
যে কোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, ‘৩১ দফার মধ্যে যত বেশি মানুষের সম্পৃক্ততা ও সমর্থন পাওয়া যাবে, আগামী দিনে ভোটের সংখ্যা তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। তাই ভোট নিজের পক্ষে সমর্থন পেতে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ আপনার পক্ষে থাকলে আপনি নেতা আর যদি জনগণ আপনার সঙ্গে না থাকে আপনি কিসের নেতা? তাই নিজের নেতৃত্ব ও রাজনীতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে সাড়ে ১০টা ঠাকুরগাঁও ইএসডিও জয়নাল আবেদীন মিলনায়তনে জেলা বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বাস্তবায়নে দিনব্যাপী কর্মশালার দ্বিতীয় অধিবেশনে (বিকেল ৫টা) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কোন গণতন্ত্র ছিল না। বিগত সরকারের আমলে জনগের অধিকার এক কথায় মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল। ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে আমরা কি দেখতে দেখেছি? দেশের বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, সমাজে বিভিন্ন ধরনের অধপতন শুরু হয়েছে, সমাজে বিভিন্ন অনাচার সৃষ্টি হয়েছে অর্থাৎ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইফেক্ট পড়েছে। ব্যাপারটি অনেকটি ডায়াবেটিস রোগীর মতো। ডায়াবেটিস যদি হয় সেটিকে যদি কন্ট্রোল করা না যায় আস্তে আস্তে সেটি শরীরের প্রতিটি অর্গানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে৷
তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্র কাঠামো ও সংস্কারের বিষয়ে সাধারণ মানুষ যা চায় তার সব কিছুই বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে। কর্মসংস্থান, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মানুষের মৌলিক চাহিদার সব বিষয়ে ৩১ দফায় উল্লেখ রয়েছে। স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। সে সময় বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে অনেক নির্যাতিত হতে হয়েছে, অনেকেই গুম-খুনের শিকার হয়েছেন।
আর রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে অন্যরা যে প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন, তা জনগণই জানেন। বিএনপিকে জনগণের কাছে প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক ত্যাগ ও সংগ্রাম করতে হয়েছে। এই সংগ্রামে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন, অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। বিএনপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা অবশ্যই পালন করবে।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা শুরু করব; পরে পরবর্তী নেতৃবৃন্দ ধাপে ধাপে তা চালিয়ে নিয়ে যাবেন। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের যে দাবি ও চাওয়া রয়েছে সব কিছু নিয়েই এই সংস্কার কার্যক্রম চালাতে চাই আমরা। আমরা চাই, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আমাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব আমরা। কোনোভাবেই যেন গণতন্ত্রের উত্তোরণ ও মানুষের ভোটের অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয়, তাহলে সব কিছু শেষ হয়ে যাবে।
বিগত ১৬ বছর রাজনৈতিক ও ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। যার কারণে দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচারব্যবস্থাসহ সব কিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা যে সংগ্রামে রাজপথে নেমে এসেছি, যে সংগ্রামে আমাদের নেতাকর্মীরা প্রাণ দিয়েছেন, গুমখুনের শিকার হয়েছেন—তাদের এই বলিদানকে কোনোভাবেই বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
এসময় কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষন বিষয়ক সদস্য সচিব এবিএম মোশাররফ হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাবেক সাধারন সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান, বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য ও কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদা হাবিবা, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ সহ কেন্দ্রীয় ও জেলার বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।কর্মশালায় জেলার ৫টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভার ৫ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
বিবার্তা/গোফরান/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]