
জনগণের টাকা লুট করে দিনের পর দিন নাগরিকদের লোড শেডিংয়ের যন্ত্রণায় দুর্বিষহ জীবন যাপনে বাধ্য করেছে সরকার। এজন্য সরকারকে করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি- এবি পার্টি।
বিদ্যুৎ খাতে যথেচ্ছ লুটপাট ও বছরে ৪ বার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণকে নির্মম শোষণের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল থেকে এই হুঁশিয়ারি দেন এবি পার্টির নেতারা।
২২ মে, বুধবার বিকেল ৪টায় বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কাকরাইল, বিজয়নগর, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় ও আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও বিএম নাজমুল হক, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা ও মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন।
সভাপতির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের ট্যাক্সের টাকায় এই সরকারের নেতা, পাতি নেতারা মৌজ মাস্তি করে বেড়াচ্ছে। অথচ দেশের মানুষ খাবার কিনতে পারছেনা। দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবন এই সরকার অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এই সরকারের প্রতিটা কর্মকর্তা কর্মচারী আজ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। পিওন থেকে শুরু করে সচিব, মন্ত্রীরা পর্যন্ত জনগণের ঘাম ঝরানো টাকা লুট করে খাচ্ছে। এই অন্যায় চলতে পারেনা। এবি পার্টি জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য, মানুষকে এই রক্তচোষা সরকারের হাত থেকে রক্ষার জন্য আন্দোলন করে যাবে ইনশাআল্লাহ।
তাজুল ইসলাম বলেন, সরকার বলে দেশ নাকি বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারা নাকি চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত উৎপাদন করছে। ঘরে ঘরে নাকি তারা বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, এতই যদি বিদ্যুৎ থাকে তাহলে আজ অটোরিক্সা কেন বন্ধ করা হচ্ছে, চালকদের কেন পুলিশ দিয়ে পেটানো হচ্ছে?
তিনি বলেন, এই সরকার জনগণের কাছ থেকে ত্রিশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের দাম আদায় করে ১৪ হাজার মেগাওয়াট জনগণকে সাপ্লাই দিয়ে বাকি বিদ্যুতের দাম ডলারে পরিশোধ করে জনগণকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। লুটপাট করে ব্যাংকগুলোকে আজ শূন্য করে ফেলা হয়েছে। জনগণ এখন ব্যাংকে গিয়ে নিজের গচ্ছিত টাকা তুলতে পারছেনা। আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে বিভিন্ন বাহিনীর লোকদের, আমলাদের দুর্নীতি করার অবাধ সুযোগ করে দিচ্ছে। এক আইজিপি চুরি করে একটা জেলার মালিক বনে গিয়ে আমেরিকার স্যাংশনের আওতায় ছিল, এখন আবার এক সাবেক জেনারেলকে আমেরিকা চুরির দায়ে স্যাংশন দিয়েছে। এই চোরদের বদৌলতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে আছে। এরা শুধু গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ায়নি, এয়ারলাইন্সগুলোর বিল বাকি রাখার ফলশ্রুতিতে এখন এয়ারের টিকেটের দাম ভারতের চেয়ে তিন গুন দাড়িয়েছে। তিনি অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমরা আগেও বলেছি গণতান্ত্রিক শক্তিকে নির্মূল করলে অগণতান্ত্রিক চরমপন্থি শক্তি হবে এই সরকারের প্রতিপক্ষ। আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি বিরোধী দলের আন্দোলন ছাড়াই সরকার ভেতর থেকে ভেঙ্গে পড়ছে। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে গেছে, মানুষ তার জমা টাকা তুলতে পারছেনা। আমেরিকা-ভারত-চীন এই তিন পরাশক্তির সাথে সরকারের গোপন সখ্যতার চিড় ধরতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকার যে নজিরবিহীন চুরি ডাকাতি করেছে তার চক্রে এখন সে নিজেই নাকাল হতে বসেছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জনগণের টাকা লুট করে দিনের পর দিন নাগরিকদের লোড শেডিংয়ের যন্ত্রণায় দুর্বিষহ জীবন যাপনে বাধ্য করা এই সরকারকে এর জন্য করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
এসময় বিক্ষোভে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, যুবপার্টির সদস্যসচিব শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, যুগ্ম সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন, মাসুদ জমাদ্দার রানা প্রমুখ।
বিবার্তা/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]