শিরোনাম
কন্যা সন্তান নিয়ে যত ভয়
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৪২
কন্যা সন্তান নিয়ে যত ভয়
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

এক সময় প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আসার আগে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করত মা-বাবার মধ্যে। কারণ পরিবারের প্রথম সন্তানটি ছেলে হোক- এ আশাটা সবাই করত। কারণ ছেলে বংশের প্রদীপ। সে এগিয়ে নিয়ে যায় পরিবারকে। তার পরিচয়ে নাম যশ হবে পরিবারের। আর মেয়ে তো পরের আমানত। বিয়ে হলে চলে যাবে অন্যের সংসার। তবে এখন এ ধারণাটা অনেক পালটে গেছে। আগের মতো নতুনমায়েরা পুত্রসন্তান জন্ম নিয়ে শংকিত হয় না।


রমা সন্তানসম্ভাবা। তবে তাদের ঘরে ছেলে মেয়ে নিয়ে কুসংস্কার নেই। শুধু সুস্থ বাচ্চা চায়। তবে আজকাল চারদিকে মেয়েদের ওপর যে হারে নির্যাতন চলছে তা দেখে রমা চিন্তা করে। ঘরে বাইরে কোথাও নিরাপত্তা নেই মেয়েদের। বয়স স্থান কাল সব কিছুকে তুচ্ছজ্ঞান করে মেয়েদের জীবনকে নরকময় করছে।


অথচ এখন মেয়েরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। তারা নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। তবুও কন্যাসন্তান নিয়ে যত ভয় পরিবারে, সমাজে।


নারী জীবনের নিশ্চয়তার জন্য আইন যত শক্তিশালী হোক, ব্যক্তি সমাজের পরিবর্তনটা দরকার সবার আগে। ধর্ষণের সাজা কঠিন যেনেও প্রতিনিয়ত নারী ধর্ষিত হচ্ছে।


এর অন্তরালে কারণ মানুষের নৈতিক অবক্ষয়। ব্যক্তি দৃষ্টিতে কু-রিপুকে সংযত করার চর্চা কমছে। বলা হয় আধুনিক প্রযুক্তি মানুষকে নষ্ট করছে। বিষয়টা অত্যন্ত যুক্তিহীন। ভালো-মন্দ বোঝার বিবেকবোধ যার থাকে সে পারে না ব্যভিচার করতে।


নারী-পুরুষ উভয়ের শালীনতা বোধটা থাকা খুব জরুরি। শারীরিক চাহিদা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। কিন্ত সে চাহিদা মেটানোর জন্য ধর্ষণের মতোবর্বরোচিত কাজ বনের পশুকে হার মানায়।


এক সময় মানুষ মেয়ে সন্তান চাইত না কুসংস্কার থেকে। আর এখন সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় মেয়ে সন্তান মানে পরিবারের জন্য সার্বক্ষণিক চিন্তা। মেধা মননে এগিয়ে যাও নারীকে এখনো ভোগ্যপণ্য হিসাবে একটি দেহ হিসাবে চিন্তা করে। এ মানসিকতাতে বদলাবে না সমাজ- এটাই সত্য।


কথাগুলো চিন্তা করে রমার চোখে জল এসে যায়। আর শুধু প্রার্থনা করে তার ঘরে যদি মেয়ে আসে তাকে যেন একটা সুস্থ সমাজের মাঝে বড় করতে পারে। রমা জানে তার এ চাওয়াটুকু এখন সব কন্যার পরিবারের।


কন্যা পরের ঘরের আমানত হলেও সে মায়ের নাড়ি কাটা সন্তান। নিজের আত্মজকে সুস্থ নিরাপদ জীবন দিতে হবে। কন্যাকে নিয়ে ভয় পেলে নষ্ট মানুষআরো বেশি প্রশ্রয় পাবে। তাই মা-বাবাকে নিজের কন্যা সন্তানের সাথে অন্যের কন্যা সন্তানের জন্যেও প্রতিবাদ করতে হবে সাহস নিয়ে।


লেখক কলামিস্ট: হাসিনা আকতার নিগার


বিবার্তা/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com