
বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, হরিজন সম্প্রদায় ব্রিটিশ আমল থেকে সব চেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। এদের দিয়ে ব্যবসা করা বা ভালো থাকার লোকের অভাব নেই। এটা দেশের জন্য ও সরকারের জন্য দুর্ভগ্যজনক। এই গরীব মানুষদের উচ্ছেদ, বিল্ডিং করে ভাগ বাটোয়ারা করলে তা হবে সব চেয়ে অন্যায় এবং লজ্জার। হরিজনদের উচ্ছেদ করা হবে সবচেয়ে বড় ডাকাতি। এটা যেকোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, এখানে প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার মানুষ বাস করছে। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। সিটি কর্পোরেশনে তারা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করছে। এরা সব চেয়ে বেশি নিগৃহীত, নিপীড়িত এবং অসহায়।
১৩ জুন, বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকা মিরনজিল্লা হরিজনপল্লী পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, দেশ-রাষ্ট্র-সরকার তো তাদের পাশে থাকার কথা। দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি এই সরকার দলীয় সরকার। তারা তাদের দলীয় লোকদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজ করছে। এই মানুষগুলোকে রাস্তায় ঠেলে দিলে, তারা কোথায় যাবে? এ নিয়ে সরকারের কোনও ভাবনা নেই। এদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে কীসের উন্নয়ন? কিছু মানুষ হয়ত দোকানপাট করে বা ইজারা নিয়ে লাভবান হবে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের প্রয়োজন যেমন মেটাতে হবে, তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। এ বিষয়ে আমরা গতকাল সংসদে কথা বলেছি। আমরা বুঝতে পারছি না সরকার আমাদের কথা রাখবে কি না। কাল নাকি এটা ভেঙে দেওয়া হবে, কথা না শুনলে চাকরিচ্যুত করা হবে। এই মানুষগুলো অত্যন্ত অসহায়। তারা দোকান দিতে পারে না, তাদের হাতে কেউ কিছু খেতে চায় না। অথচ তাদের সার্ভিস ছাড়া আমাদের জীবন অচল।
জাতীয় পার্টির শীর্ষ এই নেতা বলেন, মানবিক দৃষ্টি দিয়ে বিষয়টি দেখা উচিত। যেকোনো ভাবে এটা ঠেকাতে আমরা চেষ্টা করবো। এটা আওয়ামী লীগের সরকার। আওয়ামী লীগের সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকার আওয়ামী লীগ দ্বারা গঠিত, তাদের স্বার্থ জন্য কাজ করছে। জনগণের দাবি তারা কেয়ার করছে না। উন্নয়নের নামে বিল্ডিং করে নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করা অন্যায়।
সরকার এখন অনেক শক্তিশালী বলে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তাদের সঙ্গে প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। তাদের পেশিশক্তি, অর্থশক্তি ও মাস্তানদের সামনে সাধারণ মানুষ অসহায়। সাধারণ মানুষ সংখ্যায় বেশি হলেও দানবীয় শক্তির কাছে পরাজিত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
হরিজনদের জন্য জায়গা করে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব বলে মনে করেন জিএম কাদের। বলেন, শুনলাম এদের জন্য দুটি বিল্ডিং করা হয়েছে। অথচ, এখানে ৫ থেকে ৭শ পরিবার আছে। তাদের পুনর্বাসন করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণলাল, পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কৃষ্ণচরণ কুঞ্জমাল, হরিজন নেতা বায়জুলাল, জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাস, জাতীয় পার্টি নেতা সাধন কুমার মিশ্র প্রমুখ।
বিবার্তা/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]