আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ১৫৭ নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনে আপন ভাই-বোনসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ২২ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মনোনয়ন ফরম বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য।

আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মানু মজুমদার ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, সাবেক সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস, মোশতাক আহমেদ রুহী, আ.লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য রেমন্ড আরেং, কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক তালুকদার, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আতাউর রহমান খান আঁখির, একেএম জিয়াউল হক, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য মো. এরশাদুর রহমান মিন্টু, আ.লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য মোস্তফা জামাল লিটন, গীতিকার সুজন হাজং, দুর্গাপুর উপজেলা আ.লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ ফারুক আহমেদ তালুকদার, আ.লীগ নেতা শাহ কুতুব উদ্দিন তালুকদার রুয়েল, এডভোকেট মুজিবুর রহমান, জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ওসমান গনি, কলমাকান্দা উপজেলা আ.লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রফিকুজ্জামান খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহতাব উদ্দিন মাতু, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক তিতাস রায় রানা, আ.লীগ নেতা মো. শহিদুল ইসলাম, শাহ্ধসঢ়; মোহসীন, তপন কুমার তালুকদার ও মোশারফ হোসেন ডন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আওয়ামী লীগের টিকিট চাইছেন তারা। মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে করছেন লবিং-তদবির। গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর নেতৃবৃন্দ ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে এলাকায় আনন্দ মিছিল করেছেন। এরপর থেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ঢাকায় অবস্থান করছেন।

মনোনয়নের বিষয়ে এমপি মানু মজুমদার বিবার্তাকে বলেন, নেত্রকোনা-১ আসনের বর্ডার সড়ক, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীতে ব্রিজ, স্থল বন্দর চালুকরণ, সাদা-মাটি প্রকল্প চালু করণসহ কলমাকান্দা-দুর্গাপুরের উন্নয়নে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। সারাদেশে মহামারি করোনার কারণে আমার অনেক প্রকল্পই স্থবির হয়েছিল। এ সকল প্রকল্প নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথাও বলেছি। দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি আমার নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দল আমাকেই মনোনয়ন দিবে।

সাবেক এমপি মোশতাক আহমেদ রুহী বিবার্তাকে বলেন, নেত্রকোনা-১ আসনে আমি এমপি থাকাকালীন সময়ে যে উন্নয়ন হয়েছে তা আর কেউ করতে পারেনি, এর মধ্যে দুর্গাপুরের দুঃখ শুকনাকুড়ি সেতু উল্লেখযোগ্য। আমার আমলে এ উপজেলায় কোন চাঁদাবাজি হয়নি, চাকরি দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেয়া বন্ধ ছিল। বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য বন্ধে দুই উপজেলায় প্রতিদিনই অবরোধ বিরোধী কার্যক্রম করে যাচ্ছি। এসকল বিষয় বিবেচনায় করে, আমি মনে করি দল আমাকে মনোনয়ন দিবে।

সাবেক এমপি ছবি বিশ্বাস বিবার্তাকে বলেন, নেত্রকোনা-১ আসনে আমি এমপি থাকাকালীন কোন প্রকার অনিয়ম হয়নি। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করেছি। আমার আমলে দুর্গাপুর-শ্যামগঞ্জ সড়ক, কলমাকান্দা-ঠাকুরাকোনা সড়ক উন্নয়ন সহ নানা ধরনের উন্নয়ন হয়েছে। বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য আমি গুরুতর আহত হয়েছি, সন্ত্রাসীরা আমার গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকলে মিলে নৌকার নির্বাচন করতে হবে। আশা করি দল আমাকে মনোনয়ন দিবে।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার বিবার্তাকে বলেন, উত্তর ময়মনসিংহের সিংহপুরুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন তালুকদার আমার বাবা। আমি পারিবারিক ভাবেই বাবার কাছ থেকে কীভাবে মানুষের সেবা করতে হয়, কীভাবে রাজনীতি করতে হয় তা জেনেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে তা আরো ভালো করে জানতে পেরেছি। আমি কোনো সুবিধা নিতে এমপি হতে চাই না। দেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শ বুকে নিয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করতে চাই, আ.লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে কাজ করতে চাই, আশা করছি দল আমাকেই মনোনয়ন দিবে।

তরুণ আ.লীগ নেতা অধ্যক্ষ ফারুক আহমেদ বিবার্তাকে বলেন, আমি পারিবারিক ভাবেই রাজনৈতিক শিক্ষা পেয়েছি। ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেছি। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি মনোনয়ন কিনেছিলাম, এবারও কিনেছি।

মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সন্তান ও একজন শিক্ষক হিসেবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করতে চাই। নেত্রকোনা-১ আসনে এ যাবত পরিকল্পনা মোতাবেক কোনো কাজই হয়নি। আমি মনোনয়ন পেলে এ আসনে সকলকে নিয়ে পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করব। আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিবেন।

আ.লীগ নেতা শাহ্ কুতুব উদ্দীন তালুকদার রুয়েল বিবার্তাকে বলেন, আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন তালুকদার এ আসন থেকে আপনাদের ভোটেই বারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। দুর্গাপুর-কলমাকান্দাকে সাজাতে আমার বাবার অনেক পরিকল্পনা ছিল। বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তৃণমূলের ত্যাগী আ.লীগ নেতাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করছি। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী ও দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, সকলকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। আশা করছি এবার দল আমাকেই মনোনয়ন দিবে।

বিবার্তা/রফিক/পলাশ/রোমেল/এমজে