
গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত হোসেন দিদার হত্যা মামলার আসামি আলিমুজ্জামান চৌধুরী জেল হেফাজতে থাকা অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন আলিমুজ্জামান। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে গোপালগঞ্জ শেখ সাহেরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন।
পরে পুলিশ সদস্যের একটি টিম তাকে প্রথমে ফরিদপুর জেলা কারাগারে নিয়ে সেখানকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানেও তার অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার পরিস্থিতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। পরে বিকালে ঢাকায় নিয়ে প্রথমে কারাগারের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন কর্তৃপক্ষ। এরপর রাতে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহতের স্বজনরা জানান, গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের ভেতরে আলিমুজ্জামান স্ট্রোক করার পর থেকে প্রতিটা জায়গায়ই নানানভাবে কর্তৃপক্ষ সময় ক্ষেপণ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলা এবং চিকিৎসার অভাবে ঢাকায় কারাগারের মধ্যেই তিনি মারা যান। এর আগে, সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সে খবরও যথাসময়ে দেওয়া হয়নি পরিবারের সদস্যদের।
তারা আরও জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ালে আলিমুজ্জামান চৌধুরীর ঘোনাপাড়ার মার্কেট এবং বাড়িতে বিএনপির লোকজন হামলা করে। হামলার একপর্যায়ে আলিমুজ্জামান চৌধুরীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তিনি ওই অবস্থায় থানায় অভিযোগ করতে গেলে অভিযোগ না নিয়ে তাকেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
কারারক্ষী নাজমুল হাসান জানান, রাতে কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্ত হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়ায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার নিহত হন।
এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ-২ আসনের এমপি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ ১১৭ জনের নাম উল্লেখ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন দিদারের স্ত্রী রাবেয়া রহমান। এ ছাড়া এই মামলায় ৩২০০ জনকে আসামি করা হয়।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা আলিমুজ্জামান চৌধুরীকে কয়েকদিন আগে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ, রিমান্ড শেষে তাকে আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
বিবার্তা/শান্ত/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]