
চট্টগ্রাম-১৩ আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি'র একক সাম্রাজ্যে আধিপত্য বিস্তার করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক এবং অর্থপ্রতিমন্ত্রী বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি। ক্ষমতা হাত বদলের সাথেসাথে দীর্ঘদিন অনাদরে-অবহেলায় পিছনে থাকা ত্যাগী নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হচ্ছে বলে দাবি করছেন দুই উপজেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও তৃণমূলের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনগুলো।
একসময়ে জাবেদের দুর্গ বলে খ্যাত আনোয়ারা কর্ণফুলীর রাজনীতির মাঠ এখন ওয়াসিকা আয়শার দখলে বলা চলে। অন্যদিকে বর্তমান উপজেলার কমিটিতে চলছে কোন্দল। নড়বড়ে এ দুর্গ আবার মজবুত করতে পারবেন কি না- এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে।
চট্টগ্রাম-১৩ আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনের সংসদ সদস্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। নানা কারণে তার জনপ্রিয়তা হঠাৎ অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অর্থ পাচারের সংবাদ বিষয়ে। এছাড়া মন্ত্রী থেকেও ছিটকে পড়েছেন।
তাই তার একক সাম্রাজ্যে এখন আধিপত্য বিস্তার করছে অর্থপ্রতিমন্ত্রী। অন্যদিকে সাইফুজ্জামান চৌধুরী আনোয়ারা কর্ণফুলীর বিতর্কিত লোকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে, এক নেতার অনুসারী করতে গিয়ে বিভক্ত দল, পাশাপাশি তৃণমূলের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে তার সরাসরি যোগাযোগের অভাবে অনেক নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন।
অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত কর্ণফুলী আওয়ামী লীগ। আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগেও কম না। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দলটির নেতাকর্মীরা এখন নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ির করে মাঠ দখলের চেষ্টা করছেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভেদ সর্বত্রই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, বরং নিজেরা নিজেরাই প্রতিযোগী হয়ে উঠেছেন।
এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক বিবার্তাকে বলেন, আমাদের নীতিনির্ধারকরা ভুলে গেছেন দলের যে লোকগুলো গত ১১ বছরে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন, এখনও তারা সে জায়গাতেই আছেন। দুই মেয়াদেই বঞ্চিতরা বঞ্চিতই হয়েছেন। আদর্শিক নেতারা নিষ্ক্রিয় হওয়ার সুযোগসন্ধানী ও অনুপ্রবেশকারীরা সর্বত্র দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব কারণেই দেশের বেশিরভাগ স্থানে কোন্দল-দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিচ্ছে।
কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী নেভী বিবার্তাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব অর্জন, সফলতা ধ্বংস করে দিতে দলেরই কিছু নেতা-কর্মী যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে। এসব শক্তহাতে শুদ্ধি অভিযান না চালালে বড় ধরনের মাশুল গুণতে হতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দলের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত নানা সুযোগ-সুবিধা বাগিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ফলে দলের মধ্যে কোন্দল বাড়ছে। আর এই কোন্দল থেকেই হচ্ছে দ্বন্দ্ব। দুই উপজেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে পাওয়া না পাওয়া থেকে ক্ষোভ ও মতবিরোধ এবং অন্তর্কলহে বিপর্যস্ত হচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
কর্ণফুলী আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যান বিবার্তাকে বলেন, একটি বড় দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে, যেটা অস্বাভাবিক নয়। তবে দলের মধ্যে কিছু আদর্শবিরোধী লোক ঢুকে পড়েছে, তারাই সমস্যা করছে। তাদের ব্যাপারে সকলের সতর্ক থাকা উচিত।
দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। ছোটখাটো কোন্দল একটু থাকতেই পারে। আমরা মুজিব আদর্শের সৈনিক। এ ছাড়া বেশি কিছু বলার নেই।
বিবার্তা/জাহেদ/রোমেল/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]