাদের এজেন্ডা মোতাবেক বিরোধীদলীয় মেধাবী নেতৃবৃন্দকে গুম, খুন, হামলা-মামলার মাধ্যমে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার কারনে নেতৃত্বশূন্যতা দেখা দিয়েছে।
৪। ভোটারবিহীন ও চক্রান্তমূলক সাজানো নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করার কারনে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে যোগ্য নেতা নির্বাচিত হয়নি, তেরী হয়েছে কিছুসংখ্যক অর্থ-বিত্ত লোভী রাজনৈতিক ভাঁড়।
৫। ব্যাংকিং সেক্টরে দূর্নীতি, শেয়ার বাজার লুট, যুবক ও ডেসটিনির মত প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, গ্যাস- বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি ও বৈধ ব্যবসায়ীদের উপর দলীয় ও পুলিশী হয়রানির ফলে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কোমর ভেঙ্গে গেছে। অথচ প্রতিটি দেশের মধ্যবিত্তরাই হল দেশের স্থিতিশীলতার প্রধান স্তম্ভ।
৬। সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদেরকে প্রশাসন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ও,এস,ডি করে রাখা হয়েছে। ফলে দূর্নীতি ও অর্থপাচারের মাধ্যমে দেশের সম্পদ, সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনা এখন বিলুপ্তির পথে। মেধা ও যোগ্যতাকে অবহেলিত করার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
৭। স্বজনপ্রীতি দেশের প্রশাসনে এক দূরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে, যা সাম্য প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায়।
৮। দেশের অর্থ ও সম্পদ মুষ্টিমেয় কিছু আমলা ও রাজনীতিবিদরা কুক্ষিগত করেছে; ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেনি বিলুপ্ত হয়ে দরিদ্র নাগরিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
৯। রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধার অপব্যবহার করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদের ব্যক্তিরা অঢেল অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল ব্যাংকের অর্থ ও শেয়ার বাজার লুটপাটের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন কার্যকরি পদক্ষেপ গৃহিত হয়নি।
করণীয়ঃ
স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত চেতনাকে দলীয় স্বার্থে পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হিসেবে মনগড়া তথ্য প্রচার করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে অবমূল্যায়ণ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে সুপরিকল্পিত ভাবে। এই অন্তরায়গুলো দূর করতে হলে প্রথমত দেশবাসীকে হতে হবে ঐক্যবদ্ধ; অতপর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, যাতে স্বাধীনতার চেতনা ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার’ প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করা যায়। সকলকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে, স্বাধীনতার চেতনা অন্য কোন তন্ত্র-মন্ত্র নয়। এই চেতনা বাস্তবায়নের জন্য কিছু করনীয় পদক্ষেপ হতে পারে নিম্নরূপ:
মানবিক মূল্যবোধের প্রচার:
o শিক্ষার মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ শিক্ষা: শিক্ষাক্রমে মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক ন্যায় বিচার সম্পর্কিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। স্কুল, কলেজ, ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।
o স্বাধীন বিচার বিভাগ: বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে যাতে এটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার প্রদান করতে পারে।
সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা
o আইনের শাসন: আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সকল অপরাধের যথাযথ বিচার নিশ্চিত করা।
o বৈষম্য দূরীকরণ: অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য নীতি গ্রহণ করা।
o প্রতিষ্ঠান ও সিস্টেমের স্বচ্ছতা: সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
o মানবাধিকার সুরক্ষা: মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এবং তা লঙ্ঘনকারী যে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে বিচারের আওতায় আনা।
সামাজিক আন্দোলন ও প্রচারণা
o সামাজিক আন্দোলন: মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সামাজিক আন্দোলন এবং প্রচারণা চালানো।
o সাংস্কৃতিক উদ্যোগ: সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ প্রচার করা।
o সুশাসন প্রতিষ্ঠা:
o জনগণের অংশগ্রহণ: গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
o স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ: স্থানীয় সরকারগুলির ক্ষমতা ও সম্পদ বাড়াতে হবে যাতে তারা স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।
o অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত সহিংসতা প্রতিরোধ: অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
o শান্তি ও সম্প্রীতি প্রচার: সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরির জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
এই পদক্ষেপগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। বিশ্বাসঘাতকতা, শূন্য-বিবেক, শূন্য-সংযম, ভণ্ডামি, অশ্লীলতা, ব্যভিচার, বুদ্ধিহীন লোভ, পুরানো দৃষ্টিহীন নেতৃত্বের প্রতি অন্ধ লাগামহীন চাটুকারিতা, অতি তুচ্ছ লাভের বিনিময়ে আত্ম-সম্মান ত্যাগ, জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞান, প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জনে বিমুখতা, মরীচিকা-অনুসন্ধানের প্রতি অনুরাগ, বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে অন্যের কল্যাণের জন্য শূন্য ইচ্ছা, পদ্ধতিগত অগ্রগতির বর্জন, প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক পরিস্থিতিতে অধ্যবসায়, অর্থহীন ঝগড়া-বিবাদে বেপরোয়া জড়িয়ে পরা, পরোপকারীর নিঃস্বার্থ মহৎ অবদানের প্রতি চরম অর্থহীন শত্রুতা, আত্ম-সংশোধনের শূন্য-অভ্যাস, বাস্তবতার গতিশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে স্ব-সংযম – আজকাল নীতি নির্ধারনী ব্যক্তিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ আমাদের প্রাণপ্রিয় স্বাধীন মাতৃভূমি। আমাদের এ স্বাধীনতা বহু মূল্যে অর্জিত, যার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে এক রক্তক্ষয়ী ইতিহাস, এক জীবন্ত মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু আজকে এই স্বাধীন দেশটি নানামুখী সমস্যা এবং বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনে জর্জরিত। ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ ও স্বার্থপরতা আমাদের এই স্বাধীন দেশকে করেছে বিপদগ্রস্থ। পরিণত হয়েছে চরম দুর্নীতিগ্রস্ত এক অকার্যকর রাষ্ট্রে। এক দলীয় ও পরিবার কেন্দ্রিক শাসনের যাতাকলে দেশ আজ অশান্তির চরম পর্যায়ে। অন্যদিকে দেশের শান্ত ও কোমল হৃদয়ের মানুষগুলোকে ধর্মীয় প্রতিহিংসার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। অন্যদিকে সর্বগ্রাসী ভারত অদৃশ্যে থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছে। ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সুদূর পরাহত। সুতরাং দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থ ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব’ রক্ষার প্রয়োজনে সকল ধর্ম, বর্ণ ও মতবাদের দেশপ্রেমিক দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই। রুয়ান্ডার উদাহরণ: পরিশেষে জাতীয় কবি, বিদ্রোহী কবির একটি উদৃতি দিয়ে শেষ করছি:
“আমরা চলিব পশ্চাতে ফেলি পচা অতীত,
গিরি-গুহা ছাড়ি খোলা প্রান্তরে গাহিব গীত,
সৃজিব জগৎ বিচিত্রতর, বীর্যবান,
তাজা জীবন্ত সে নব সৃষ্টি শ্রম-মহান,
চলমান বেগে প্রাণ উচ্ছল।
রে নবযুগের স্রষ্টাদল।
জোর কদমে চলরে চল।”
নষ্ট অতীতকে পিছনে ফেলে সকল বাঁধা-বিপত্তি অতিক্রম করে তরুণরাই এক নতুন জগৎ সৃষ্টি করবে। তাদের সাধনাতেই জন্ম নিবে এক নতুন হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত শান্তির দেশ।আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
লেখক: রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]