ধর্মীয় সংস্কৃতি ও বিশ্বাস নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে চাচ্ছে সরকার: রিজভী
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৪, ২০:৫২
ধর্মীয় সংস্কৃতি ও বিশ্বাস নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে চাচ্ছে সরকার: রিজভী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সরকার ধর্মীয় সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, রমজান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা ও ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকার বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে।


১৩ মার্চ, বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।


মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের ৯০ ভাগের বেশি মানুষ মুসলমান উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আমরা সবসময় দেখে এসেছি রমজান মাসজুড়ে সাধারণত দেশের স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতো। অথচ, এবার ব্যতিক্রম। সরকার অর্ধেক রমজান পর্যন্ত দেশের সকল স্কুল, কলেজ, মাদরাসা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত।


রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়া-কমার সঙ্গে বিশ্ব পরিস্থিতির সম্পর্ক নেই। দেশে জিনিসপত্র দাম বাড়া-কমার সঙ্গে সম্পর্ক আওয়ামী লুটেরাদের সঙ্গে। আওয়ামী লুটেরা আর টাকা পাচারকারীদের দমন করা না গেলে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসবে না।


নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার বিভিন্ন দেশের যুদ্ধের অজুহাত তুলছে দাবি করে তিনি বলেন, প্রতিদিন দাম বাড়ার নানান ধরনের উদ্ভট কারণ আবিষ্কারে ব্যস্ত সরকার। শেখ হাসিনা সিন্ডিকেটের পক্ষে জনগণকে হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন। অথচ, বাস্তবতা ভিন্ন।


বিএনপির এ নেতা বলেন, রমজান মাসে মানুষ একটু শান্তিতে রোজা রাখবে, সাহরী করবে, ইফতার করবে, এবাদত বন্দেগী করবে, প্রত্যেকটি মানুষেরই এমন আশা-আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু গণবিরোধী অগণতান্ত্রিক সিন্ডিকেটবাজ সরকার ক্ষমতায় থাকলে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা গভীর হতাশায় নিমজ্জিত থাকবে-এটাই স্বাভাবিক।


পবিত্র রমজান মাসে খেজুর আমদানির জন্য ভর্তুকি দূরে থাক, উল্টো খেজুরকে বিলাসী পণ্য উল্লেখ করে খেজুর আমদানির ওপর শুল্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার, বলেন রিজভী।


বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, খেজুরের ওপর ভর্তুকি না দিলেও ‘ডামি সরকার’ শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সোনালী ব্যাংক, রূপালি ব্যাংককে।আওয়ামী লুটেরা চক্র ব্যাংক থেকে বিভিন্ন প্রজেক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া বানিয়ে দিয়েছে। ঋণ খেলাপি, লুটেরা, টাকা পাচারকারীদের বাঁচিয়ে রাখতে ভর্তুকি দিলেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইফতার করার জন্য খেজুর আমদানির ওপর ভর্তুকি দিচ্ছেন না। খেজুর আমদানির ওপর ভর্তুকি না দিয়ে উল্টো বেশি করে শুল্ক আরোপ কোনো সাধারণ অপরাধ নয়, রীতিমতো মহাপাপ। বাজারে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, চিনি, আটা, ময়দা, ছোলা, বেসন, লেবু, শসা, মাছ-মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার উর্ধ্বে। সারাবিশ্বে দাম কমলেও বাংলাদেশে প্রতিদিনই পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে জনগণের পকেট কাটা সরকার।


এ সময় তিনি সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরে বলেন, ৯ টি ব্যাংকে জ্বলছে লাল বাতি, আরও ১২টির অবস্থা খুব খারাপ। সব মিলিয়ে ৩৮টি ব্যাংকে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে ‘ডামি সরকার’ এইসব ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।


ঋণখেলাপি, লুটেরা, টাকা পাচারকারীদের বাঁচিয়ে রাখতে ভর্তুকি দিলেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইফতার করার জন্য খেজুর আমদানিতে ভর্তুকি দিচ্ছেন না, বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।


সরকার নিম্নমানের পচা খেজুরের দাম নির্ধারণ করে রোজাদারদের সঙ্গে উপহাস করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রমজান মাসে ইফতারের সময় খেজুর খাওয়ায় ধর্মীয় অনুভূতি কাজ করে। অথচ ‘ডামি সরকারে’র একজন ‘ডামি’ মন্ত্রী ইফতার নিয়ে কতই না উপদেশ দিচ্ছেন জনগণকে। যেহেতু এরা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এমপি বা মন্ত্রী হননি, এই কারণে তারা ‘বিগ ব্রাদার’ হয়ে রোজাদার মানুষদের নিয়ে মশকরা করছেন।


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুস সালাম, বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, মৎস্যজীবি দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com