
জাতীয় পার্টির রওশনপন্থীদের জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে। রাজধানী ছাড়া ঢাকার বাইরে থেকেও নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সম্মেলন উপলক্ষ্যে রাজধানী বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন।
৯ মার্চ, শনিবার দুপুরে প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী রওশন এরশাদের উপস্থিতিতে কাউন্সিল শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।
সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন- কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, সাবেক মন্ত্রী এবং জাপার একাংশের মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এমএ মতিন, বিএলডিপি চেয়ারম্যান এম নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, বাংলাদেশ হিউম্যান পার্টির চেয়ারম্যান, চীনের সহকারী রাষ্ট্রদূত ফেং জিজিয়া প্রমুখ।
জাতীয় সংগীত ও জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়।
শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা।
এতে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন রওশন এরশাদ অনুসারী জাতীয় পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেবর-ভাবির কোন্দলের মাত্রা চরমে ওঠে। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা সরাসরি পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেন। ফল বিপর্যয়ের জন্য দোষারোপ করেন। তাদের পদত্যাগও চান পরাজিত প্রার্থীদের অনেকেই।
এ ঘটনা কেন্দ্র করে দলে থাকা দীর্ঘদিনের মিত্রদের একে একে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের।
এর মধ্যে গত ২৮ জানুয়ারি জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে জাপার স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হন রওশন এরশাদ।
মূলত রওশন অংশে তিনি ছাড়া বাকি শীর্ষ নেতাদের সবাই দল থেকে বহিষ্কৃত। বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়েই নতুন করে দল গঠন করতে যাচ্ছেন সাবেক এই বিরোধী দলের নেতা। তবে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রওশন এরশাদকে বহিষ্কার করেননি জিএম কাদের।
দলটির একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাপায় সবচেয়ে বড় ভাঙন হতে যাচ্ছে আজ শনিবার। যদিও ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না রংপুরসহ ১৭টি জেলা। অন্য জেলার নেতাকর্মীরাও কমবেশি এখন দুই ভাগে বিভক্ত।
ফলে জাতীয় পার্টি নামে আরও একটি দলের সৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে জাতীয় পার্টি ভেঙে একই নামে পাঁচটি দল হয়েছে।
বিভক্তি প্রসঙ্গে রওশনের সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব কাজী ফিরোজ রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অনেক চেষ্টা করেছি, শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। জাপা ফের ভাঙছে। এজন্য কে দায়ী, তা হয়ত সময় মূল্যায়ন করবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির যাত্রা শুরু হয়। এরপর নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে অন্তত ছয় ভাগে বিভক্ত হয়েছে দলটি। তারপর থেকে এরশাদ-রওশন ও জিএম কাদের জাপার মূল ধারায় ছিলেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনা প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর থেকেই নেতৃত্ব নিয়ে রওশন ও জি এম কাদেরের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]